Demand and appreciation of tea : রাজ্যে উৎপাদিত চায়ের চাহিদা এবং কদর রয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৯ আগস্ট।। রাজ্যে উৎপাদিত চায়ের চাহিদা এবং কদর রয়েছে। তাই প্রয়োজন আরও বেশি পরিমাণে চায়ের উৎপাদন বাড়ানো। সরকারি বেসরকারি মালিকানায় পরিচালিত চা বাগানগুলির পাশাপাশি ক্ষুদ্র চা চাষীদেরও উৎপাদন বৃদ্ধি করতে আরও বেশি উৎসাহিত করতে হবে। আজ সচিবালয়ের ২নং সভাকক্ষে ত্রিপুরা টি প্রমোশন বোডের্র কাজকর্মের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে এ কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। তিনি বলেন, সরকার পরিচালিত চা বাগানগুলি যেমন লাভজনক অবস্থার দিকে অগ্রসর হচ্ছে তেমনি বেসরকারি মালিকানায় পরিচালিত যেসমস্ত চা বাগান ঘাটতিতে বা উৎপাদন ক্ষমতা কম রয়েছে, তাদের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি সহ ঐ সমস্ত বাগানগুলিকে লাভজনক অবস্থায় নিয়ে যেতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা প্রয়োজন। এজন্য বেসরকারি চা বাগান মালিকদের সাথে বাগানের পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পর্যালোচনা সভায় চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করে কাজ করার উপর মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেছেন। পাশপাশি তিনি বর্তমানে বন্ধ হয়ে থাকা চা বাগানগুলিকে সমবায় গঠনের মাধ্যমে সক্রিয় করে তোলার কথাও উল্লেখ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরায় চায়ের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সরকারি চা বাগানের পাশাপাশি বেসরকারি মালিকানায় পরিচালিত চা বাগানগুলির চা শ্রমিকদের আরও দক্ষ করে তুলতে হবে। এরজন্য তিনি তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার উপর জোর দেন। এরফলে শ্রমিকরা এই চা শিল্পে আরো দক্ষ হয়ে উঠবে বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন।

পর্যালোচনা সভায় শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব প্রশান্ত কুমার গোয়েল সচিত্র প্রতিবেদনের মাধ্যমে ত্রিপুরা টি প্রমোশন বোর্ডের বিভিন্ন কর্মসূচির বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, চা শিল্প ক্ষেত্রের কাজের মূল্যায়ন সহ বেসরকারি পরিচালিত চা বাগানগুলির সাথে সমন্বয় রাখাতে ২০০৯ সালে ত্রিপুরা টি প্রমোশন বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। সভায় শিল্প বাণিজ্য দপ্তরের অধিকর্তা টি কে চাকমা ত্রিপুরা টি প্রমোশন বোর্ডের বিভিন্ন কর্মসূচির বিশদ তথ্য তুলে ধরে বলেন, রাজ্যে রাবার শিল্পের পর চা শিল্প দ্বিতীয় সংগঠিত শিল্প। সমগ্র দেশে চা উৎপাদনে ত্রিপুরা ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। বর্তমানে রাজ্যে ৫৪টি বড় চা বাগান রয়েছে। এই চা বাগানগুলি যথাক্রমে ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগম, সমবায় এবং বেসরকারি মালিকানা দ্বারা পরিচালিত। এই বাগানগুলি থেকে বড় মাত্রায় সবুজ চা পাতা উৎপাদিত হচ্ছে। বাগানগুলিতে কর্মরত শ্রমিক রয়েছেন ৯০৪৮ জন। রাজ্যে ২৮৬৬ জন ক্ষুদ্র চা চাষী রয়েছে বলে তিনি জানান।

সভায় শিল্প ও বানিজ্য দপ্তরের অধিকর্তা আরও বলেন, রাজ্যে ২৪টি চা প্রক্রিয়াকরণ কারখানা রয়েছে। এরমধ্যে ৩টি সরকার পরিচালিত, ৫টি সমবায়, এবং ১৬টি বেসরকারি। রাজ্যে ৩টি চা কারখানা থেকে ‘গ্রীন টি’ উৎপাদিত হচ্ছে। তিনি জানান, ২০১৮ সালে ত্রিপুরা চায়ের লোগোর সূচনা হয়। ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমের প্যাকেটজাত চা-পাতার নামকরণ হয় ‘ত্রিপুরেশ্বরী চা’ যা গণবন্টন ব্যবস্থায় বর্তমানে রাজ্যের রেশনশপগুলির মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছে। ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগম কৈলাসহরের পঞ্চমনগরে একটি ছোট গ্রীন টি কারখানা স্থাপন করেছে। তাছাড়া দুর্গাবাড়িতে ‘টি মিউজিয়াম’ তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। টি ট্যুরিজমের প্রসারে এবং পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য চা বাগানগুলিতে উন্নতমানের পর্যটন স্থল গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পর্যালোচনা সভায় শিল্প ও বানিজ্য দপ্তরের অধিকর্তা গত সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা তুলে ধরেন। চা বাগানগুলির পুনর্জীবিকরণ, পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, টি ট্যুরিজম উন্নয়ন, চা- কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, পাইপ লাইন গ্যাসের ব্যবস্থা, চা শ্রমিক সহ ক্ষুদ্র চা চাষীদের জীবনমান উন্নয়নে একাধিক পদক্ষেপের বিষয় সভার আলোচনায় প্রাধান্য পায়। সভায় ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান সন্তোষ সাহা, গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সচিব সৌম্যা গুপ্তা, রাজস্ব দপ্তরের সচিব তনুশ্রী দেববর্মা সহ ত্রিপুরা টি প্রমোশন বোর্ডের সদস্যগণ প্রমুখ উপস্থিত থেকে আলোচনায় অংশ নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *