Dr. Shyama Prasad Mukherjee : ড: শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী এক অনুপ্রেরণা : মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ৬ জুলাই (হি. স.) : ড: শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী এক অনুপ্রেরণার নাম। তাঁর ন্যায় নীতি আদর্শে ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশিত পথে ত্রিপুরা সঠিক দিশায় এগিয়ে চলেছে। ত্রিপুরার নতুন প্রজন্ম যাতে রাজ্যে থেকেই উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারেন সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে সরকার। ডা: শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর ১২১ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে একথা বলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। অনুষ্ঠানের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী ও অন্যান্য অতিথিরা ডা: শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।


এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী ছিলেন দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ও রাষ্ট্রবাদী চিন্তাধারা সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। জম্মু-কাশ্মীর যাতে ভারতের সামগ্রিক উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত হয় তা চেয়েছিলেন তিনি। সেই অঞ্চলের জন্য পৃথক ব্যবস্থা ও আইনের প্রতিবাদ করেছিলেন। ভারতের শান্তি ও অখন্ডতা আঘাত প্রাপ্ত হতে পারে, এই অজুহাতে একটা অংশ এর বিরুদ্ধাচরণ করেছে। কিন্তু শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর সেই প্রতিবাদের প্রতিফলন হলেও দীর্ঘ সময় ধরে তা বাস্তবায়িত হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দৃঢ়তার সঙ্গে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর এই স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করে কাশ্মীরকে ভারতের উন্নয়নের মূলস্রোতে সঙ্গে যুক্ত করেছেন। বছরের পর বছর ধরে ভূস্বর্গ ছিল উগ্রবাদ কবলিত। প্রধানমন্ত্রীর এই বলিষ্ঠ পদক্ষেপে ফলে এখন পরিস্থিতির বদল হয়েছে। ভারতের অন্যান্য প্রদেশের মত কাশ্মীরেও এখন সমান্তরালভাবে সর্বাঙ্গীন উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে।


তাঁর দাবি, ত্রিপুরা সরকার স্বচ্ছতার সাথে মানুষের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। এই লক্ষ্যেই অধিকাংশ পরিষেবায় অনলাইন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। ত্রিপুরা প্রথম রাজ্য যেখানে ১০০ শতাংশ নাগরিকের আধার কার্ড হয়ে গেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একটা সময়ে ত্রিপুরা রাজ্যকে পিছিয়ে পড়া প্রদেশ হিসেবে প্রতিপন্ন করা হতো। বর্তমানে মানসিকতা বদলাচ্ছে। এখন স্টার্ট-আপ সহ উদ্যোগের বর্ধিত সম্ভবনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।


তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ ত্রিপুরায় স্টার্ট আপের মাধ্যমে বড় মাত্রায় রোজগার তৈরীর লক্ষ্যে উৎসাহিত করেছেন। আর সেই পথেই বেশী সংখ্যায় স্টার্ট আপ যুক্ত করে আগামী পাঁচ বছরে অধিক মাত্রায় উদ্যোগ তৈরী করে রোজগারের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার। রাজ্যে এর উদ্বোধনের প্রথম ধাপেই এই মানসিকতা সম্পন্ন ভালো সংখ্যায় ব্যক্তিরা যুক্ত হচ্ছেন। আগে এর জন্য রাজ্যের ছেলে মেয়েদের বহিঃরাজ্যে ছুটতে হত। এখন রাজ্যেই সমস্ত রকমের সুযোগ তৈরী হচ্ছে। বাড়ছে উদ্যোগ তৈরীর সম্ভবনা। তাঁর দাবি, রাজ্যের ছেলে মেয়েরা এরাজ্যেই নিশ্চিত ভবিষ্যত গড়ে তোলার সুযোগ পান, সেই দিকে গুরুত্ব দিয়েই কাজ করছে সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার সময় গোটা রাজ্যে সিএসসি সেন্টার ছিল মাত্র ১৫০ টি। নাগরিকদের বিভিন্ন সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে সেই সংখ্যা বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টি করা হয়েছে।


সাথে তিনি যোগ করেন, ত্রিপুরার বিকাশের লক্ষ্যে আগর নির্ভর ২ হাজার কোটি টাকার অর্থনীতি লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়েছে। রাজ্যে প্রায় ৫০ লক্ষ আগর গাছ থাকলেও সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা লাভের মুখ দেখেন নি। এর সুযোগ নিয়ে একটা অংশ রাজ্যের আগর থেকে অবৈধভাবে মোটা অঙ্কের অর্থ উপার্জন করেছে। বর্তমানে বেশ কিছু ক্ষেত্রে শিথিলতা, আগর মিশনের মাধ্যমে, রাজ্য সরকার অর্থনৈতিক বিকাশের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। রাজ্যে উন্মোচিত হচ্ছে রোজগারের নয়া দিশা।


অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা রতন বিশ্বাস বলেন, ড: শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর দর্শনকে আরও বেশি করে মানুষের মধ্যে পৌঁছে দিতেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন মহকুমাতেও আজ ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর জন্মজয়ন্তী উদযাপন করা হচ্ছে। কোভিড আচরণবিধি মেনে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে এদিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক ডাঃ দিলীপ দাস, বিধায়ক মিমি মজুমদার, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ডাঃ পি কে গোয়েল, রাজ্য সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুভাষ দেব, ত্রিপুরা স্টেট হায়ার এডুকেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অরুণোদয় সাহ প্রমুখ।