আগরতলা, ৭ ফেব্রুয়ারি (হি. স.) : ত্রিপুরায় সরকার ফেলে দেওয়াই লক্ষ্য। পদত্যাগী বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণের ত্রিপুরা সরকার শীঘ্রই সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে মন্তব্যের জবাবে এভাবেই তোপ দাগেন সুশান্ত চৌধুরী। আজ বিজেপি কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, সুদীপ বাবুদের ওই প্রচেষ্টা বাস্তবে রূপ নেবে না। তাঁদের ওই ষড়যন্ত্র মানুষ মেনে নেবে না। এদিকে, প্রদেশ বিজেপি মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, ত্রিপুরায় সাংবিধানিক এবং সাংগঠনিক অচলাবস্থা তৈরীর কোন চেষ্টা সফল হবে না।
আজ ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে বিধায়ক পদে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুদীপ রায় বর্মণ দাবি করেন, ত্রিপুরা সরকার খুব শীঘ্রই সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে। এ-বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, ২৫ বছরের কালো দিন থেকে ত্রিপুরা মুক্তি পেয়েছে। ২০১৮ সালে ওই মুক্তির পর সুদীপ বাবু মন্ত্রিসভার সদস্য হয়েছিলেন। অথচ, এখন তাঁর মধ্যে সরকার ফেলে দেওয়ার মানসিকতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাঁর দাবি, সরকার টিকে থাকা নিয়ে কোন ঝুঁকি নেই। আপাতত, সরকার ফেলে দেওয়া সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, বিজেপি ছাড়ার আগে সুদীপ বাবু এখন শ্বাস নিতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন। অথচ, কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে একই কথা তিনি বলেছিলেন। সুশান্ত বাবু সুর চড়িয়ে বলেন, দিল্লিতে দোস্তি আর ত্রিপুরায় কুস্তি মানুষ দেখেছেন। কংগ্রেস ২৫ বছর যা পারেনি, বিজেপি ত্রিপুরাবাসীকে সেই মুক্তি দিয়েছে। অথচ, এখন ত্রিপুরায় সরকার ফেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। ত্রিপুরার মানুষ তা মেনে নেবেন না, দৃঢ়তার সাথে বলেন তিনি।
তাঁর দাবি, মানুষ সমস্ত ষড়যন্ত্রের জবাব দেবেন। তাঁর আবেদন, যে কোন মূল্যে ত্রিপুরাকে রক্ষা করতে হবে। কারণ, সিপিএম ইতিমধ্যেই গতিবিধি শুরু করেছে। তাঁরা মনে করছে ত্রিপুরায় সরকার পরিবর্তন সম্ভব হবে। কিন্ত, মানুষ ২৫ বছরের তিক্ত অভিজ্ঞতা সহজে ভুলে যেতে পারবেন না। সরকার ফেলে দেওয়ার প্রচেষ্টা বাস্তবে রূপ নেবে না, জোর গলায় বলেন তিনি।
এদিন নবেন্দু বলেন, সুদীপ রায় বর্মণ এবং আশীষ কুমার সাহার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দলবিরোধী কাজের অভিযোগ ইতিমধ্যেই এসেছে। তবুও, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁদের সংশোধনের সুযোগ দিয়েছে। অবশেষে তাঁরা দল এবং বিধায়ক পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর কথায়, ত্রিপুরায় সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে মানুষের স্বার্থে, ব্যক্তি বিশেষের জন্য নয়। মানুষের কাছেই সরকার দায়বদ্ধ। পার্টিও তাই মনে করে।
তিনি বলেন, ত্রিপুরার মানুষ বুঝেন না ভাবলে ভুল হবে। তাঁদের দলবদল সম্পর্কে সকলেই অবগত আছেন। তাঁর দাবি, এরাজ্যে ছায়াজোট ইতিপূর্বেও হয়েছে। বিরোধী দলনেতার বক্তব্যে তা আরও বেশি স্পষ্ট হয়েছে। তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, ত্রিপুরায় সাংবিধানিক এবং সাংগঠনিক অচলাবস্থা তৈরীর কোন চেষ্টা সফল হবে না।