নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ জুলাই।। আইপিএফটি বিধায়ক বৃষকেতু দেব্বর্মার ঘাড়ে ত্রিপুরা বিধানসভার সদস্যপদ বাতিলের খড়গ ঝুলছে। এক্ষেত্রে বিধায়ক পদ বাতিল করা হলে আর কখনই নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না তিনি। ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ এ-বিষয়ে বৃষকেতু দেব্বর্মাকে নোটিশ পাঠিয়েছেন। এদিকে, আজ অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বৃষকেতু দেব্বর্মা। এই ঘটনায় তিপ্রা মথার চেয়ারম্যান তথা এডিসির নতুন কার্যকরী সদস্য প্রদ্যুত দেব্বর্মা অধ্যক্ষকে নিশানা করে বৃষকেতুর অসুস্থতার জন্য দায়ী করেছেন। অথচ, রাজনৈতিক দুরভিসন্ধির অভাব এবং বিধানসভার নিয়ম সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে বড়সড় মাশুল গুনতে হবে, তা উপলব্ধি করতে পারছেন না তিনি।
গত ২৯ জুন লোক মারফত ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছিলেন বিধায়ক বৃষকেতু দেব্বর্মা। নিয়ম মেনে ওই পদত্যাগ পত্র পাঠানো হয়নি তাই অধ্যক্ষ তা গ্রহণ করেননি। বিধানসভার নিয়ম অনুযায়ী, পদত্যাগ পত্রে তারিখ, সময় ও স্থান সঠিকভাবে উল্লেখ থাকা বাঞ্চনীয়। তাছাড়া, পদত্যাগ পত্রের সত্যতা এবং স্বেচ্ছায় ওই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, সমস্ত বিষয়ে আশ্বস্থ হলে তবেই অধ্যক্ষ পদত্যাগ গ্রহণ করবেন। কিন্ত, প্রারম্ভিক ভুল হিসেবে বিধায়ক বৃষকেতু দেব্বর্মা সশরীরে গিয়ে প্রদত্যাগ পত্র জমা দেননি।
এদিকে, গত ৩ জুলাই আইপিএফটির সভাপতি এনসি দেব্বর্মা অধ্যক্ষকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেন, বিধায়ক বৃষকেতু দেব্বর্মা দলবিরোধী কাজ করেছেন। তাই, তাঁর বিধায়ক পদ স্থায়ীভাবে বাতিল করা হোক। এই খবর সম্বিত ফেরে বৃষকেতুর। এরপর তিনি অধ্যক্ষের কাছে ছুটে যান এবং সশরীরে পদত্যাগ পত্র জমা দেন। কিন্ত, গত ২৯ জুন দেওয়া পদত্যাগ পত্র অনুসারে তাঁর আবেদন গ্রহণ করার অনুরোধ জানান তিনি।
বিধানসভার নিয়ম অনুযায়ী, টা কোনভাবেই সম্ভব নয়। সশরীরে হাজির হয়ে পদত্যাগ পত্র জমা তারিখটি বিবেচিত হবে। পূর্বের তারিখে আবেদন বিবেচনার বিধান নেই। কিন্ত, মাঝে তাঁর বিধায়ক স্থায়ীভাবে বাতিলের আর্জি জমা পড়েছে বিধানসভায়। ফলে, অধ্যক্ষ বৃষকেতু দেব্বর্মাকে নোটিশ দিয়ে জানতে চেয়েছেন বিধায়ক পদ স্থায়ী ভাবে বাতিল নিয়ে বক্তব্য পেশ করুন।
ত্রিপুরা বিধানসভার নিয়ম অনুযায়ী, সম্ভবত অধ্যক্ষের ওই পদক্ষেপে আদালতও হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। ফলে, বিধায়ক পদ বাঁচানো বৃষকেতু দেব্বর্মার মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, অধ্যক্ষ তাঁর বক্তব্যে সন্তষ্ট না হয়ে বিধায়ক পদ স্থায়ীভাবে বাতিল করে দিলে আর কখনই বৃষকেতু দেব্বর্মা নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না। মোদ্দা বিষয় হল, অতি চালাকি করতে গিয়ে বৃষকেতু আইনি প্যাচে পড়েছেন। কারণ, বিধায়ক পদ বাতিল হলে তিনি আদালতেও ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন না। কারণ, এক্ষেত্রে সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার শুধুমাত্র অধ্যক্ষের রয়েছে।