কলকাতা, ১১ জুলাই (হি. স.) : “মাননীয়া এবার আপনি কি হাঁসখালির পরিবারটির কাছে ক্ষমা চাইবেন? বাংলার মেয়েদের অপমান করার জন্য ক্ষমা চাইবেন?“
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে টুইটারে এই মন্তব্য করে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল লেখেন, “হাঁসখালি কাণ্ডে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। তাতে স্পষ্ট বলা আছে মেয়েটিকে সংজ্ঞাহীন করে ধর্ষণ করা হয়েছিল। এরপরে প্রমাণ লোপাট করতে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। গুণধর তৃণমূল নেতার ছেলের নেতৃত্বে এই বর্বরচিত ধর্ষণ হয়েছিল।
হাঁসখালিকাণ্ডে প্রথম চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। এই চার্জশিটে মোট ৯ জনের নাম রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ঘটনায় মূল অভিযুক্ত স্থানীয় তৃণমূল নেতার ছেলের নাম। নাম রয়েছে প্রভাবশালী তৃণমূল নেতারও। চার্জশিটে সিবিআই আদালতে জানিয়েছে, মূলত তিন অভিযুক্ত ঘটনার দিন নাবালিকাকে নেশার দ্রব্য খাইয়ে সংজ্ঞাহীন করে গণধর্ষণ করে। অসুস্থ হয়ে পড়লে পরে তার বাড়ির লোকেদের হুমকি দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া আটকায়। পরদিন সকালে মৃত্যু হয় মেয়েটির। তখন ময়নাতদন্ত না করে দেহ দাহ করে দেয়। রানাঘাট পকসো আদালতে এই চার্জশিট জমা পড়েছে।
মনে আছে আপনি কী বলেছিলেন মাননীয়া? ঘটনার পরে ধর্ষিতা কিশোরীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। বলেছিলেন, “হাঁসখালিতে যা হয়েছে, রেপ, প্রেগনেন্ট না লাভ অ্যাফেয়ার্স বলবেন? অনেক ঘটনার মধ্যে একটা ছোট ঘটনা ঘটে গেছে। একটা বাচ্চা মেয়ে মারা গেছে। ঘটনাটা খারাপ। কিন্তু গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু প্রথমেই কেন থানায় রিপোর্ট করা হয়নি?”
প্রশ্ন তুললেন, কেন ঘটনার পাঁচদিন পর পুলিসের কাছে অভিযোগ দায়ের করল নির্যাতিতার পরিবার। তিনি বলেন “মেয়েটি মারা গিয়েছে ৫ তারিখে। অভিযোগ জানানো হয়েছে ১০ তারিখে। যদি কারও কোনও অভিযোগ থাকে, তবে ৫ তারিখে অভিযোগ দায়ের করলেন না কেন?”
মেয়েটি ও তার পরিবারের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলতে আপনার অসুবিধে হয়নি। তৃণমূল নেতা ও নেতার ছেলের নাম জড়ানোয় পুরো ঘটনা উল্টোদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করেছিলেন। এবার আপনি কেন চুপ? আপনার দল কেন চুপ? ধর্ষিতা কিশোরী বাংলার মেয়ে নয়? বিরোধী নেত্রী থাকার সময় ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করেছেন। ক্ষমতায় আসার পরেও একই রাজনীতি করে চলেছেন। লজ্জা আমাদের। পার্থক্য হলো, আপনার এই জঘন্য রাজনীতি বাংলার মানুষ ধরে ফেলেছে। এর বিচার হবে জনগণের দরবারে।“