নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৯ জুন৷৷ দুদিনের বিরামহীন বৃষ্টিপাতে উত্তর জেলার ত্রিপুরা অসম সীমান্তের কুর্তি এলাকায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে৷ বর্তমানে ৯২ টি পরিবার জলবন্দি৷ মোতায়েন করা হয়েছে এস ডি আর এফ এবং টি এস আর এর বিশেষ একটি টিম৷ উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে৷প্রায় ৪৫ টি পরিবারকে নিয়ে আসা হয়েছে রিলিফ ক্যাম্পে৷দেওয়া হচ্ছে খাদ্য সামগ্রী৷এক আতঙ্কময় পরিবেশ গোটা এলাকা জুড়ে৷ জানা গেছে,শুক্রবার থেকে শনিবার পর্যন্ত টানা দুদিনের বৃষ্টিপাতের ফলে উত্তর জেলার ত্রিপুরা অসম সীমান্তের কুর্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের এক নং ওয়ার্ডের মানিকনগর এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলমগ্ণ হয়ে পড়েছে৷ মিজোরামের জল আসামের বুক চিরে লঙ্গাই ও সিংলা নদী বেয়ে কুর্তি এলাকায় প্রবেশ করছে৷ মোট ১০ টি ছড়া এবং ৩ টি নদীর জল মানিকনগর এলাকা জলমগ্ণ করে ফেলেছে৷ বিশেষ করে কুর্তি নদী, থাল নদী ও কয়লা নদীর জল ঢুকে প্লাবিত করেছে বিস্তীর্ণ অঞ্চল৷বর্তমানে ৯২ টি পরিবার জল বন্দি হয়ে পড়েছে৷মোতায়েন করা হয়েছে এস ডি আর এফ ও টি এস আর এর প্রশিক্ষণরত বিশেষ টিম৷তারমধ্যে ৪৫ পরিবারকে নিয়ে আসা হয়েছে কুর্তি পঞ্চায়েত সংলগ্ণ রিলিফ ক্যাম্পে৷এস ডি আর এফ এর তরফ থেকে দেওয়া হচ্ছে চাল,ডাল, সরিষার তেল,আলু,চিরা,গুড় সহ অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী৷মাইক যোগে জনগনকে নিরাপদ স্থানে আসার আহ্বান প্রশাসনের৷বর্তমানে মিজোরাম ও অসমের জল তীব্র বেগে ধেয়ে আসছে৷ আশঙ্কা রয়েছে বাংলাদেশের জুড়ি নদীর জল প্রবেশ করার৷তবে ক্রমশ জলস্তর বৃদ্ধি হচ্ছে৷ এদিকে শনিবার দিনে মানিকনগর এলাকা পরিদর্শন করেন কদমতলা ব্লকের বিডিও প্রনয় দাস, পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান সুব্রত দেব,কুর্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুব্রত শব্দকর সহ অন্যান্য প্রতিনিধিরা৷তাঁরা গোটা দিনভর ত্রান সামগ্রী বিতরণ করেন ও খোঁজখবর নিয়ে উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের অবগত করেন৷তবে শনিবার রাতে পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ নিলে ছুটে আসেন মহকুমা শাসক এল ডার্লং, অতিরিক্ত মহকুমা শাসক মানিক চক্রবর্তী,কদমতলা থানার ওসি সুশান্ত দেব৷ খোঁজ খবর নেন বন্যার কবলে পড়া ও রিলিফ ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া মানুষের হাথে৷ অপরদিকে বন্যার কবলে পড়া জনগন জানিয়েছেন, তাদের কোন ধরনের সমস্যা হচ্ছে না৷সানীয় পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের তরফে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করা হচ্ছে৷ বর্তমানেও বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ তাদের আসবাপত্র সহ গবাদিপশু নিয়ে রিলিফ ক্যাম্পে আশ্রয় নিচ্ছেন৷ অপরদিকে কুর্তি জলাধার বিল রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বড় জলাধার বলে পরিচিত৷ পূর্বের দীর্ঘ শাসনের বাম সরকার যেমন এই বন্যার সমস্যা নিয়ে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি তেমনি বর্তমান সরকারের সময়েও কুর্তি এলাকার জনগণের একই সমস্যা চিরাচরিতভাবে রয়েই গেল৷ বিশেষ করে ৫৪ নং বিধানসভা কেন্দ্রের বাম বিধায়ক ইসলাম উদ্দিনের বাড়ি কুর্তি এলাকায় থাকা সত্ত্বেও এই বন্যার সমস্যা নিয়ে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ৷ পাশাপাশি বিজীত প্রার্থী তথা প্রদেশ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক টিঙ্কু রায়কেও দেখা যায়নি অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে৷ যদি আরো বৃষ্টিপাত হয় তাহলে কুর্তি এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়ংকর রুপ ধারণ করতে পারে৷বর্তমানে গোটা মানিক নগর এলাকা জুড়ে তীব্র আতঙ্ক বিরাজ করছে৷
2022-06-19

