নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৩ নভেম্বর।। স্ত্রী ও সন্তানের সামাজিক স্বীকৃতি ফিরে পাওয়ার দাবিতে মানুষের এবং আইনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক মা। ঘটনা উত্তর ত্রিপুরা জেলার ধর্মনগরের রাজবাড়ী দুর্গাপুর এলাকায়। কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ায় নির্মম পরিণতি । অসহায় এক মহিলা দোয়ারে দোয়ারে ঘুরছে নায্য বিচারের জন্য। কন্যা সন্তানের সুরক্ষার জন্যে সরকারের পক্ষ থেকে যতই প্রকল্প চালু করা হোক না কেন, বাস্তবে সমাজের কিছু নিকৃষ্ট মানুষের জন্য কন্যা সন্তান আজও অবহেলিত। কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ায় খেসারত দিতে হচ্ছে মা’কেও। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, রেহানা বেগমের সাথে ২০১৮ সালে ধর্মীয় রীতি নিতি মেনে বিবাহ হয় ধর্মনগর রাজবাড়ি,দূর্গাপুর এলাকার রোশন মিয়ার। বিয়েতে পন বাবদ তিন লক্ষ টাকা , সর্ণালঙ্কার এবং আসবাবপত্র দেওয়া হয় রোসন মিয়াকে। বিয়ের কয়েকমাস যেতে না যেতেইশুরু হয়ে যায় রেহানার উপর নির্যাতন। এমনকি ,রেহানা যখন গর্ভবতী তখন বাচ্চাটি নষ্ট করে দেওয়ার জন্যেও চাপ সৃষ্টি করে শশুর, শাশুরি ,ননদ বলে অভিযোগ রেহানার।
কিন্তু সব কিছু সহ্য করে যায় রেহেনা। সন্তানের জন্মের পর পরিস্থিতি আরও অসহনীয় হয়ে উঠে । শ্বশুর , শাশুড়ি ,স্বামী সকলেই প্রশ্ন তুলে কেন কন্যা সন্তান জন্ম দিল রেহানা? শুরু হয় রেহানার উপর শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন । এক প্রকার খাওয়া দাওয়াও বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। দিনের পর দিন নির্যাতনের আকার তীব্র হতে শুরু করে। সহ্য না করতে পেরে রেহানা তার কন্যা সন্তানকে নিয়ে একদিন পালিয়ে এসে ধর্মনগর মহিলা থানার দারস্থ হয়। পরবর্তীতে থনায় এবং রাজ্য মহিলা কমিশনে বিস্তারিত জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। রেহানা বেগম জানিয়েছে তার স্বামী রোশন মিয়ার এক মহিলার সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে ।রোশন চেয়েছিল রেহানা তাকে ছেড়ে দিলে রোশন সেই মহিলার সাথে নির্দিধায় থাকতে পারবে ।
এখন অসহায় হয়ে রেহানা বেগম তার কন্যা সন্তানটিকে নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে নায্য বিচারের জন্যে। কন্যা সন্তানটিকে বাঁচানো এবং স্ত্রী’র অধিকার ফিরে পেতেএকবার প্রশাসন,একবার সামাজিক সংস্থা,এবার সাংবাদিকদের দারস্থ রেহানা। প্রশ্ন হল এই লড়াই কি চালিয়ে যেতে পারবে রেহানা ?বেঁচে থাকার জন্য, তার কন্যা সন্তানকে বাচানোর জন্য। পারবে কি রেহানা? নাকি চলতে থাকা সমাজের গ্রাসে আরও কত নির্যাতিদের মত বিলুপ্ত হয়ে যাবে।