জল জীবন মিশনে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রত্যেকটি বাড়িতে পানীয়জল পৌঁছে দিতে হবে : পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান মন্ত্রী

আগরতলা, ২১ জুলাই : ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রত্যেকটি বাড়িতে জল জীবন মিশনে পরিশ্রুত পানীয়জল পৌঁছে দিতে হবে। এই লক্ষ্য নিয়ে পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের কর্মী এবং আধিকারিকদের কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে বিদ্যুৎ নিগমের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আজ আগরতলার প্রজ্ঞাভবনে জল জীবন মিশনের পর্যালোচনা বৈঠকে এই গুরুত্ব তুলে ধরেন পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অগ্রাধিকার তালিকায় জনমুখী যে ৫টি প্রকল্প রয়েছে তারমধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে জলজীবন মিশন। সারা দেশেই এই প্রকল্পে পানীয়জল পরিষেবা পৌঁছে দিতে কাজ চলছে। দেশের প্রায় ১৯ কোটি পরিবার রয়েছে। তারমধ্যে প্রায় ৯ কোটি পরিবারে পানীয়জল পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

পর্যালোচনা বৈঠকে পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান মন্ত্রী আরও বলেন, বৈঠকে জল জীবন মিশন প্রকল্প বাস্তবায়নে যেসব সমস্যা বা চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেগুলি কাটিয়ে এই প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করার লক্ষ্য নিতে হবে। বিদ্যুতের সমস্যা নিরসনের জন্য দপ্তরের আধিকারিকদের সময়ে সময়ে বিদ্যুৎ নিগমের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। যাতে প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে নেওয়া যায়। পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান মন্ত্রী বলেন, জল জীবন মিশন প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে দপ্তরের শীর্ষস্তর থেকে যা যা সহায়তা করা দরকার সেটা করা হবে। কিন্তু মাঠে গিয়ে প্রকল্পের বাস্তবায়নের দায়িত্ব জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে অন্যান্য সব পদস্থ আধিকারিকদের। কারণ এই মিশনের সফলতা নির্ভর করছে সংশ্লিষ্ট কর্মী আধিকারিকদের উপর। মনে রাখতে হবে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই রাজ্যের প্রায় সব পরিবারে পানীয়জলের সংযোগ পৌঁছে দিতে হবে। টেন্ডার প্রক্রিয়া বাস্তবায়নও দ্রুতগতিতে সেরে ফেলতে হবে। কারণ টেন্ডার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ার কারণে সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলি সময় মতো প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারে না।

পর্যালোচনা সভায় পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান মন্ত্রী বলেন, অ্যাসপিরেশনাল জেলা হিসেবে ধলাই জেলাতে জল জীবন মিশন প্রকল্প বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন দপ্তরের মন্ত্রী। তিনি জানান, এডিসি এলাকাগুলিতেও বিভিন্ন জায়গায় পানীয়জলের সমস্যা রয়েছে। এজন্য এডিসি প্রশাসনের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে।

পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান মন্ত্রী বৈঠকে উপস্থিত প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সংস্থার প্রতিনিধি এবং ঠিকাদারদের উদ্দেশ্যে সময়ের কাজ সময়ে শেষ করার আহ্বান রাখেন। প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যাতে সংশ্লিষ্ট এজেন্সির দায়িত্বপ্রাপ্তরা উপস্থিত থেকে দ্রুতগতিতে কাজ সম্পন্ন করে সেই আহ্বান রাখেন। তিনি বলেন, ডিসেম্বর পর্যন্ত আগামী কয়েক মাস টার্গেট নিয়ে কাজ করতে হবে। যাতে সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হয়ে যায়। দপ্তরের কর্মী ও আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান মন্ত্রী বলেন, আপনারা নিজেদের মধ্যেই একটা সুস্থ প্রতিযোগিতা করুন। কে আগে কাজ শেষ করতে পারবেন সেটাই প্রতিযোগিতার মুখ্য বিষয় হোক। আর যেই জেলা সবার আগে কাজ শেষ করবে সেই জেলাকে পুরস্কৃত করা হবে। তাই জল জীবন মিশন প্রকল্প বাস্তবায়নে নিজেদের সেরাটা তুলে ধরুন।

বৈঠকে পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ তুলে ধরেন। কিভাবে দ্রুতগতিতে কাজ সম্পন্ন করা যাবে সেই সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য তুলে ধরেন। এর পাশাপাশি বকেয়া কাজগুলি তাড়াতাড়ি শেষ করতে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দেন। এদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দপ্তরের মুখ্য বাস্তুকার শ্যামলাল ভৌমিক, অধিকর্তা রাজীব মজুমদার, ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম লিমিটেডের এমডি দেবাশিস সরকার। রাজ্যের ৮টি জেলা থেকে দপ্তরের আধিকারিকগণ অংশগ্রহণ করেন। উপস্থিত ছিলেন জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে অ্যাসিস্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ার, এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার এবং সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার সহ জল জীবন মিশন প্রকল্পে যুক্ত বিভিন্ন এজেন্সির প্রতিনিধিগণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *