নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৭ আগস্ট৷৷ ধর্মনগরের একজন আদর্শ শিক্ষক, একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ এবং একজন প্রকৃত মানুষ দরদী সমাজসেবী বলতে যা বুঝায় বিনয় ভূষণ রায় ছিলেন তাই৷ তাই ষোল আগাস্ট সন্ধ্যা ৫ঃ৩৭ মিনিটে যখন তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন, তখন উনার জন্য ছিল উপচে পড়া ভিড়৷ জীবনের শুরুতে ধর্মনগরের দীননাথ নারায়নী বিদ্যামন্দিরে শিক্ষক হিসাবে পেশা শুরু করেছিলেন৷ ১৯৮৩ সালে তিনি ছিলেন ধর্মনগর থেকে জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী, তারপর ৮৮, ৯৩ প্রতিটি নির্বাচনে ছিলেন একজন সক্রিয় কংগ্রেসের যোদ্ধা৷ অবিভক্ত উত্তর জেলার সভাপতি দায়িত্বে ছিলেন৷ একসময় সেবা দলের সভাপতি দায়িত্বেও ছিলেন বেশ দীর্ঘদিন৷ ওনার ছোট দুই ভাই বিজয় কান্তি রায় এবং বিমল কান্তি রায় দুজনেই পেশাদারী জীবনে উচ্চ শিক্ষিত এবং উচ্চ পদের অধিকারী৷ জীবনের সমস্ত সঞ্চয় কম বয়সে ছোট ভাইদের জন্য তারপর অগণিত ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার দায়িত্ব নেওয়া, তাদেরকে পড়াশোনা করানো, জামা কাপড় দেওয়া ,খাওয়া থাকা সবই নিজ বাড়িতে ব্যবস্থা করে নিজে অবিবাহিত জীবন যাপন করেছেন৷ ৮৮ বছর বয়সে ১৬ আগস্ট মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার সাথে সাথে অগণিত মানুষ উনার বাড়িতে ভিড় করে৷ কত মেয়ের পড়াশোনা চালানো, বিয়ের খরচ যোগাড় করা সবই করে দিতেন উনার সঞ্চয় টাকা থেকে৷তাই ওনার সঞ্চয়ের ভান্ডার ছিল শূন্য৷ সাধারণ মানুষই ছিল এই লোকটার মূল সঞ্চয়৷ বেশ কিছুদিন বার্ধক্য জনিত রোগের কারণে বাড়িতে থেকে অবশেষে মৃত্যুবরণ করার সাথে সাথে অজস্র সজল চক্ষু নিয়ে মানুষের অগণিত ভিড়৷ রাতে ধর্মনগরের দেওয়ানপাশার শ্মশানে পঞ্চভুতে বিলীন হয়ে যায় বিনয় ভুষণ রায়ের শবদেহ৷
2022-08-17