আগরতলা, ৭ এপ্রিল (হি. স.) : মেহেঙ্গাই মুক্ত ভারত কর্মসূচির অধীনে ত্রিপুরায় বিক্ষোভ দেখাল কংগ্রেস। সাথে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির অভিযোগ এনে ত্রিপুরা পুলিশের মহানির্দেশকের কাছে ডেপুটেশন দিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি (পিসিসি)। এদিন বিক্ষোভ কর্মসূচিতে রাজ্য পুলিশের সদর কার্যালয়ের বাইরে বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক তথা কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায় বর্মণ। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরায় বিজেপি ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যাবে বলে এদিন সুদীপ বাবু জোর গলায় দাবি করেছেন।
আগাম ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার কংগ্রেস ভবনের সামনে দলীয় নেতাকর্মীরা সমবেত হন। সেখান থেকে মিছিল করে তারা রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশকের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি দল রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে ডেপুটেশন ও স্মারকলিপি প্রদান করেন।
ডেপুটেশন ও স্মারকলিপি প্রদান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা বলেন, বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে পেট্রোল ডিজেল ও রান্নার গ্যাস এবং নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্য অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গরিব মানুষের আয়ের ক্ষমতা বৃদ্ধি না করে এভাবে পেট্রোল ডিজেল ও রান্নার গ্যাস এবং নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী মূল্যবৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষ জটিল সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকারকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে প্রদেশ কংগ্রেসের তরফ থেকে জোরালো দাবি জানানো হয়েছে।
তাঁর বক্তব্য, কংগ্রেস দেশব্যাপী প্রতিটি রাজ্যের রাজধানীতে এই কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সর্বভারতীয় কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর নির্দেশে রাজ্য কংগ্রেসের নেতা কর্মী সমর্থকরা প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিল সংঘটিত করেছেন এবং রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশকের কাছে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য ডেপুটেশন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
এদিন তিনি বলেন, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটে চলেছে। রাজ্যে প্রতিনিয়ত খুন সন্ত্রাস এবং নারী নির্যাতন ধর্ষণ সহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। কংগ্রেসের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
সাথে তিনি যোগ করেন, আজ দলের কর্মী সমর্থকরা বিভিন্ন জায়গা থেকে গাড়ি নিয়ে আসার চেষ্টা করলে সেই সব গাড়ি আটকে দেওয়া হয়। যারা ট্রেনে করে এসেছিলেন তাদেরকে ট্রেন থেকে নামার পর অটো কিংবা অন্যান্য গাড়ি করে আসতে দেওয়া হয়নি। তাতে কংগ্রেস নেতা কর্মী সমর্থকদের সাথে যান চালকরাও অসন্তোষ হয়েছেন।
এদিন ত্রিপুরা পুলিশের মুখ্য কার্যালয়ের বাইরে পথসভায় প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক তথা কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায় বর্মণ ত্রিপুরা সরকারকে মূল্যবৃদ্ধি এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তুলোধুনা করেছেন। তিনি জোর গলায় দাবি করেন, বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে আগাম বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ত্রিপুরায় ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, পেট্রোল-ডিজেলের সাথে রান্নার গ্যাসের চড়া হারে মূল্যবৃদ্ধি মানুষের নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতির কারণে কৃষক আত্মহত্যা করছেন। তিনি বিষোদগার করে বলেন, ত্রিপুরায় সরকারের গাফিলতি এবং ব্যর্থতা নিয়ে মানুষ প্রতিবাদী হলেই শাসক দলের নেতা-কর্মীদের রক্তচক্ষুর সম্মুখীন হচ্ছেন। তবে, ভয় পাবেন না, প্রতিরোধ গড়ে তোলার মধ্যে দিয়েই অধিকার আদায় করতে হবে, রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন সুদীপের।

