গুয়াহাটি, ৫ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : কুন্দকুসুম, চন্দ্র ও তুষাররশির মতো শুভ্রবর্ণা, শ্বেতপদ্মাসনা, বীণাদণ্ড দ্বারা শোভিত, শুভ্র বস্ত্রবৃতা, ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর প্রভৃতি দেবগণ যাঁর বন্দনায় রত, সেই ভগবতা সরস্বতী আমাকে রক্ষা করুন। বীণা পুস্তকধারিণী, হরিপ্রিয়া, সর্বশুক্লা দেবী সরস্বতী আমার জিহ্বায় অধিষ্ঠিত হোন।
এদদিকে করোনাতঙ্ক, অন্যদিকে প্ৰতিকূল আবহাওয়া। আকাশের মুখ ভারী। গত দুদিন ধরে অসমের বিভিন্ন প্রান্তে বৃষ্টিপাত, সঙ্গে হাঁড়-কাঁপানো ঠাণ্ডা। তবে আজ মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমীর দিন সকাল থেকে গুয়াহাটির আকাশ অপেক্ষাকৃত পরিষ্কার থাকায় বইপত্রাদি নিয়ে পুণ্যলগ্নে বিদ্যাদায়িণী দেবী সরস্বতীর বন্দনায় মুখরিত হয়ে উঠেছেন ছাত্রছাত্রীরা। এদিন গুয়াহাটি মহানগর ছাড়াও গোটা অসমের বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এবং অসংখ্য গৃহস্থ বাড়িতে দেবীর পূজার্চনা করে আশীর্বাদ যাচ্ঞা করেছেন শিক্ষার্থী এবং ভক্তবৃন্দ।
মন্ত্রোচ্চারণ, শঙ্খধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। দেবী আরাধনার পাশাপাশি আরেক উচ্ছ্বলতায়ও ভেসে গিয়েছেন বিভিন্নস্তরের ছাত্রীকুল। গতকাল থেকে মহানগর ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাত হচ্ছিল। ফলে বালিকা-তরুণীরা হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন। এঁদের মধ্যে অধিকাংশই সংশ্লিষ্ট এলাকায় অবস্থিত বিউটি পার্লারে গিয়ে নিজের নিজের মুখমণ্ডলকে সাজিয়ে দৃশ্যনন্দন করে তুলতে ভিড় জমিয়েছিলেন তাঁরা। আজ সেজেগুজে নিজের নিজের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সংগীত-নৃত্য প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বিভবসিদ্ধিময়ী, নিঃশেষজ্যাড্যাপহা দেবী সরস্বতীর বোধনশঙ্খ বাজিয়েছেন তাঁরা।
গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়, কটন বিশ্ববিদ্যালয়, সন্দিকৈ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, বি বরুয়া কলেজ, আর্য কলেজ, প্রাগজ্যোতিষ কলেজ, দিশপুর কলেজ থেকে শুরু করে অসংখ্য সরকারি বেসরকারি স্কুল-কলেজের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি অরাজনৈতিক সংগঠন, ক্লাবেও দেবীর আরাধনা হয়েছে যোড়শোপচারে। কোথাও কোথাও অসমিয়া পরম্পরা অনুসারেও দেবীর পুজো করা হয়েছে।
এছাড়া বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের দফতরেও সর্বশুক্লা দেবী সরস্বতীর বন্দনা করেছেন সাংবাদিক ও অসাংবাদিকরা। বামুনি মৈদামের রেলওয়ে কলোনি, হেমচন্দ্ৰ বরুয়া বিদ্যাপীঠেও বাগদেবীর আরাধনা হয়েছে।