ঢাকা, ১৮ আগস্ট (হি. স.) : দেশের খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক হারে মূল্যবৃদ্ধির জন্য এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর অসৎ মানসিকতাকে দায়ী করলেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি। যদিও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এর জন্য দায়ী করছেন যুদ্ধকে । তিনি বলেন, যুদ্ধের কারণে বিশ্বের সব দেশেই জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়।
মূলত জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পরেই খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে । নির্বাচনের আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মাত্রাছাড়া দামবৃদ্ধি যে তাদের মুখ পোড়াচ্ছে, বিলক্ষণ বুঝছে শেখ হাসিনা সরকার। সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে তারা কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। বাংলাদেশে স্থায়ী ভাবে সরকারি গণবণ্টন ব্যবস্থা না থাকলেও টিসিবি (ট্রেডিং কোম্পানি অব বাংলাদেশ)-র মাধ্যমে গরিব মানুষের জন্য ভর্তুকিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রির ব্যবস্থা করেছে সরকার। তবে টিসিবি-র হলুদ রঙে চিহ্নিত গাড়ি ঢাকার বাজারে দেখা গেলেও দেশের অধিকাংশ স্থানেই অমিল। তড়িঘড়ি করে এক কোটি গরিব পরিবারে বিলি করার জন্য পারিবারিক কার্ডও তৈরি করেছে সরকার। তবে সেই কার্ডের ৯৫ লক্ষ বিলি হয়ে যাওয়ার পরেও অভিযোগ উঠেছে, যাদের পাওয়ার কথা তাঁরা কার্ড পাননি। অভিযোগ, তুলনামূলক স্বচ্ছল পরিবারে একাধিক কার্ড বিলি করা হয়েছে। কোথাও কোথাও দোকানদারেরা টাকার বিনিময়ে সরকারি কার্ড কিনে নিয়েছেন।
এই মূল্যবৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীদের একাংশের অসৎ মনোভাবকে দায়ী করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, “জ্বালানির দাম বাড়ায় পরিবহণ খরচ বেড়েছে। কিন্তু তার চেয়ে অনেক বেশি হারে ব্যবসায়ীরা জিনিসের দাম বাড়িয়েছেন। চালের দাম কেজি-প্রতি বড় জোর ৫০ পয়সা বাড়া উচিত। ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছেন ৪ টাকা পর্যন্ত।” ভোজ্যতেলের দামও আকাশ ছুঁয়েছে। এক ডজন ডিমের দাম ১২০ টাকা। মাছও আগুন দর। এই পরিস্থিতিতে টিসিবি-র গাড়িতে গরিব পরিবারগুলিকে কম দামে বিক্রির জন্য সরকার বুধবার সোয়া কোটি ২৫ লক্ষ লিটার সোয়াবিন তেল ও পাঁচ হাজার টন মুসুর ডাল কিনেছে। এ জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ২৭১ কোটি টাকা।
এই সব সামগ্রী কতটা গরিব পরিবারের কাছে পৌঁছয় তা নিয়ে সন্দিহান বিরোধীরা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির অভিযোগ করেছেন, বণ্টনের নামে শাসক দল ঢালাও লুঠপাট চালাচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে বিএনপি ২২ অগস্ট থেকে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। শাসক দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বুধবার ঘোষণা করেছেন, তাঁরা রাস্তায় নেমে বিএনপির আন্দোলন ঠেকাবেন।