কলকাতা, ২০ এপ্রিল (হি. স.) : এবার করোনা প্রতিষেধক নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ায়। বললেন, ‘দেশের ৬৪% ভ্যাকসিন বিদেশে পাঠিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। মরে গেলেও এখন ভ্যাকসিন পাবে না মানুষ।’ লিখেছেন, “অনুরোধ করছি স্বচ্ছ, বিশ্বাসযোগ্য টিকাকরণ নীতি সুনিশ্চিত করুন। “
খোলা বাজার থেকে প্রতিষেধক কেনার ক্ষেত্রে অনেক দেরিতে ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্র। এদিন এই দাবি করে মমতা বলেন, ‘শেষ মুহূর্তে খোলা বাজার থেকে প্রতিষেধক কেনায় ছাড়পত্র দিয়েছে। খোলা বাজারে ওষুধের জোগান থাকতে হবে।’কড়া সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেরিতে ঘোষিত সর্বজনীন প্রতিষেধক সিদ্ধান্ত কার্যত অন্তঃসারশূন্য। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত সঙ্কটের সময় দায়িত্ব এড়ানোর কৌশল ছাড়া কিছু নয়।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকালই জানিয়েছেন, রাজ্যে অতিরিক্ত ওষুধ এবং প্রয়োজনীয় প্রতিষেধক সরবরাহের বিষয়টি তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পেশ করেছেন। রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বাড়লেও, এখনই যে লকডাউন হচ্ছে না, তা সোমবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়। ইঙ্গিত দেন, করোনা মোকাবিলায় বিভিন্ন রাজ্যে ইতিমধ্যেই নাইট কার্ফু চালু হলেও, বাংলায় সেই সম্ভাবনা এখনই নেই। তিনি বলেন, কারফিউ কোনও সমাধান নয়। রাত্রিকালীন কার্ফু করে কিছু হবে না।
করোনা মোকাবিলায় কী করণীয়, তারই উপায় বাতলাতে কলকাতার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিল রাজ্য সরকার।পরিস্থিতি সামলাতে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে গতবারের চেয়েও করোনার জন্য ২৫-৩০ শতাংশ বেড বাড়াতে বলল রাজ্য সরকার। জরুরি নয়, এমন অস্ত্রোপচার আগামী ১৫ দিন হবে না।
মমতা প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন, ‘২৪ তারিখে আমি একটা চিঠি দিয়েছিলাম কেন্দ্রকে। অনুরোধ করেছিলাম, যাতে রাজ্য সরাসরি টিকা কিনে মানুষকে দিতে পারে তার জন্য হস্তক্ষেপ করতে। কিন্তু সেই চিঠির কোনও উত্তর পাইনি’। এর পর মমতা লেখেন, ‘দ্বিতীয় তরঙ্গে সংক্রমণ যখন হু হু করে বাড়ছে, তখন কেন্দ্র অন্তঃসার শূন্য বিবৃতি দিয়ে দায়িত্ব এড়ানোর পথ নিয়েছে’।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় ঘোষণায় টিকার কার্যকারিতা, গুণমান, সরবরাহ নিয়ে সমস্যা সমাধানের কোনও পথ দেখানো হয়নি, রাজ্য কত দামে টিকা কিনতে পারবে, সে ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। আমাদের আশঙ্কা, এই ঘোষণার ফলে বাজারে অসাধু প্রবণতা দেখা যেতে পারে, যা সাধারণ মানুষের টিকা কেনার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে’। এর পর লেখেন, ‘এখন বাজারে টিকা অমিল। দ্রুত এর সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। যাতে প্রতিষেধক সকলেই পান’। শেষে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘আপনার কাছে আমার অনুরোধ স্বচ্ছ, বিশ্বাসযোগ্য টিকাকরণ নীতি সুনিশ্চিত করুন, যাতে দেশের সব মানুষ সুলভ মূল্যে টিকা পান’।