নিজস্ব প্রতিনিধি, উদয়পুর, ১৫ নভেম্বর৷৷ভারতের বীর স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মতো ইংরেজদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন ভগবান বিরসা মুণ্ডা৷ ইংরেজ শাসনাধীন ভারতে দমন পীড়নের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধভাবে অপ্রতিরোধ্য প্রতিবাদের বলিষ্ঠ নেত’ত্ব দিয়েছিলেন বিরসা মুণ্ডা৷ আজ উদয়পুর ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজিত জনজাতীয় গৌরব দিবসে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ ভগবান বিরসা মুণ্ডার জন্মজয়ন্তীকে সামনে রেখে ভারতীয় ইতিহাস এবং সংস্ক’তিতে জনজাতিদের অবদানকে সম্মান জানিয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ অনুষ্ঠানের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ ভগবান বিরসা মুণ্ডার প্রতিক’তিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন৷ এরপর জনজাতিদের ঐতিহ্যবাহী হজাগিরি নৃত্য সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পরিবেশিত হয়৷
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে এদেশের জনজাতিদের ভূমিকা চিরমরণীয় হয়ে আছে৷ ইংরেজ শাসিত পরাধীন ভারতবর্ষে দেশপ্রেমকে আত্মস্থ করে ইংরেজদের বিভিন্ন দমন পীড়ন মূলক নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন ভগবান বিরসা মুণ্ডা৷ জাতীয়তাবোধ ও জনমত গঠনের মাধ্যম মানুষকে সংঘবদ্ধ করার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা ছিলো তাঁর৷ জমিদারি শোষণের বিরুদ্ধেও তিনি গর্জে উঠেছিলেন ও প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন৷ ইংরেজ শাসিত ভারতে খাদ্যাভাবের সময়ে বিশেষ অবদান রেখেছিলেন তিনি৷ ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে জনজাতিদের অবদান প্রচারের ক্ষেত্রে অনেকাংশেই উপেক্ষিত ছিলো৷ স্বাধীনোত্তর ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর এই ক্ষেত্রে আন্তরিকতার ঘাটতি ছিলো৷ তবে ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জনজাতীয় গৌরব দিবস উদযাপনের মাধ্যমে জনজাতিদের অবদানের যোগ্য সম্মাননা প্রদানের দেশব্যাপী প্রয়াস নিয়েছেন৷ জনজাতিদের গৌরবময় ইতিহাস সবার সামনে উন্মোচনের লক্ষ্যে এই উদ্যোগ৷ প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে এই উপেক্ষিত ইতিহাস- নেতাজী সুুভাষচন্দ্র বসুু, গান্ধীজী সহ বিভিন্ন স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মতো ভগবান বিরসা মুণ্ডার জন্মদিনটিকে জনজাতীয় গৌরব দিবস হিসেবে সরকারিভাবে দেশব্যাপী উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ইংরেজদের দমন পীড়ন নীতির সামনে কখনোই নতি স্বীকার করেননি বিরসা মুণ্ডা৷ বিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে মানুষকে সংঘবদ্ধ করার জন্য বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি৷ মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্য বাহাদুরের মতো প্রতি ঘরে ঘরে ভগবান বিরসা মুণ্ডার ছবি রাখার জন্য সবার প্রতি আহ্বান করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ অনুষ্ঠান শেষে ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির দর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক বিপ্লব কুমার ঘোষ, ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান টিংকু রায়, ব সংগ্রঙ্মা-র সহ সভাপতি বীরেন্দ্র রিয়াং, সমাজ অধিপতি বিদ্যাজয় রিয়াং রায় প্রমুখ৷