আগরতলা, ৮ ফেব্রুয়ারি (হি. স.) : কংগ্রেসে ফিরলেন সুদীপ রায় বর্মণ ও আশীষ কুমার সাহা। আজ সকালে রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সাথে দেখা করেই তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। এদিন, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এবং রাহুল গান্ধীর সাথে দেখা করেন বিজেপি বিধায়ক দীবা চন্দ্র রাঙ্খল এবং বিধায়ক বুর্বু ত্রিপুরা। তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে কংগ্রেসে যোগ দেননি। তবে, কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার জন্য পা বাড়িয়েই রেখেছেন। এদিন তাঁদের সাথে ছিলেন কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক ডাঃ অজয় কুমার, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা, প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক গোপাল রায়।
২০১৬ সালে কংগ্রেসের সাথে তীব্র মতানৈক্যের জেরে দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন সুদীপ রায় বর্মণ। সাথে আরও পাঁচ জন বিধায়কও কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে আশীষ কুমার সাহা এখনো সুদীপের সাথেই রয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে সিপিএমের সাথে জোট নিয়ে কংগ্রেসের সাথে মতানৈক্য তৈরী হয়েছিল তাঁদের।
কিন্তু, তৃণমূলের সাথেও তাঁদের মধুচন্দ্রিমা দীর্ঘ সময় টিকেনি। ২০১৭ সালে সুদীপ সহ ছয় বিধায়ক যোগ দেন বিজেপিতে। এরপর ত্রিপুরায় ক্ষমতার পরিবর্তন হলে সুদীপ বাবু বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকারের মন্ত্রিসভায় স্থান পান। কিন্তু, দলবিরোধী কাজের অভিযোগে ২০১৯ সালে তিনি মন্ত্রিত্ব হারান। এরপর থেকেই বিজেপির সাথে দূরত্ব বাড়তে থাকে সুদীপের। এরই পরিণতিতে গতকাল সুদীপ রায় বর্মণ এবং আশীষ কুমার সাহা বিধায়ক পদে পদত্যাগ পত্র ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষের হাতে তুলে দেন।
আজ সুদীপ রায় বর্মণ ও আশীষ কুমার সাহা কংগ্রেসে যোগ দিতেই দলের পর্যবেক্ষক ডাঃ অজয় কুমার দাবি করেন, আরও বিজেপি বিধায়ক কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। এছাড়া, সিপিএম ও তৃণমূল কংগ্রেস থেকেও অনেকে কংগ্রেসে যোগ দেবেন। কারণ, ২০২৩ সালে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস সরকার গঠন করবে ত্রিপুরায়।
এদিকে, সম্ভবত দীবা চন্দ্র রাঙ্খল এবং বুর্বু মোহন ত্রিপুরা এখনই আনুষ্ঠানিকভাবে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেবেন না। কারণ, তাঁরা দলত্যাগ বিরোধী আইন এড়াতে চাইছেন। তাঁদের মধ্যে বুরবু মোহন ত্রিপুরা প্রথমবার বিধায়ক হয়েছেন। তাই, এখনই বিধায়ক পদ খারিজ হলে সমস্ত সুযোগ সুবিধা থেকে বাদ যাবেন। কারণ, ত্রিপুরা বিধানসভার নতুন নিয়ম অনুযায়ী বিধায়কের ন্যুনতম সাড়ে চার বছর মেয়াদ সম্পূর্ণ করতে হবে। তবেই, বিধায়ক পদ হারালেও তাঁরা ভাতা পাবেন। এক্ষেত্রে বুর্বু মোহন ত্রিপুরার এখনো বিধায়ক পদে পাঁচ বছর পূর্ণ হয়নি।
এক্ষেত্রে দলত্যাগ না করে কংগ্রেসের দিকে পা বাড়িয়ে রাখা বিধায়করা বিজেপির জন্য সমস্যা বাড়াবেন, তা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। শুধু তাই নয়, আগামী ১৭ মার্চ থেকে শুরু হওয়া বিধানসভা অধিবেশনেও বিদ্রোহী বিধায়করা বিজেপিকে সংকটে ফেলবেন, এমনটাও অনুমান করা হচ্ছে।