BJP : ত্রিপুরার বিজেপি কার্যকর্তারা সামান্য নন, বেঈমান নেতাদের শিক্ষা দিন, কংগ্রেসকে বিঁধে পৃষ্ঠাপ্রমুখ সম্মেলনে বার্তা

আগরতলা, ১৪ জুন (হি. স.) : ত্রিপুরার কার্যকর্তারা সামান্য নন। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব দেশ জুড়ে জোর গলায় এই দাবি করে বেড়ান। ৮-টাউন বড়দোয়ালি বিধানসভা কেন্দ্রের পৃষ্ঠাপ্রমুখদের সম্মেলনে এভাবেই তাঁদের মনোবল বাড়ালেন বিজেপির ত্রিপুরা প্রভারী সাংসদ বিনোদ সোনকর। তেমনি, ৬-আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রে পৃষ্ঠা প্রমুখদের নিয়ে সম্মেলনে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, কার্যকর্তাদের মধ্যে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে নিশ্চিত উপনির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি ঐতিহাসিক ফলাফল করবে। এদিন দুই বিধানসভা কেন্দ্রে পৃষ্ঠা প্রমুখদের সম্মেলনেই বিজেপি ত্যাগী বিধায়কদের কড়া ভাষায় ভর্ত্সনা করা হয়েছে। নাম না করেই সুদীপ রায় বর্মণ ও আশীষ কুমার সাহাকে বেঈমানের সাথে তুলনা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, তাঁদের উচিত শিক্ষা দেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে।

এদিন রবীন্দ্র শত বার্ষিকী ভবনে ৮-টাউন বড়দোয়ালি বিধানসভা কেন্দ্রের পৃষ্ঠা প্রমুখ সম্মেলনে বিজেপি ত্রিপুরা প্রভারী সাংসদ বিনোদ সোনকর বলেন, ত্রিপুরার কার্যকর্তাদের পরিশ্রম সর্বজনবীদিত। সকলেই আপনাদের শক্তি সম্পর্কে অবগত আছেন। এজন্যই ত্রিপুরার কার্যকর্তারা সামান্য নন। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব সারা দেশ জুড়ে জোর গলায় এই দাবি করে বেড়ান। তিনি সকলকে বাহবা দিয়ে বলেন, ত্রিপুরার কার্যকর্তারা সরাসরি সিপিএম থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়েছেন।

আজ বিনোদ সোনকর বিজেপিত্যাগী বিধায়কদের একহাত নিয়েছেন। তিনি নাম উল্লেখ না করেই বলেন, বর্ষায় ব্যাঙের মতো তাঁদের ছয় মাস লেগেছে রাজনৈতিক দল বাছতে। সমস্ত রাজনৈতিক দলের দরজায় কড়া নেড়ে শেষে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন তাঁরা। তাঁর কথায়, কোন দলে যাওয়া উচিত, বিজেপি কার্যকর্তাদের শক্তি দেখে তাঁরা ভয়ে বুঝতে পারছিলেন না। উপায় না দেখে দেশের মধ্যে জনবর্জিত কংগ্রেসে গিয়ে ঠাই নিয়েছেন। তাঁর কটাক্ষ, উত্তর প্রদেশে ১ লক্ষ ৫৬ হাজার বুথে কংগ্রেসের জামানত জব্দ হয়েছে। তাই, এখন দিনরাত পরিশ্রম করে উপনির্বাচনে এমন জয় ছিনিয়ে আনতে হবে, তাঁরা যেন ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের স্বপ্ন দেখতে না পারেন।

তিনি এদিন পৃষ্ঠা প্রমুখদের পরামর্শ দেন, প্রত্যেকের ভোটারের কাছে যান এবং জানার চেষ্টা করুন কংগ্রেস ত্রিপুরাকে কি দিতে পেরেছে। গত সোয়া চার বছরে বিজেপি ত্রিপুরাকে দুর্নীতিমুক্ত এবং উন্নয়নের সরকার উপহার দিয়েছে। তাঁর দাবি, উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থীদের জামানত জব্দ করতে হবে। উত্তরখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ৫২ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহাকে অন্তত ৫৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জেতাতে হবে। প্রচন্ড বহুমতে জিটতেই হবে, কার্যকর্তা মনোবল এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াতে বলেন তিনি।

এদিকে, আজ ৬ আগরতলা মন্ডলে পৃষ্ঠা প্রমুখ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, কার্যকর্তাদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে নিশ্চিত আসন্ন উপনির্বাচনে এই কেন্দ্রে ভারতীয় জনতা পার্টি ঐতিহাসিক ফলাফল করবে।

তিনি বলেন, বিগত দিনে ত্রিপুরার মানুষের গড় আয় ছিল এক লক্ষ একশো চৌচুল্লিশ টাকা। কোভিড পরিস্থিতি থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে ত্রিপুরার জনগণের গড় আয় এক লক্ষ একত্রিশ হাজার টাকা। তিনি আজ সুদীপ রায় বর্মণ ও আশীষ কুমার সাহাকে নাম উল্লেখ ছাড়াই নিশানা করে বলেন, আগরতলায় দুইটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা নরেন্দ্র মোদির বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা বিবেক ভোটের ডাক দিয়েছিলেন। যখনই উপনির্বাচন বা কোনো নির্বাচন হয়েছে তখনই তাঁরা দল এবং জনগণের সঙ্গে বেঈমানি করেছেন। ২৫ বছর তাঁরাই ত্রিপুরার জনগণের সঙ্গে বেঈমানি করেছেন, তাঁদের শিক্ষা দিন।তাঁর দাবি, কংগ্রেস ও সিপিআইএমের মিতালী এখন লুকানোর নেই। কিছুদিন পরে তা আরো প্রকাশ্যে চলে আসবে। তিনি প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, কমিউনিস্টরা আপনার পরিবারের সাথে কি করেছে তা আপনি দেখেছেন। সেই জায়গায় বিজেপি সরকার জনজাতিদের জন্য যদি কিছু করে থাকে তাহলে আসুন, অশোকবাবুর সঙ্গে একই মঞ্চে এসে জনজাতি ভাই বোনদের আবেদন করি আমাদের সমর্থন করুন। তাঁর মতে, একমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ত্রিপুরার জনজাতিদের জন্য তেরোশো কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ করেছেন, আগরতলা বিমানবন্দরের নাম মহারাজা বীর বিক্রমের নামে রেখেছেন, বড়মুরার নাম হাতাই কতর এবং গন্ডাছড়ার নাম গন্ডাতুইসা দিয়েছেন। সাথে তিনি যোগ করেন, ২৩ বছরের রিয়াং শরণার্থী সমস্যার সমাধানও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই করেছেন। হিন্দুস্থান সমাচার\সন্দীপ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *