রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ৮.৩৯ লক্ষ মানুষ কোভিড-১৯ টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৮ এপ্রিল৷৷ রাজ্যে গত ১৬ জানুয়ারি থেকে কোভিড-১৯ টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে৷ ইতিমধ্যেই রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ৮.৩৯ লক্ষ মানুষ কোভিড-১৯ টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন যা মোট জনসংখ্যার ২৪ শতাংশ যেখানে জাতীয় গড় মাত্র ৬ শতাংশ৷ অতি স্বল্প সময়ে রাজ্যের ৯৪.৫ শতাংশ স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী কর্মী এবং ৯৫.৫ শতাংশ প্রথমসারির কর্মী টিকা নিয়েছেন যা দেশের মধ্যে সর্র্বেচ্চ৷


আজ আগরতলা পুর নিগমের কনফারেন্স হলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের রাজ্য অধিকর্তা ডা. সিদ্ধার্থ শিব জয়সওয়াল এই সংবাদ জানান৷ সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, ১৬ জানুয়ারি থেকে কোভিড-১৯ টিকাকরণের প্রথম পর্যায়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী কর্মীদের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়৷ ১৩ ফেবয়ারি থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী কর্মীদের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়৷
রাজ্যের ৪৫ হাজার ২৭০ জন স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী কর্মীদের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে৷ এক্ষেত্রে টিকাকরণের গড় হার ৯৪.৫ শতাংশ৷ সেইসঙ্গে রাজ্যের ৩৭ হাজার ৭৮৬ জন স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী কর্মীদের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়৷ এক্ষেত্রে টিকাকরণের গড় হার ৮৩.৫ শতাংশ৷ সাংবাদিক সম্মেনে মিশন অধিকর্তা জানান, ৬ মার্চ থেকে রাজ্যে কোভিড-১৯ টিকাকরণের দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রথমসারির কর্মীদের কোভিড-১৯ টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়৷ রাজ্যের ৬২ হাজার ৪২ জন প্রথমসারির কর্মীদের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়৷ এক্ষেত্রে টিকাকরণের গড় হার ৯৫.৫ শতাংশ৷ সেইসঙ্গে রাজ্যের ৫০ হাজার ৭৫ জন প্রথমসারির কর্মীদের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়৷ এক্ষেত্রে টিকাকরণের গড় হার ৮০.৭ শতাংশ৷ তিনি জানান, ১ মার্চ থেকে কোভিড-১৯ টিকাকরণের ত’তীয় পর্যায়ে ৬০ বছর বয়সের উপর ব্যক্তি এবং ৪৫ বছর বয়স থেকে ৫৯ বছর বয়সের নাগরিক যারা নির্দিষ্ট রোগে (কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক চিহ্ণিত রোগ সমূহ)আক্রান্তদের টিকাকরণের আওতায় আনা হয়৷ ১ এপ্রিল থেকে রাজ্যে ৪৫ বছরের ঊর্ধে সমস্ত নাগরিকদের টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷


সাংবাদিক সম্মেলনে মিশন অধিকর্তা আরও জানান, রাজ্যে এখন পর্যন্ত ৩ লক্ষ ৩৪ হাজার ৮১ জন ৬০ বছর ঊর্ধে নাগরিকদের কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া হয়েছে৷ এক্ষেত্রে টিকাকরণের গড় হার ৭৬.১ শতাংশ৷ সেইসঙ্গে ৪ লক্ষ ২৮ হাজার ৮৭৩ জন ৪৫ বছর বয়স থেকে ৫৯ বছর বয়সের নাগরিকদের টিকা দেওয়া হয়েছে৷ এক্ষেত্রে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত টিকাকরণের গড় হার ৫৫.৯ শতাংশ৷ তিনি জানান, ১ মে থেকে কোভিড-১৯ টিকা সরবরাহের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে৷ তবে পূর্ব নির্দেশিকা অনুসারে কেন্দ্রীয় সরকার অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রাজ্যকে বিনামূল্যে টিকা সরবরাহ করবে৷ নতুন নির্দেশিকা অনুসারে রাজ্যকে টিকা ক্রয় করতে হবে৷

তিনি জানান, রাজ্যে ১৮ বছর থেকে ৪৪ বছর বয়সের নাগরিকদের টিকাকরণের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন ক্রয় করবে৷ নির্বাচন কমিশনের রিপোর্ট অনুসারে রাজ্যে ১৮ বছর থেকে ৪৪ বছর বয়সের নাগরিকের সংখ্যা প্রায় ১৬ লক্ষ৷ তিনি জানান, বর্তমানে ৯৪৮ টি টিকাকরণ কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হচ্ছে৷ সরকারি মেডিক্যাল কলেজ, রাজ্য হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল, সামাজিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সাব-সেন্টার, সি এ পি এফ ক্যাম্প ও আই এল এস হাসপাতালে টিকা দেওয়া হচ্ছে৷


সাংবাদিক সম্মেলনে মিশন অধিকর্তা জানিয়েছেন, রাজ্যে এমন অনেক প্রথমসারির কর্মী, বিশেষ করে আধা সামরিক বাহিনী (সি.এ.পি.এফ)-এর কর্মী এবং ৪৫ বছরের উর্ধের নাগরিকগণ রয়েছেন যাঁরা কো-ভ্যাকসিন-এর প্রথম ডোজ বহি:রাজ্য থেকে গ্রহণ করেছেন এবং বর্তমানে বিভিন্ন কারনে ত্রিপুরায় রয়েছেন৷ এই সুুবিধাভোগীদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার জন্যে এক বিশেষ টিকাকরণ কর্মসূচি আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর, ত্রিপুরা সরকার৷ এই অনুসারে বিশেষ অনুরোধে কেন্দ্র থেকে পর্যাপ্ত সংখ্যায় কো-ভ্যাকসিন আনা হয়েছে৷ জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন, ত্রিপুরা সরকার- এর তরফ থেকে ৫ মে, ২০২১ রাজ্যের বিশেষ টিকাকরণ কর্মসূচি আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ সুুবিধাভোগীরা উল্লেখিত দিনে টিকা নেওয়ার জন্যে এখন থেকেইcowin.gov.in এ নিজেদের নাম নথিভূক্ত করতে পারেন৷ যদি নাম নথিভূক্ত করতে কারও অসুুবিধা হয় সেক্ষেত্রে তাঁরা সরাসরি নিম্নলিখিত কোভিড টিকাকরণ কেন্দ্রে কো-ভ্যাকসিন-এর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করতে পারেন৷ তিনি জানান, আগামী ৫ মে কো-ভ্যাকসিন নেওয়ার কেন্দ্রগুলি হল পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার আই এম এ হাউস কনফারেন্স হল (পশ্চিম, সিপাহীজলা ও খোয়াই জেলার জন্য), উত্তর ত্রিপুরা জেলার পদ্মপুর ইউ পি এইচ সি সি ভি সি (উত্তর ত্রিপুরা ও ঊনকোটি জেলার জন্য), ধলাই জেলার আমবাসা পি এইচ সি সি ভি সি, গোমতী জেলার উদয়পুরের ত্রিপুরাসুুন্দরী মহকুমা হাসপাতাল, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার শান্তিরবাজারস্থিত জেলা হাসপাতাল৷