নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৪ মে৷৷ ধর্মনগর মহকুমা শাসকের অফিস চত্বরে একটি অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার অস্থায়ীভাবে রয়েছে৷ ধর্মনগর শিশু বিজ্ঞান উদ্যান এর কাজ যখন চলছিল তখন সাময়িকভাবে এই অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারটি মহকুমা শাসকের অফিস চত্বরে অস্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা হয়েছিল৷ তিন বছরের উপরে হয়ে গেল এখনো একই জায়গায় খুবই অসুবিধার মধ্যে এই সেন্টারটি চলছে৷
এখানে অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার এর দায়িত্বে রয়েছেন শিউলি রানী দে এবং সহকারির দায়িত্বে রয়েছেন সবিতা গোপ৷ মোট ৪৩ টি শিশু রয়েছে এই অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে৷ প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ১২জন বালক-বালিকা পড়াশোনার জন্য সেন্টারে আসে৷ কিন্তু দালালদের জন্য এই সেন্টারে পড়াশোনা দুষ্কর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ ঠিক অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারটির বারান্দায় টেবিল নিয়ে বসে বিজন ঘোষ নামে এক দালাল৷ সে আলগাপুর বাগনটিলা এসপিও ক্যাম্পে একসময় কর্মরত ছিল৷ কিন্তু ভারতীয় খাদ্য গুদাম থেকে চুরি হওয়া চাল তার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়ার পর তাকে চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয়৷ তারপরই সে দালালী শুরু করে এবং অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারের বারান্দা জুড়ে বসে৷সকাল আটটা বাজলে এই সেন্টারের বারান্দায় সব দালালদের জমায়েত শুরু হয়৷ চলে অকথ্য গালিগালাজ৷ পড়াশোনা তো দূরের কথা দুজন দিদিমণি কানে তুলা লাগিয়ে ও থাকতে পারে না৷ তাদেরকে কিছু বললে সেন্টার থেকে বের করে দেবে বলে হুমকি দেওয়া হয়৷ ভাঙ্গা ঘরে বাচ্চাদেরকে খাইয়ে ছুটি দিয়ে ঘর বন্ধ করে পালিয়ে লজ্জার হাত থেকে বাঁচে দিদিমণিরা৷
পড়াশোনার বিন্দুমাত্র পরিবেশ নেই৷ রাজ্য তথা দেশের সরকার বাচ্চাদেরকে ভবিষ্যতের নাগরিক বানানোর জন্য যথেষ্ট প্রচেষ্টা চালালেও দালাল রাজের জন্য পড়াশোনার এই হল হতে চলেছে৷ অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে বাচ্চাদের জন্য খাবার জল টুকু পর্যন্ত ব্যবস্থা নেই, এরা বোতলে করে বাড়ি থেকে জল নিয়ে আসে পান করার জন্য৷ঘরের দরজা গুলো এবং জানালা গুলোর বেহাল অবস্থা ,ভেঙ্গে এপার অপার দেখা যায়৷ চেয়ার টেবিল ক্লাসে পড়ানোর পরিবর্তে দালালদের কাছে থাকে৷ এইভাবে মহাকুমা অফিস চত্বরে চলছে অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার৷ যেখানে দালালদের দুর্নীতি তুঙ্গে পড়াশোনা বাচ্চাদের জাহান্নামে৷ সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ণ উঠেছে দালাল বিজন ঘোষ চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর এত ক্ষমতা পায় কোথা থেকে? তাহলে কি সরকার দালালদের কাছে নতজানু?