621 candidates are valid : নিগম, পুর ও নগর নির্বাচনে ৩৩৪ আসনে ৮২১ প্রার্থী বৈধ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৫ নভেম্বর৷৷ রাজ্যে পুর ও নগর সংস্থার নির্বাচনে মনোনয়নপত্র স্ক্রুটিনির কাজ সমাপ্ত হয়েছে৷ তাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মোট আটটি মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে৷ ফলে, ৩৩৪টি আসনে ৮২১টি মনোনয়নপত্র বৈধ বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে৷
নির্বাচন কমিশনের দেয়া তথ্য অনুসারে বিজেপির ২টি, সিপিএমের ২টি, তৃণমূল কংগ্রেসের ১টি, কংগ্রেসের ১টি এবং অন্যান্য ২টি মনোনয়ন বাতিল হয়েছে৷ তাতে বিজেপি ৩৩৪টি, সিপিএমের ২১২টি, তৃণমূল কংগ্রেসের ১২৪টি, কংগ্রেসের ১০০টি, নির্দলীয় ৩২টি, সিপিআই ৬টি, ফরোয়ার্ড ব্লক ৫টি, আরএসপি ২টি এবং অন্যান্য ৬টি মনোনয়ন বৈধ বলে কমিশন জানিয়েছে৷ আগামী ৮ নভেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের অন্তিম তারিখ৷
রাজ্যে পুর ও নগর সংস্থার নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র জমা নেওয়ার পর্ব সমাপ্ত হয়েছে গত তিন নভেম্বর৷ বিজেপি চারটি পুর পরিষদ এবং একটি নগর পঞ্চায়েতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হতে চলেছে৷ এদিকে, বুধবার শেষ বেলায় তৃণমূল কংগ্রেস আগরতলা পুর নিগম নির্বাচনে ৫১টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে৷ অবশ্য প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে একপ্রকার নাটকও মঞ্চস্থ হয়েছে৷ কারণ, প্রথমে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করার পর তৃণমূল পুনরায় সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করেছে৷ তবে গত রবিবার আগরতলায় অনুষ্ঠিত জনসভায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঙ্কার কার্যত চুপসে গিয়েছে৷ কারণ, পুর ও নগর নির্বাচনে ত্রিপুরায় ৩৩৪টি আসনে তৃণমূল সাকুল্যে ১২৫ আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে৷ অবশ্য বিজেপি ছাড়া অন্য কোনও দলই সবকয়টি আসনে প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়েছে৷


আগামী ২৫ নভেম্বর ত্রিপুরায় পুর ও নগর সংস্থার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ ২৮ নভেম্বর ঘোষণা হবে ভোটের ফলাফল৷ ত্রিপুরায় আগরতলা পুর নিগম ছাড়া ৬টি নগর পঞ্চায়েত এবং ১৩টি পুর পরিষদ রয়েছে৷ এবারের ভোটে নির্দল ও অন্যান্য প্রার্থী সহ ১৪টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন৷
নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হতেই প্রার্থী তালিকা প্রকাশে সবার আগে চমক দিয়েছে বামফ্রন্ট৷ কিন্তু সিংহ গর্জন শুরু করেও মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার অন্তিম সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর দেখা গেল, ত্রিপুরায় প্রধান বিরোধী বামেরা মাত্র ২২৭টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী খুঁজে পেয়েছে৷ শতবর্ষ প্রাচীন জাতীয় দল কংগ্রেসের অবস্থাও একই৷ তাঁরা টেনেটুনে ১০১ আসনের মধ্যে সীমিত রয়েছে৷ এদিক দিয়ে কিছুটা এগিয়ে গেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ সবকয়টি আসনে প্রার্থী দেবে বলে গলা ফাটালেও আখেরে মাত্র ১২৫টি আসনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দিতে সক্ষম হয়েছে৷


বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অবস্থা দেখে স্পষ্ট, শুধু মাত্র আগরতলা পুর নিগম নির্বাচনেই তাঁরা পূর্ণ উদ্যমে ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হচ্ছে৷ এছাড়া নগর পঞ্চায়েত এবং পুর পরিষদ নির্বাচনে তাঁরা তেমন প্রভাব দেখাতে পারেনি৷ বিরোধীরা অবশ্য ইতিমধ্যেই শাসক দলের রক্তচক্ষুর অভিযোগ এনে সুর চড়িয়েছেন৷ সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী ত্রিপুরা সরকারের চার মন্ত্রীর দিকে সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন৷ রানিরবাজার, মোহনপুর এবং উদয়পুর পুর পরিষদ এবং কমলপুর নগর পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য ওই এলাকার চার বিধায়ক তথা ত্রিপুরা মন্ত্রিসভার চার সদস্য সুশান্ত চৌধুরী, রতনলাল নাথ, প্রণজিত সিংহরায় এবং মনোজকান্তি দেবকে নিশানা করেছেন তাঁরা৷
তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, দলীয় প্রার্থীদের বিভিন্ন স্থানে শাসক দলের সমর্থিত দুষৃকতী মনোনয়ন জমা দিতে দেয়নি৷ রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের বাইরে ঘেরাও করে রেখেছিল তাঁরা৷ তাই তৃণমূল প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি৷ একই অভিযোগ এনে তিপ্রা মথার সমর্থকরা রাস্তা অবরোধ করেছেন৷ তবে, বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ ফুতকারে উড়িয়ে দিয়ে বিজেপির দাবি, প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না বিরোধীরা৷ তাঁর দায় শাসক দলের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *