আগরতলা, ৫ এপ্রিল (হি. স) : উপ-নির্বাচনে সুদীপ রায় বর্মণ ও আশীষ কুমার সাহা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক, চাইছে প্রদেশ কংগ্রেস। তেমনি, বিজেপি বিরোধী জোট নিয়ে নির্বাচন ঘোষণার পর সিদ্ধান্ত হবে বলে সাফ জানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিত সিনহা। তবে, সুদীপ রায় বর্মণ ও আশীষ কুমার সাহা উপ-নির্বাচনের ঝক্কি নিতে চাইবেন বলে মনে হচ্ছে না। কারণ, অতীতের দিকে ফিরে তাকালে আমরা স্পষ্ট দেখতে পাব, উপ-নির্বাচনে ফলাফল অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শাসকের ঝুলিতে পরেছে।
ত্রিপুরায় কংগ্রেস হারানো জমি খুঁজে পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাই, লাগাতর কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে অস্তিত্বের পরিচয় দিতে চাইছে। সম্প্রতি, কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ সারা ত্রিপুরা চষে বেড়াচ্ছেন। মানুষের কাছে তাঁরা আবেদন রাখছেন, বিজেপির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন এবং আবারও পরিবর্তনের চেষ্টা করুন। এ-বিষয়ে এআইসিসি সম্পাদক জরিতা লেইতফাং বলেন, প্রদেশ কংগ্রেস কোন কাজ অসমাপ্ত রাখবে না। তাই, গ্রাম স্তরে গিয়ে মানুষের সাথে সংযোগ স্থাপন করা হচ্ছে।
তাঁর অভিযোগ, সাধারণ মানুষ প্রতিবাদী হতে চাইলেই তাঁকে ভয় দেখানো হচ্ছে। শাসক দল বিজেপি গণতন্ত্রকে হত্যা করছে। তবে, মানুষ এখন এগিয়ে আসছে। তাঁর আরও অভিযোগ, বাইক বাহিনী মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে। সেই মানুষই আগামী দিনে প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন, দাবি করেন তিনি। ত্রিপুরাবাসীর কাছে তাঁর আবেদন, সময় এসেছে আওয়াজ তুলুন, পরিবর্তনের চেষ্টা করুন।
এদিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিত সিনহা বলেন, সর্ব ভারতীয় কর্মসূচির অন্তর্গত আগামী ৭ এপ্রিল মূল্যবৃদ্ধি এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ত্রিপুরা পুলিশের মহানির্দেশকের কাছে ডেপুটেশন প্রদান করা হবে। তাঁর কথায়, বিজেপির শাসনে দ্রব্যমূল্যের রেকর্ড বৃদ্ধি হয়েছে। তাতে, সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এরই প্রতিবাদে কংগ্রেস সর্ব ভারতীয় কর্মসূচীর সাথে সামিল হচ্ছে।
সাথে তিনি যোগ করেন, আগামী ১১ এপ্রিল কংগ্রেসের আদিবাসী সংগঠন রাজনৈতিক কনভেনশনে অংশ নিচ্ছে। জনজাতিদের অর্থনৈতিক বিকাশে ত্রিপুরা সরকারের অনীহার বিরুদ্ধে ওই কনভেনশনে বিস্তারিত আলোচনা হবে এবং পরবর্তী আন্দোলনের রূপরেখা স্থির করবে।
এদিন তিনি জানান, প্রদেশ কংগ্রেস উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ৪টি কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন নিশ্চিত এবং একটি কেন্দ্রে রাজনৈতিক কারণে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না, বলেন তিনি। তাঁর সাফ কথা, উপ-নির্বাচনে সুদীপ রায় বর্মণ ও আশীষ কুমার সাহা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ৯৫ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া, প্রদেশ কংগ্রেসও চাইছে তাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক। তবে, উপ-নির্বাচনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা কংগ্রেস হাইকমান্ড থেকে হবে, প্রদেশ কংগ্রেস প্রস্তাব পাঠাবে।
কিন্ত, উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঝক্কি আদৌ নিতে চাইবেন সুদীপ ও আশীষ, কিছুটা হলেই অনিশ্চিয়তা রয়েছে। কারণ, অতীতের ফলাফল পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, উপ-নির্বাচনের জয়ের মুকুট শাসকের ঝুলিতেই গেছে। প্রসঙ্গত, সুদীপ রায় বর্মণ ও আশীষ কুমার সাহা বিদ্রোহ ঘোষণা করে বিজেপি বিধায়কের পদ ছেড়েছেন। বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে পুরনো দল কংগ্রেসে ফিরে গেছেন।সাথে তাঁর বক্তব্য, বিজেপি বিরোধী জোট নিয়ে এখনই কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। নির্বাচন ঘোষণা হলে জোটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।