দুর্গাপুর,২ অক্টোবর (হি.স.) : সপ্তমীর সকাল থেকেই দুর্গাপুর জুড়ে চলছে প্রকৃতির তাণ্ডব । ঝড়ের দাপটে কোথাও ভেঙে পড়ল আলোর তোরণ গেট তো কোথাও তছনছ হতে বসেছে পুজো মণ্ডপ। আবার কোথাও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শিকেয় উঠেছে। দুর্গাপুর চতুরঙ্গ সর্বজনীন, পাণ্ডবেশ্বরের মাধাইপুর কোলিয়ারি সর্বজনীন, সরপি মোড় দুর্গাপুজো কমিটি সহ অধিকাংশ পুজো মণ্ডপেরই একই অবস্থা। পরিস্থিতি এমন যে এখন বৃষ্টি দমনে দেবী দুর্গার কাছে প্রার্থনা শুরু করেছে শিল্পাঞ্চলবাসী।
অজন্তা – ইলোরার ভাস্কর্যের ধাঁচে দুর্গা প্রতীমার থিম গড়ে তুলেছে দুর্গাপুর চতুরঙ্গ সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। ইতিমধ্যেই জেলার সেরা নির্বাচিত হয়ে বিশ্ববাংলার পুরস্কারে পুরষ্কৃত হয়েছে। কেবল আকর্ষণীয় প্রতিমা নয়, হিন্দু ধর্মের ঐতিহ্য তুলে ধরতে মাটির তৈরি মণ্ডপসজ্জাতেও রয়েছে বিশেষ চমক। কিন্তু সপ্তমী থেকে শিল্পাঞ্চল জুড়ে ঝোড়ো হাওয়া ও প্রবল বৃষ্টিপাত হওয়ায় একেবারে মাটি হয়ে যেতে বসেছে মণ্ডপসজ্জা।
একইভাবে দুর্গাপুর ফুলঝোড় সর্বজনীন পুজো কমিটির এবছরের থিম ভুটানের বৌদ্ধ মন্দির। এ বছরে তাদের পুজো ৩১ তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। কিন্তু বৃষ্টি-অসুরের তাণ্ডপে ওই মণ্ডপও তছনছ হওয়ার ডোগাড়। ফলে পুজোর আনন্দ মাটি হচে বসেছে। পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার মাধাইপুর কোলিয়ারির সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির মণ্ডপের সামনের অংশ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। সেজন্য মন খারাপ পুজো উদ্যোক্তাদের। পুজো কমিটির সদস্য তথা গোগলা অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি গৌতম ঘোষ আক্ষেপের সুরে বলেন, প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করা সম্ভব নয়। পুজোয় প্রত্যেকদিন রয়েছে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মহাসপ্তমীর সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি রয়েছে এলাকার দুঃস্থ ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি। এখন মা দুর্গাই ভরস । মায়ের আশীর্বাদে বৃষ্টি কেটে যাক। তাহলেই সন্ধ্যার পর থেকে অনুষ্ঠানগুলি করা যাবে।
আবার ঝড়-বৃষ্টির তাণ্ডবে বরাতজোরে বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা মিলেছে দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের সরপি মোড় এলাকায়। ভেঙে পড়ল সরপি মোড় দুর্গাপুজো কমিটির আলোর তোরণ গেটটি। একেবারে রাস্তার মোড়ে তোরণ গেটটি ভেঙে পড়ায় এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে গেটটি ভেঙে পড়ার সময় ঘটনাস্থলে কেউ ছিল না। ফলে বড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে। হতাহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি। তারপর বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে গিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এবং পুলিশ-প্রশাসনের কর্মীরা ভেঙে পড়া বাঁশ সরিয়ে রাস্তা যানজটমুক্ত করে। সবমিলিয়ে, খনি-শিল্পাঞ্চল এলাকায় দুর্গাপুজো পণ্ড হতে চলেছে।