নিজস্ব প্রতিনিধি, তেলিয়ামুড়া, ৬ মার্চ৷৷ দিন-দুপুরে নিশিকুটুম্বের হানা৷ এবারের চুরির ঘটনা কোন গৃহস্থের বাড়ি কিংবা দোকানপাটে নয়, সরকারি বিদ্যুৎ পরিবাহী তারের চুরির ঘটনা এবার প্রকাশ্যে তেলিয়ামুড়া থানাধীন বালুছড়া এলাকায় রবিবার দুপুর নাগাদ৷ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, বেশ কয়েকদিন যাবত নিশিকুটুম্বের দল তেলিয়ামুড়া থানাধীন বালুছড়া এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে বিদ্যুৎ পরিবাহী তার গাড়ি যুগে কেটে নিয়ে যাচ্ছে দিন দুপুরে৷ কিন্তু ওই নিশিকুটুম্বের দল দীর্ঘ কয়েক দিন যাবত যখন বিদ্যুৎ পরিবাহী তার কেটে নিয়ে যাচ্ছে তখন গ্রামবাসীরা জিজ্ঞেস করলে তারা জানায় এই কাজের জৈনক ঠিকাদারের আদেশ মোতাবেক এই স্থান থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ কিন্তু এতে সন্দেহ জাগে গ্রামবাসীদের৷ পরবর্তীতে ঘটনার খবর জানানো হয় তেলিয়ামুড়া থানায়৷ তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আঁচ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় ওই নিশিকুটুম্বের দল৷ তখন স্থানীয় গ্রামবাসীরা বিদ্যুৎ পরিবাহী সেই টুকরো টুকরো করা তার গুলো একত্রে জড়ো করেন এবং তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশ বৈদ্যুতিক পরিবাহী তার কাটার মেশিন’’টি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে থানামুখী হয়৷এলাকাবাসী সূত্রে অভিযোগ, দীর্ঘ প্রায় দু-তিন দিন যাবত তার গুলো মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে বলে এখান থেকে কেটে টুকরো টুকরো করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করে তারা যখন জিজ্ঞেস করে তখন জানায় যে তারা গুলো মেয়াদোত্তীর্ণ তাই অন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷অপরদিকে মধ্য কৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক সদস্য মনোরঞ্জন মজুমদার অভিযোগ করে জানান, তার পাচার চক্রিদের জিজ্ঞেস করা হলে তারা জানায় ঠিকাদারের নির্দেশ মোতাবেক তারা এখান থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ তার গুলো নিয়ে যেতে এসেছি৷ কিন্তু তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ওই নিশিকুটুম্বের দল ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয়৷পরবর্তীতে ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় ২৯ কৃষ্ণপুর মন্ডলের মন্ডল সভাপতি নির্মল সরকার৷ তিনি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছেন, মাইগঙ্গা এবং নয়নপুর এলাকার একাংশ মানুষজন অর্থাৎ সুকুমার সহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা বিদ্যুৎ পরিবাহী রাস্তার পাশে পরে থাকা তার গুলিকে যখন টুকরো করছিলেন তখন তিনি জিজ্ঞেস করতেই তারা বলে সুমন নামক জনৈক বিদ্যুৎ দপ্তরে কর্মী বলে দাবি করা এক ব্যাক্তির কথা মতোই তারা এই তার গুলো কাটছেন৷ তাছাড়া তিনি আরো বলেন, বিদ্যুৎ দপ্তরের জনৈক দীপক ইঞ্জিনিয়ারকে তিনি ফোন যুগে জানতে চেয়েছেন যে প্রকৃতপক্ষে কি বিদ্যুৎ দপ্তরের আদেশ মোতাবেক এই বিদ্যুৎ পরিবাহী তার গুলো কেটে টুকরো টুকরো করা হচ্ছ? কিন্তু ওই দীপক ইঞ্জিনিয়ার জনিয়ে দেন যে এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না৷ তিনি বলেন আমি এই এলাকার একজন নাগরিক হিসেবে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা যা প্রয়োজন তা আমি নেব৷পরবর্তীতে চুরি কান্ডের মূল মাস্টারমাইন্ড তথা নয়নপুর এলাকার চুরা সুকুমার’’কে মন্ডল সভাপতি ফোন যুগে চুরির ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেই সে ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে জানায় ঘটনাটি যেন মন্ডল সভাপতি মিটমাট করে দেন৷এখন প্রশ্ণ থেকে যায়, যদি মন্ডল সভাপতি এবং চুরা সুকুমারের কথোপকথনের সময় সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরা যদি ওই স্থানে না পৌঁছাতো তবে প্রকৃতপক্ষেই কি ঘটনা ধামাচাপা দিতে মন্ডল সভাপতি? নাকি ঘটনার সঠিক সমাধান করতো৷কারণ প্রশ্ণ থেকে যায়, চুরা সুকুমারের সঙ্গে ফোন যুগে আলাপচারিতায় মন্ডল সভাপতি প্রথমেই বলেছেন যে, চুরি করার পূর্বে কেন অবগত করা হয়নি মন্ডল সভাপতি’’কে? তাহলে কি চুরির পূর্বে মন্ডল সভাপতি কে ঘটনাটি অবগত করা হলে লক্ষ টাকার বিনিময় রফাদফার মাধ্যমে অবৈধ চোরাকারবারির মাস্টারমাইন্ডরা দিব্যি আরাম-আয়েশে রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যেত? এখন স্বভাবতই মন্ডল সভাপতির ভূমিকা নিয়ে এলাকাবাসীদের মনে সন্দেহের ডানা বাঁধতে শুরু করে দিয়েছে৷এখন দেখার বিষয় তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশ বাবুরা প্রকৃতপক্ষে এই চুরি কাণ্ডের কূলকিনারা করতে পারে কিনা৷ নাকি আর পাঁচটা সাধারণ চুরির ঘটনার মতো তেলিয়ামুড়া থানার ফাইলে লাল ফিতায় বন্দি হয়ে থেকে যায় এই ঘটনাটিও৷ অপরদিকে এলাকাবাসী সূত্রে খবর, সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে আসার পর পরই চুরা কারবারিরা সংঘবদ্ধভাবে মিলিত হয় আরেক তাবড় শ্রেণীর শাসকদলীয় নেতার বাড়িতে শরণাপন্ন হয়েছেন ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে৷
2022-03-06