নাগপুর, ৬ নভেম্বর (হি.স.): যোগী অরবিন্দের জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত দু’টি ছবি নির্মাণ করেছেন পুদুচেরিতে অবস্থিত যোগী অরবিন্দ আশ্রমে ধ্যান ও সাধনারত কুশ সেন। প্রথম ছবিটি ইংরেজি ভাষায় নির্মিত, যা অরবিন্দের আধ্যাত্মিক জীবনের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। দ্বিতীয় চলচ্চিত্রটি বাংলা ও হিন্দি ভাষায় নির্মিত হয়েছে, যা অরবিন্দের বিপ্লবী জীবনের ওপর আলোকপাত করেছে। কুশ সেন বলেছিলেন, যোগী অরবিন্দ ছিলেন দেশ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর। ছবির মাধ্যমে সেই অবদানকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চান।
এ বিষয়ে নিজের অভিজ্ঞতা ও তথ্য তুলে ধরে কুশ সেন বলেছেন, যোগী অরবিন্দের ওপর অনেকেই বই লিখেছেন। কিন্তু অধিকাংশই অরবিন্দের ভাবনাকে অবোধগম্যভাবে উপস্থাপন করেছেন। কুশ সেন বলেছেন, অরবিন্দ ঘোষকে বোঝা এতটা জটিল নয়, সেভাবে তাঁকে উপস্থাপন করা হয়েছে। ফলস্বরূপ, যোগী অরবিন্দের আধ্যাত্মিক জীবনের উপর আলোকপাত করার জন্য সেন ইংরেজি ভাষায় “দ্য ইনার ওয়ার্ল্ড অফ অরবিন্দ আশ্রম” নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। ছবিটি এখনও পর্যন্ত ৫টি পুরস্কার পেয়েছে। কিন্তু কুশ সেনের আক্ষেপ হল, ওই ছবিটি মুক্তি দিতে পরেননি। কুশ সেনের মতে, যোগী অরবিন্দ জীবনের শুরুতে একজন বিপ্লবী ছিলেন। বিগত ২৫ বছর ধরে অরবিন্দের বৈপ্লবিক দিকটি বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চলচ্চিত্র নির্মাণের স্বপ্ন দেখছিলেন কুশ সেন। এই স্বপ্ন সত্যি হল ‘বন্দে মা তরম’ ছবির মাধ্যমে।
কুশ সেন বলেছেন, অর্থের অভাবে অরবিন্দের বৈপ্লবিক কাজের ওপর ছবি বানানো সম্ভব হয়নি। কিন্তু বিমুদ্রাকরণে তাঁর বন্ধু স্বল্প পরিমাণ অর্থ প্রদান করেছিলেন। এর ফলে উৎসাহ পেয়েছেন কুশ সেন। বন্ধুর কাছ থেকে ঋণ এবং অন্যান্য উৎস থেকে ঋণ নিয়ে কুশ সেন ছবিটি নির্মাণে মনোনিবেশ করেন। দেশে করোনা-লকডাউন ঘোষণার ঠিক আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল কুশ সেনের ছবি। কিন্তু সহযোগিতার অভাবে এখনও পর্যন্ত মুক্তি দেওয়া সম্ভব হয়নি। এই ছবির জন্য কুশ সেন এখন সাহায্য চাইছেন। ফলে তিনি সাহায্যের জন্য সারাদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মূলত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের চরিত্রের উপর ইতিহাস ও ছবিতে মনোনিবেশ করেন কুশ সেন। কুশ সেন বলেছেন, এই ছবির মাধ্যমে অরবিন্দের মহান বিপ্লবী রূপকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরাই একমাত্র লক্ষ্য।
সত্য সামনে আসা উচিত : সেন
নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে কুশ সেন বলেছেন, তৎকালীন বরিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “ব্রিটিশ শাসন এতই ভালো যে, হিন্দুস্তানে তা চিরকাল স্থায়ী হওয়া উচিত।” একথা বলার পরেও সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কংগ্রেস দারুণ! কিন্তু ক্ষুদিরাম বসুর মতো বিপ্লবী সৃষ্টিকারী অরবিন্দের চরিত্র সম্পর্কে দেশ জানে না। যেখানে আইসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর, কুশ সেন ঘোড়ায় চড়ার পরীক্ষা দিতে অস্বীকার করেন এবং দেশের সেবাকে বেছে নেন। সেন জানান, ‘বন্দে মা তরম’ ছবিটি নির্মাণের জন্য তিনি বহু বছর ধরে গবেষণা করেছেন। ভারত উদযাপন করছে স্বাধীনতার অমৃত উৎসব। ফলে ছবিটি মুক্তির এটাই উপযুক্ত সময়। কুশ সেনের মতে, চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি শুধু ইতিহাস ও সত্যকে দেশ ও বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চান।