আগরতলা, ২ জুলাই (হি. স.) : মণিপুরে সংঘটিত ভূমিধসে কর্তব্যরত অবস্থায় শহিদ হয়েছেন ভারতীয় সেনার ১০৭ নম্বর টেরিটরিয়াল আৰ্মির জওয়ান ত্রিপুরার আরও এক বীর-সন্তান প্রশান্ত দেব। ইতিপূর্বে জওয়ান সঞ্জয় দেবনাথের শহিদ হওয়ার খবরে শোকস্তব্দ হয়ে পড়েছিল গোটা রাজ্য। আরও এক জওয়ানের মর্মান্তিক মৃত্যুর বাকরুদ্ধ ত্রিপুরবাসী। দুই শহিদ জওয়ানের পরিবারের আর্ত চিত্কারে ভারী হয়ে উঠেছে ত্রিপুরার বাতাস।
গত বুধবার গভীর রাতে মণিপুরের টুপুল রেল স্টেশনের কাছে ধস নেমেছিল। সেখানেই ছিল ১০৭ টেরিটরিয়াল আর্মির ক্যাম্প। ওই ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন ত্রিপুরার দুই বীর সন্তান। ভূমিধসে ত্রিপুরার সন্তান বিশালগড়ের বাইদ্যারদীঘির কসবা এলাকার সঞ্জয় দেবনাথ এবং খোয়াই জেলায় কল্যাণপুরের বাসিন্দা প্রশান্ত দেবের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মণিপুরের ননে জেলায় ভয়াবহ ভূমিধসের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮১। এখনও খোঁজ নেই বহুজনের, ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং জানিয়েছেন, ধসের জেরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮১। শুক্রবার উদ্ধারকাজ সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন তিনি।
ভূমিধস এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, পাহাড়ের নীচে ইজাই নদীর মাঝখানে বাঁধের সৃষ্টি করে গতিপথ অবরুদ্ধ করে রেখেছে। প্ৰতিকূল আবহাওার জন্য উদ্ধার অভিযান শেষ করতে আরও দু-তিনদিন সময় লাগবে বলে আজ জানিয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা।
উল্লেখ্য, গত বুধবার মধ্যরাতে টুপুল স্টেশনের কাছে ভারতীয় সেনার ১০৭ টেরিটরিয়াল আর্মি ক্যাম্পে ধস নামে। সেই থেকে চলছে উদ্ধারকাজ। জিরিবাম থেকে ইমফল পর্যন্ত একটি নির্মীয়মাণ রেললাইনের নিরাপত্তার জন্য টুপুল রেলওয়ে স্টেশনের কাছে সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল।আজ এক এক করে দুই জওয়ানের মর্মান্তিক মৃত্যুর খবরে তাঁদের পরিবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। শহিদ জওয়ান প্রশান্ত দেবের স্ত্রী রিঙ্কু দাস ত্রিপুরা পুলিশে কর্মরত রয়েছেন। স্বামীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, তিনি স্বাভাবিক আছেন। এদিকে, সঞ্জয় দেবনাথের পরিবারও ভীষণভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন। ছেলের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তাঁর বাবা। আগামীকাল দুই জওয়ানের মরদেহ ত্রিপুরায় আনা হবে।