ক্রীড়া প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ মে।। দরিদ্র ঘরের ছেলে। পিতা মাটির পাতিল বেঁচে দুটো পয়সা আয় করলেও ছেলেকে নিয়ে প্রত্যাশা অনেক। ছেলে এবছর নজর কাড়লো রাজ্য ক্রিকেটে। সোমবার শেষ হয় রাজ্য অনূর্ধ্ব-১৫ ক্রিকেট। ওই আসরে শহরের ক্রিকেটারদের কিছুটা পেছনে ফেলে এগিয়ে গেলো বিশালগড় মহকুমার অক্ষত গ্রাম কোনাবনের রাকেশ রুদ্র পাল। ফাইনাল ম্যাচের সেরা হওয়ার পাশাপাশি কোচ তপন দেবের ছাত্রটি প্রায় প্রতি ম্যাচেই সকলের মন জয় করে নেয়। সুকুমার এবং ঝর্ণা রুদ্র পালের ১ ছেলে এবং মেয়ের দ্বিতীয় রাকশে রুদ্র পাল সদ্য সমাপ্ত রাজ্য আসরে ২ ম্যাচে ব্যাট হাতে ২৩ রান করে। পাশাপাশি ৫ ইনিংসে বল হাতে ১৮ উইকেট নিয়ে সাড়া ফেলে দেয় কোনাবন পশ্চিম দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রটি। ৪ বছর আগে কোচ তপন দেবের কাছেই ক্রিকেটে হাতেখড়ি ডানহাতি ওই লেগ স্পিনারটির।
এবছর বিশালগড় মহকুমা আসরে ৭ ম্যাচ খেলে ১৩ উইকেট নেওয়ার পরই ডাক পায় রাজ্য আসরে পশ্চিম জোনের হয়ে। ওই সুযোগের সদব্যবহার করলো উঠতি ওই প্রতিভাবান অলরাউন্ডারটি। ফাইনালে উত্তর জোনের বিরুদ্ধে দুই ইনিংসে ৮ উইকেট নিয়ে পশ্চিম জোনকে অপরাজিতভাবে চ্যাম্পিয়ন করাতে মূখ্য ভূমিকা নেয় প্রয়াত অস্ট্রেলিয়ার তারকা লেগ স্পিনার শ্যান ওয়ার্ণের ভক্ত রাকেশ। ফাইনালের দ্বিতীয় ইনিংসে একাই ৫ উইকেট নিয়েছিলো সে। এক সাক্ষাৎকারে রাকেশ বলে,”আমাকে অনেক দূর যেতে হবে। তা মাথায় রেখেই প্রতিনিয়ত শিখছি। কোচ তপন স্যার যেভাবে বলে সেভাবেই অনুশীলন করে চলছি। আমাকে আরও উন্নতি করতেই হবে। এর জন্য যতটা পরিশ্রম করতে হয় করবো”। বিশালগড় মহকুমার ওই অক্ষত গ্রামে ক্রিকেটের তেমন কোনও পরিকাঠামো নেই বললেই চলে।
ক্রিকেট পাগল কোচ তপন দেব নিজের চেষ্টায় ছোট একটি মাঠে অনুশীলন করান প্রতিদিন প্রায় ২০-২৫ জনকে। ওই সেন্টার থেকেই পেশাদার ক্রিকেটে পা রাখার চেষ্টা করেছিলেন অমিত আলি। আই পি এলের নিলামে ডাক পেয়েছিলো। এবার ‘নূন আনতে পান্থা ফরোয়’ পরিবারের ছেলে রাকেশের স্বপ্ন নিজেকে আরও তৈরী করে পেশাদার ক্রিকেটে পা রাখা। কাজটা কঠিন হলেও পেছনে ফিরে তাকাতে নারাজ ছিপছিপে চেহেরার ওই প্রতিভাবান অলরাউন্ডারটি। পশ্চিম জোনের কোচ সুজিত রায় একসময় কৃপন বোলার হিসাবে পরিচিত ছিলেন। ফাইনাল শেষে সুজিত বলেন,”যথেষ্ট প্রতিভাবান ওই স্পিনারটি। সঠিক তালিম পেলে অনেক এগিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখবে”।