আগরতলা, ১১ ফেব্রুয়ারি (হি. স.) : ত্রিপুরায় বছর ঘুরতেই বিধানসভা নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়বে। তাই, রাজ্যে দলের শক্তি মূল্যায়নের তাগিদ অনুভব করেছে বিজেপি। সেই লক্ষ্যে বুথ স্তরে সমস্ত সহযোগীদের নিয়ে সংগঠিত বাহিনী গড়ে তুলে প্রতিটি বুথ পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে দলের শক্তির মূল্যায়ন করার পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। সাথে তাঁর দাওয়াই, ত্রিপুরা জুড়ে সমস্ত বুথে ভোটের হার বৃদ্ধির জন্য সুক্ষ ব্যবস্থাপনা চালু করুক বিজেপি। আজ পণ্ডিত দীন দয়াল উপাধ্যায়ের বলিদান দিবস উপলক্ষ্যে প্রদেশ বিজেপি মুখ্য কার্যালয়ে দলের পদাধিকারীদের নিয়ে সভায় এভাবেই বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার টনিক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। সাথে তিনি ঝগড়া ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন। আজ মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রদেশ সভাপতি সহ বিজেপির পদাধিকারীরা পণ্ডিত দীন দয়াল উপাধ্যায়ের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
এদিন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বিজেপি প্রদেশ সভাপতি ডঃ মানিক সাহাকে রাজ্য জুড়ে সমস্ত বুথে দলের ভোট শতাংশ বৃদ্ধির জন্য সুক্ষ ব্যবস্থাপনা চালু করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর পরামর্শ, বুথ স্তরের সহযোগীদের নিয়ে সংগঠিত বাহিনী গড়ে তোলা হোক। ওই বাহিনীকে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ এবং দলের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধিতে সুসজ্জিত করতে হবে। তাঁরা ত্রিপুরার ৩২১৪টি বুথ পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে দলের শক্তির মূল্যায়ন করবেন।
আজ ওই মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার ব্যাখ্যা করে শ্রী দেব বলেন, তাঁরা প্রতিটি বুথ পরিদর্শন এবং দলের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কিত প্রাসঙ্গিক তথ্য সংগ্রহ করবেন। সেই নির্দিষ্ট বুথে কত শতাংশ ভোটার সক্রিয় এবং অন্যদের অবস্থান কী সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার জন্য তাঁরা বুথ সভাপতির সাথে যোগাযোগ করবেন।
বিপ্লব কুমার দেবের মতে, যদি আমরা কোনও ব্যর্থতা ছাড়াই এই মহড়া চালাই তবে প্রদেশ সভাপতি সমস্ত বুথের একটি পরিষ্কার চিত্র পাবেন। কোথায় আমাদের আরও কাজ করতে হবে, কোথায় আমাদের কর্মী নিষ্ক্রিয় হচ্ছে এবং কেন এমন পরিস্থিতি, এই সমস্ত বিষয়গুলি আরও পরিষ্কার হবে। তাতে, ত্রিপুরায় দলের অবস্থান ধরে রাখতে আমরা সক্ষম হব, দাবি করেন তিনি।
বিপ্লবের মতে, দ্বিতীয় পর্বে ওই সহযোগীদের সমস্ত বুথে দলের জন্য ২০ শতাংশ ভোট বৃদ্ধির দায়িত্ব দেওয়া হবে। তাঁর কথায়, এখন ত্রিপুরায় বিজেপির জন্য উপযুক্ত পছন্দ কারা সেই বিচারে আমাদের এমন মানুষের সন্ধান করা উচিত যারা সামাজিকভাবে সকলের সাথে ভালভাবে যুক্ত। তিনি মনে করেন, দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য কাজ করেও কোনো মর্যাদা বা পদ পাননি, তাঁদের খোঁজে বের করা উচিত। শুধু তাই নয়, যারা অন্য রাজনৈতিক দলের সমর্থক কিন্তু বিজেপিতে যোগ দিতে ইচ্ছুক, তাঁদেরও অনুসরণ করতে হবে।
তাঁর দাবি, ওই সমস্ত কাজ সময়মতো সমাপ্ত করা সম্ভব হলে দলের অন্দরে ফাটল মেরামত করা যাবে। তাঁর আহবান, বিজেপির নতুন ও পুরনো সমস্ত কর্মী-সমর্থক নিজেদের মধ্যে ঝগড়া ভুলে ঐক্যবদ্ধ হোন। তাঁর মতে, পুরনো কিংবা নতুনের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। একজন ব্যক্তির সামর্থ্য তাকে দলীয় পদে উন্নীত করার যোগ্য করে তোলে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, জেলা পর্যায়ের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু হতে চলেছে, দল আমার প্রস্তাবিত পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করবে।