আগরতলা, ২২ এপ্রিল(হি. স.): ত্রিপুরায় হবে মাল্টি মডেল ট্রান্সপোর্ট হাব। তাতে ত্রিপুরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে উপকৃত হবে। রেলওয়েকে ঘিরে উন্নয়ন এখানেই থেমে থাকবে না। চলতি বছরেই বাংলাদেশের সাথে রেলপথে জুড়তে চলেছে আগরতলা। ত্রিপুরা সফরের অন্তিম দিনে সাংবাদিক সম্মেলনে এই আশার বাণী শুনালেন রেল রাষ্ট্র মন্ত্রী রাওসাহেব পাতিল দানভে। তাঁর কথায়, আগরতলা-আখাউড়া রেল সংযোগ এবছর ডিসেম্বরে স্থাপিত হবে। তাঁর দাবি, রেলপথে ত্রিপুরা বাংলাদেশের সাথে যুক্ত হলে কলকাতা যেতে এখন যেখানে সময় নেয় ৩৮ ঘন্টা, তখন ১৬ ঘণ্টায় ওই দূরত্ব অতিক্রম করা সম্ভব হবে। সাথে তিনি যোগ করেন, ত্রিপুরায় ডাবল লাইনের সমীক্ষা শীগ্রই শুরু হবে। এ-বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
এদিন তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশে উত্তর পূর্বাঞ্চলের ৮ রাজ্যের রাজধানীকে দিল্লির সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ হচ্ছে। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। এই অঞ্চলে যে সমস্ত পরিষেবা ছিল না তা দ্রুত চালু করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তাঁর কথায়, দেশে ১১৫টি অ্যাসপিরেশনাল জেলা রয়েছে, সেখানে নিয়মিত সফর এবং উন্নয়নমূলক কাজকর্ম পর্যালোচনা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী সমস্ত মন্ত্রকের মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী তিনি আসাম ও ত্রিপুরা সফরে এসেছেন। আসামের বড়পেটায় তিনি জনপ্রতিনিধি এবং জনসাধারণের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্মেরও খোঁজখবর নিয়েছেন, বলেন তিনি।
শ্রীদানভের বক্তব্য, শিক্ষা, জাতীয় সড়ক, আদিবাসী উন্নয়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে বড়পেটা জেলা একসময়ে পিছিয়ে ছিল। এখন সেখানে এই সমস্ত বিষয়ের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটেছে। তিনি জানান, গতকাল আগরতলায় এনএফ রেলওয়ের আধিকারিকদের সঙ্গে ত্রিপুরায় রেলের কাজকর্মের পর্যালোচনা করেছেন।
কেন্দ্রীয় রেল রাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ত্রিপুরায় মাল্টিমডেল ট্র্যান্সপোর্ট হাব বানাতে চাইছে। এই হাব হলে উত্তর পূর্বাঞ্চল তথা ত্রিপুরার মানুষের খুব উপকার হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের দিক থেকে কাজকর্ম বাকি রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তাঁর দাবি, ল্যান্ড পোর্ট অফ ইন্ডিয়ার তত্ত্বাবধানে ওই মাল্টি মডেল ট্রান্সপোর্ট হাব পরিচালিত হবে, নির্মাণ রেলওয়ে করবে।
এদিন তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, আগরতলা-আখাউড়া রেল প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সমাপ্ত হবে। ওই রুটে রেল চলাচল চালু হয়ে গেলে যাতায়াতের ক্ষেত্রেও এক নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। ৩৮ ঘন্টার সফর ১৬ ঘণ্টায় শেষ হবে। তিনি জানান, আখাউড়া স্টেশনের কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আন্তঃরাষ্ট্রীয় কার্গোর কাজের পর্যালোচনাও করা হয়েছে। কাজ সন্তোষজনক গতিতে এগিয়ে চলেছে। এই কাজটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট সময়ের আগেই কাজটি শেষ করার জন্যও রেলের আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিন শ্রীদানভে জানিয়েছেন, গতকাল ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সঙ্গে রাজ্যের উন্নয়নের বিষয়ে কথা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের মানুষ যাতে রেল পরিষেবার সুফল আরও ভালোভাবে পেতে পারেন তার জন্য দাবি জানিয়েছেন। বিশেষ করে মুম্বাই পর্যন্ত রেল সার্ভিস চালুর বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে।