সুপ্রিম কোর্টে বড়সড় ধাক্কা খেল সিবিআই, কলকাতা হাইকোর্টে ফিরল নারদ মামলা

কলকাতা, ২৫ মে (হি.স.) :   নারদ মামলা নিয়ে এখনই ভাবতে রাজি নয় দেশের শীর্ষ আদালত । ফলে ফের হাই কোর্টে ফিরল মামলা । সুপ্রিম কোর্টর প্রশ্নের মুখে জেরবার হয়ে যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা নারদ মামলা সরানোর আর্জি নিয়ে শীর্ষ আদালতে গিয়েছিল, তারাই আবেদন প্রত্যাহার করে নিল। তার ফলে আবারও কলকাতা হাই কোর্টের পাঁচ সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চে নারদ মামলা ফিরল। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, হাই কোর্টের রায়ের পর বিষয়টি আবারও বিবেচনা করা হবে।

হাই কোর্টের পর সুপ্রিম কোর্টে গিয়েও প্রশ্নের মুখে জেরবার হতে হল সিবিআইকে। মঙ্গলবার শীর্ষ  আদালতের ভ্যাকেশনাল বেঞ্চে মামলাটি উঠলে দুই বিচারপতির কড়া প্রশ্নের মুখে কার্যত ঝাঁঝরা হতে হয় কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে। যে মামলাটি ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ সদস্যের বিশেষ বেঞ্চের বিচারাধীন রয়েছে, তা নিয়ে কেন সুপ্রিম কোর্ট আসা হচ্ছে। এই প্রশ্ন রাখা হয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সামনে। মামলা প্রত্যাহার না করা হলে অভিযুক্তদের জামিন দিয়ে দেওয়ার কথাও বলেন বিচারপতিরা। শেষে আদালতের তোপের মুখে পড়ে মামলা প্রত্যাহার করে নেয় সিবিআই।  

জবাবে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, সেদিন নিজাম প্যালেসের বাইরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যের আইনমন্ত্রী যেভাবে ধরনায় বসেছিলেন, তাতে সিবিআই নিজের কাজ ঠিক মতো করতে পারেনি। কেন্দ্রের এই যুক্তি শুনে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা বলেন, “একটা বিষয় পরিষ্কার করে দিতে চাই আমরা ধরনার বিপক্ষে। কিন্তু যদি মুখ্যমন্ত্রী বা আইনমন্ত্রী নিজের হাতে আইন তুলে নেন, তার জন্য অন্যান্য অভিযুক্তদের ভোগান্তি হবে কেন?” সিবিআই দাবি করেছিল, নিম্ন আদালত প্রভাবিত হয়ে এই জামিনের নির্দেশ দেয় চার অভিযুক্তকে। কেন্দ্রীয় সংস্থার সেই দাবিও কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ সাফ জানায়, “আমাদের মনে হয় না নিম্ন আদালতের বিচার ব্যবস্থা এতটা দুর্বল যে তাদের এভাবে প্রভাবিত করা যায়। আমরা দেশের বিচার ব্যবস্থাকে নিরুৎসাহিত করতে চাই না।” এমনকি, অন্য রাজ্যের আদালতে মামলা স্থানান্তরিত করার আর্জিও খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে সেই মামলা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যদিও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বা আইনমন্ত্রী যদি আইন ভেঙে থাকেন সে ক্ষেত্রে তাঁদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারে সিবিআই, এমনটাই পর্যবেক্ষণে বলা হয় শীর্ষ আদলতের পক্ষ থেকে।

যদিও এ দিন আদালতে বারংবার চার অভিযুক্তের গৃহবন্দি রাখার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে যান কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল। এক সময় বাধ্য হয়ে দুই বিচারপতিকে বলতে শোনা যায়, “ছুটির সময় স্পেশাল বেঞ্চ সাধারণত গঠিত হয় মানুষকে স্বাধীনতা দেওয়ার জন্য। এই প্রথম আমরা দেখতে পাচ্ছি স্পেশাল বেঞ্চকে স্বাধীনতা খর্ব করার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।” ফলে এই মামলা অন্য রাজ্যে যাচ্ছে না। হাই কোর্টে বিচারাধীন মামলা যদি অন্য আদালতে স্থানান্তর করা হয় সেটা রাজ্যের উচ্চ আদালতের জন্য অবমাননাকর হবে বলে পর্যবেক্ষণে জানান সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *