নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১ নভেম্বর৷৷ রোজ ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুন্ডু সহ তিন অধিকর্তা এবং সংস্থার বিরুদ্ধে আদালতে সাপ্লিমেন্টারি চার্জসিট জমা দিয়েছে সিবিআই৷ চার্জসিটে সিবিআই ৪৬৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনেছে৷ ইতিপূর্বে ত্রিপুরা পুলিশ ২০১৮ সালে চার্জসিট জমা দিয়েছিল৷
এক প্রেস বিবৃতিতে সিবিআই জানিয়েছে, ২০১৯ সালের ১৮ অক্টোবর রোজ ভ্যালি চিটফান্ড কান্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করেছিল৷ তদন্তে সিবিআই জানতে পেরেছে, মানুষের অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যেই অভিযুক্তরা সংস্থা গঠন করেছিলেন৷ তাঁদের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, বিভিন্ন স্কিম এনে মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে এবং সেই অর্থ লোকসানে চলছে এমন সংস্থায় বিনিয়োগ করেছে৷ তাঁরা একাধিক ব্যাঙ্ক একাউন্ট খুলেছে এবং ব্যাক্তিগতি স্বার্থে ওই অর্থের নয়ছয় করেছে৷
তাঁদের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, অধিক মুনাফার প্রচার করে মানুষকে প্রলুব্ধ করতেন৷ এক্ষেত্রে বিরাট সংখ্যায় এজেন্ট নিযুক্তির মাধ্যমে মানুষ কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করেছেন৷ অবশ্য বিনিময়ে ওই এজেন্টদের প্রচুর টাকা কমিশন দিয়েছেন৷ সিবিআই জানিয়েছে, আমানতকারীদের ৪৬৪ কোটি ৮০ লক্ষ ৬ হাজার ৩৩১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে৷ অভিযোগের তদন্ত করে সিবিআই আজ আগরতলায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সাপ্লিমেন্টারি চার্জসিট জমা দিয়েছে৷
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে রোজভ্যালী বিরাট সাম্রাজ্য গড়ে তুসেছিল৷ বিভিন্ন সময়ে মনমুগ্দকর লোভনীয় প্রকল্প সামনে এনে ত্রিপুরার লক্ষ লক্ষ মানুষের আমানত সংগ্রহ করে রাজ্য থেকে পালিয়ে যায় রোজভ্যালী৷ জনগণের কষ্টার্জিত আমানত ফেরত পাওয়ার জন্য আমানতকারীরা হন্যে হয়ে ছুটেছেন৷ প্রশাসনের দুয়ারে গিয়েছে৷ তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের এক মহিলা মন্ত্রীকেও সিবিআই তদন্তে জেরার মুখে পড়তে হয়েছিল৷ সমালোচনায় বিদ্দ হয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার থেকে শুরু করে সিপিএমের অনেক নেতাকেই৷ সিবিআই তদন্তের দিকে তাকিয়ে আছেন গোটা রাজ্যের লক্ষ লক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীরা৷
উল্লেখ করা যায়, চিটফান্ড রোজভ্যালী ছাড়াও রাজ্যে আরও বহু চিটফান্ড কোটি কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করে রাজ্য থেকে পালিয়ে গিয়েছে৷ আজও তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে৷ রাজ্যের অর্থনীতির মেরদন্ড ভেঙ্গে দিয়ে গিয়েছে ওইসব চিটফান্ডগুলি৷ সেই ক্ষতির ধাক্কা এখনও রাজ্যের আমানতকারীরা কাটিয়ে উঠতে পারছে না৷