Chief Minister : জনজাতিদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের পাশাপাশি সংস্কৃতির বিকাশেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী 

লংতরাইভ্যালী, ১৩ এপ্রিল : জনজাতিদের কল্যাণে রাজ্য সরকার অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে। জনজাতিদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের পাশাপাশি কৃষ্টি ও সংস্কৃতির বিকাশেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আজ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব লংতরাইভ্যালী মহকুমার হুকু তুইসা ইংলিশ মিডিয়াম দ্বাদশশ্রেণী বিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী রাজ্যভিত্তিক বুইসু উৎসবের উদ্বোধন করে একথা বলেন। ২০তম রাজ্যভিত্তিক বুইসু উৎসবের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ২০১৮ সালে দেশের যশশ্রী প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমাদের রাজ্যে জাতি জনজাতির সরকার গঠিত হয়েছে। বর্তমানে রাজ্যে ৩৭ লক্ষ মানুষের সরকার কাজ করছে। রাজ্যে বড় মাত্রায় জনজাতি অংশের মানুষ রয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বড়মুড়া পাহাড়ের নাম হাথাই কতর ও গন্ডাছড়ার নাম গন্ডা তুইসা করেছে।


মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগে উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন আশানুরূপ হচ্ছিলনা। এখন ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। তিনি বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যে ২৫ বছর একটা সরকার ছিল। কিন্তু ধলাই জেলার জনজাতি অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকার উন্নয়ন হয়নি। বর্তমান সরকারের সময়ে এই সমস্ত জনজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলের মানুষের উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার কাজ করে চলেছে। এতে এলাকার উন্নয়ন ঘটছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অ্যাশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক থেকে ১ হাজার ৩০০ কোটি রাজ্যের জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের উন্নয়নে সরকার এনেছে। জলজীবন মিশনের মাধ্যমে জনজাতি এলাকার প্রতিটি পারিবারে বিনামূল্যে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। আগে জনজাতি মা-বোনদের অনেক দুর থেকে জল আনতে হত। এখন এই পরিস্থিতি দূর হচ্ছে। রাজ্য সরকার প্রতিটি পরিবারে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে। রাজ্য সরকার জনজাতি এলাকাগুলিতে পেভার ব্লক দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করে দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বিগত সরকারের সময়ে ৫ বছরে ৪৬ হাজার ঘর হয়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকার ২ লক্ষ ৩৫ হাজার মানুষের ঘরের ব্যবস্থা করেছে। প্রতিটি ঘরে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা করে ব্যয় হচ্ছে। এতে তিন হাজার কোটি বায় হচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন। একাজে তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রীর সদর্থক ভূমিকার উল্লেখ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী গুজরাটকে যেমন ভালবাসেন তেমনি ত্রিপুরাকেও ভালবাসেন।


মুখ্যমন্ত্রী বুইসু উৎসবের আয়োজক এবং উপস্থিত সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের জনজাতি অংশের মানুষের কল্যাণে গুরুত্ব দিয়েছেন এবং প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করছেন। জনজাতি অংশের মানুষ বর্তমান সরকারের সময় তাদের বিভিন্ন অধিকার পেয়েছে। অথচ অনেক আগেই তাদের অধিকারগুলি পাওয়ার প্রয়োজন ছিল। প্রধানমন্ত্রী চান ত্রিপুরা দেশের মধ্যে একটি অগ্রণী রাজ্য হয়ে উঠুক। আগামী ৫ বছরে ত্রিপুরা দেশের মধ্যে ১ নম্বর রাজ্য হয়ে উঠবে। প্রধানমন্ত্রীর এই ইচ্ছাকে পুরণ করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।


অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় জলশক্তি ও আদিবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বিশ্বেশ্বর টুডু বলেন, জলশক্তি মিশনে রাজ্যের বাড়ি বাড়ি পানীয়জল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের জনজাতি সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীর শিক্ষার বিকাশেও কেন্দ্রীয় সরকার গুরুত্ব দিয়েছে। এজন্য গড়ে তোলা হচ্ছে একলব্য আবাসিক মডেল স্কুল। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাংসদ রেবর্তী ত্রিপুরা, বিধায়ক দিবাচন্দ্র রাঙ্খল, বিধায়ক ধনঞ্জয় ত্রিপুরা প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন এমডিসি হংসকুমার ত্রিপুরা, এমডিসি সঞ্জয় দাস সহ বিশিষ্ট জনেরা। সভাপতিত্ব করেন শচীন্দ্র ত্রিপুরা। দু’দিনব্যাপী বুইসু উৎসব উপলক্ষে প্রদর্শনী মন্ডপ খোলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *