আগরতলা, ১০ জুলাই (হি. স.) : টিকাকরণের তথ্যে গড়মিল রয়েছে, প্রকাশিত সংবাদের উদ্বৃতি দিয়ে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ত্রিপুরা মিশন অধিকর্তার জবাব চেয়েছে উচ্চ আদালত। কোভিড-১৯ মহামারী সংক্রান্ত সুয়োমুটো মামলায় উচ্চ আদালত টিকাকরণের তথ্য চেয়ে নোটিশ দিয়েছে। আগামী ১৯ জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য করেছে আদালত। উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি এ এ কুরেশী এবং বিচারপতি শুভাশীষ তলাপাত্রের ডিভিশন বেঞ্চের মতে, টিকাকরণে যোগ্য ব্যক্তির ৮০ শতাংশ এবং ৪৫ উর্দ্ধদের ৯৮ শতাংশ(প্রথম ডোজ) টিকা দেওয়া হয়েছে বলে ত্রিপুরা সরকারের তথ্য সঠিক নয়। তাই, আদালত এ-বিষয়ে স্পষ্টীকরণ চেয়েছে। ত্রিপুরা সরকারকে বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
আদালত লক্ষ্য করেছে, গত ২৫ জুন স্থানীয় দুইটি সংবাদপত্রে মিশন অধিকর্তা ডা: সিদ্ধার্থ শিব জৈসওয়ালের উদ্বৃতি দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে, ত্রিপুরায় টিকাকরণে যোগ্য ৮০ শতাংশ এবং ৪৫ উর্দ্ধদের ৯৮ শতাংশের (প্রথম ডোজ) টিকা দেওয়া হয়েছে। এ-বিষয়ে ডিভিশন বেঞ্চের বক্তব্য, কোনভাবেই টিকাকরণে দেওয়া তথ্য সঠিক বলে মনে হচ্ছে না। আদালতের বক্তব্য, সরকারের হলফনামা অনুযায়ী ১৮ ঊর্দ্ধ যোগ্য ব্যক্তিদের জনসংখ্যা ত্রিপুরায় প্রায় ২৬.৮৬ লক্ষ। তেমনি ৪৫ উর্দ্ধদের জনসংখ্যা প্রায় ১২.৩৬ লক্ষ। মিশন অধিকর্তার দাবি অনুযায়ী, ২৪,২৬,৮০৩ জনের টিকাকরণ হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫,৬৬,৪৫৮ জন দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন। আদতে ১৮,৬০,৩৪৫ জন টিকা পেয়েছেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, এই জনস্বার্থ আবেদনের শুরু থেকেই আমরা জনসাধারণের তথ্য বিতরণের নির্ভরযোগ্যতার উপর প্রচুর চাপ দিয়ে চলেছি। কারণ আমরা বিশ্বাস করি যখন রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার সরবরাহকৃত তথ্যে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা এবং নির্ভুলতা পাওয়া যায় কেবল তখনই জনগণ সঠিক চিত্রটি বুঝতে পারবেন এবং তথ্য বিতরণ পদ্ধতিতে বিশ্বাস রাখবেন।
ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ত্রিপুরায় জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন অধিকর্তা হিসাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা যখন এমন তথ্য সরবরাহ করেছেন যা ভুল ছিল, তখন আমরা তাকে সংবাদমাধ্যমের কাছে একটি সংশোধন বিবৃতি দেওয়ার প্রত্যাশা করেছিলাম।
আদালত আরও বলেছে, প্রকাশিত সংবাদ দেখে মিশন অধিকর্তার সরকারিভাবে বিবৃতি দেওয়া উচিত ছিল যে প্রদত্ত তথ্যে কিছু ত্রুটি রয়েছে অথবা কোথাও ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। আমরা আশা করি, কালবিলম্ব দেরী না করে তিনি সেই উদ্যোগ নেবেন। ডিভিশন বেঞ্চ অ্যাডভোকেট জেনারেলকে এ-বিষয়ে তাঁর সাথে যোগাযোগ স্থাপনে অনুরোধ করেছেন। আদালত অ্যাডভোকেট জেনারেলকে আরো বলেছে, মৃত্যুর সংক্রান্ত বিশ্লেষণমূলক কোন তথ্য যা মৃত্যুর হার বৃদ্ধির প্রাথমিক কারণ প্রতিষ্ঠিত করবে তা জানানো হোক।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, রাজ্যে ১৮ ঊর্দ্ধ প্রায় ২৬.৮৬ লক্ষ যোগ্য ব্যক্তি রয়েছেন। জুলাই পর্যন্ত প্রায় ২২,২২,২৫৪ জন ইতিমধ্যে তাদের টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬,২৬,৪০২ জন দ্বিতীয় ডোজও পেয়েছেন। তবে আদালত রাজ্যে টিকার মজুত হ্রাস পাওয়ায় এবং তাতে প্রতিদিনের টিকাকরণে ব্যাঘাত ঘটায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।