Murder:রহিমপুর সীমান্তে যুবককে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা, এলাকায় তীব্র উত্তেজনা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ অক্টোবর৷৷ রহিমপুর আন্তর্জাতিক সীমান্তে নৃশংসভাবে খুন এক যুবক৷ ঘটনা কলমচৌড়া থানাধীন  রহিমপুর সীমান্তের ১৬৮ নং গেটের পাশে৷ মৃত যুবকের নাম খাইরুল আলম৷পাচার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ভারত বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় অপরাধের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ পাচারকারীদের মধ্যে রহিমপুর ভারত বাংলা আন্তর্জাতিক সীমান্তের জিরো পয়েন্টে এমনই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে৷  গত ৮সেপ্ঢেম্বর একমাস আগে রহিমপুর সীমান্তের ১৬৬ নং গেটের ২০৫৮ পিলার নাম্বারের পাশাপাশি সীমান্ত লাগুয়া নারায়ণপুর জামে মসজিদের সামনে গভীর রাতে পাচারকারীদের সংঘর্ষে বাংলাদেশের এক যুবককে প্রচন্ড মারধর করে সীমান্তে ফেলে দিয়ে যায়৷ পরে বাংলাদেশের যুবকের সীমান্ত এলাকায় মৃত্যু হয়৷  বাংলাদেশী যুবকের মৃত্যুর ঠিক এক মাস পর সীমান্তে আবারো এক ভারতীয় যুবকের খুন হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য বিরাজ করছে৷ ঘটনা কলমচৌড়া থানাধীন  রহিমপুর সীমান্তের ১৬৮ নং গেটের পাশে৷ জানা যায় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রহিমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত ৬ নং ওয়ার্ড দক্ষিণপাড়া এলাকার লিকত আলীর ছেলে খাইরুল আলম রহিমপুর বাজার থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে পূর্ব শত্রুতার জেরে কে বা কারা তার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে৷ এতে  ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বলে অনুমান৷ ধারালো অস্ত্রের আঘাতে দুভাগ হয়ে যায় তার মাথা৷ এই ঘটনাটি প্রথম প্রত্যক্ষ করেন রহিমপুর গ্রামের রাসেল মিয়া নামে এক যুবক৷ জানা যায় রাসেল মিয়া নামে বক্সনগর থেকে পূজা দেখে বাইকে করে বাড়ি যাওয়ার পথে বাইকের লাইটের আলোতে তার মৃতদেহটি পুরনো বর্ডার রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখতে পায়৷ এই ঘটনাটি দেখে রাসেল মিয়া ঘটনাস্থল থেকে কোনরকমে বাড়িতে গিয়ে চিৎকার করে পুরো এলাকায় বিষয়টি জানায়৷ এরপর এলাকার লোকজন মৃতদেহের কাছে গিয়ে ভীড় জমায়৷ পরে তার মা বাবাও চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে তার ছেলের মৃতদেহ দেখতে পায়৷
পরিবার ও এলাকার লোকজনদের চিৎকার শুনে সীমান্তে পাহারত বিএসএফ জওয়ানরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন৷ সাথে সাথে খবর দেওয়া হয় কলমচৌড়া থানার পুলিশকে৷ ঘটনাস্থলে ছুটে যান কলমচৌড়া থানার ওসি বিষ্ণুপদ ভৌমিক সহ এস আই ডেভিড ডারলং পুলিশ ও টি এস আর বাহিনী৷ এই ঘটনার খবর পেয়ে আশাবাড়ি বিওপির কোম্পানি কমান্ডারও ছুটে যান৷ পুলিশ দীর্ঘক্ষণ  যুবকের হত্যার মূল বিষয় কি তা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করেন৷ খায়রুল আলমকে কি দিয়ে খুন করা হয় তাও অনুসন্ধান করে পুলিশ৷ পরে মৃতদেহটিকে আশাবাড়ি বিওপির জওয়ানদের গাড়ি করে বক্সনগর সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মর্গে নিয়ে আশা হয়৷
খাইরুল আলম ওরফে সবুজ  পেশায় গাড়ি চালক ছিলেন৷ এলাকারই ফরিদ মিয়া নামে এক ব্যক্তির ট্রিপার গাড়ি চালাতেন৷ মৃত যুবকের পিতা লিকত আলী অভিযোগ করে জানান তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে৷ এই ঘটনায় চক্রান্তকারী আবু তাহের এবং ফরিদ মিয়া বলে অভিযোগ জানান তিনি৷ তাদের গাড়ি চালাত ছেলে৷ সেই সুবাদে কাজের নাম করে ছেলেকে কষ্ট দিত দুইজন৷ পরিবারের ঝামেলায় লিপ্ত করে৷ ১১ বছর যাবত ফরিদ মিয়ার গাড়ি চালাত  খাইরুল আলম৷
গত কয়েক মাস যাবত তার বাড়িতে বিয়ে নিয়ে তোড়জোর চলছিল৷  কমলপুর থানায় এনডিপিএস মামলায় জড়িত থাকায়  একমাস আগে তিনি এই মামলার জন্য জেল হেফাজত থেকে বাড়িতে আসেন৷ তবে কি কারণে তাকে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এভাবে নৃসংশভাবে মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত করে হত্যা করা হল তা স্পষ্ট হয়নি৷  পরিবারের আশঙ্কা তাকে পূর্বের কোন শত্রুতার কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে৷ বাজার থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে তার সাথে ছিল খাবারের একটি প্যাকেট৷ এই ঘটনার জেরে রহিমপুর এলাকা জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে৷ শুক্রবার মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করার পর পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়৷ এই ঘটনা জেরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে৷