এডিসি নির্বাচন : গণনা কেন্দ্রে সিসিটিভির দাবী জানাল সিপিএম, কংগ্রেস ও তিপ্রা মথা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ এপ্রিল৷৷ নির্বাচনের পর কমিশনের কাছে অভিযোগ জানায় তিপ্রা মথা পার্টি৷ বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে গিয়ে প্রতিনিধিদল অভিযোগ করে ৬০-৭০ টি বুথে পুনরায় ভোট করার দাবি জানান৷ কারণ সেসব বুথে ৬ এপ্রিল দুসৃকতিকারীরা সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটিয়েছে৷ এবং পোলিং এজেন্টদের মারধর সহ ছাপ্পা ভোটের ঘটনা ঘটিয়েছে স্বশাসিত জেলা পরিষদ নির্বাচনে৷ কিছু কিছু জায়গায় পুলিশের ভূমিকা ছিল সম্পূর্ণ নীরব দর্শকের মতো৷ ঘটনার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে৷


রাজ্য নির্বাচন কমিশনার বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন৷পাশাপাশি আগামী ১০ এপ্রিল নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার দিন যাতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা সহ অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা দাবি জানান নির্বাচন কমিশনারের কাছে৷ তিপ্রা মথার তরফ থেকে গণনা কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা করারও দাবী জানানো হয়েছে৷ নির্বাচন কমিশন বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখবেন বলে প্রতিনিধিদলকে জানিয়েছেন বলে জানা যায়৷ এদিন প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন তিপরা পার্টির চেয়ারম্যান প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মন, অনিমেষ দেববর্মা, এন্টনি দেববর্মা প্রমূখ৷ এখন দেখার বিষয় অভিযোগ পেয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার কি ভূমিকা গ্রহণ করে৷ এদিকে তিপ্রা মথার তরফ থেকে এদিন সন্ধ্যায় রাজ্যপাল রমেশ বৈশ এর সাথে সাক্ষাৎ করে এইসব দাবীগুলি করা হয়েছে৷


স্বশাসিত জেলা পরিষদ নির্বাচনের দিন শাসক দলের প্রার্থীদের উপর হামলা, ভোট কর্মী এবং ভোটারদের সাথে দুর্ব্যবহারের সাক্ষী রয়েছে রাজ্যের সংবাদমাধ্যম৷ শাসক দলের সন্ত্রাসী ঘটনাগুলি সামাজিক মাধ্যমে উঠে এসেছে৷ নির্বাচনের পর এদিন সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন করে ৬৫ টি বুথে পুনরায় ভোট চেয়েছিল সিপিআইএম৷ পরে লিখিতভাবে কমিশনারের কাছে দাবি জানানো হয়েছিল৷ কিন্তু কমিশন থেকে কোন রকম অফিশিয়াল প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷ বৃহস্পতিবার প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে, সিপিআইএমের রাজ্য কমিটির চেয়ারম্যান বিজন ধর এবং গণমুক্তি পরিষদের রাজ্য নেতা তথা প্রাক্তন সংসদ জিতেন্দ্র চৌধুরি নির্বাচন কমিশনের সাথে দেখা করে নির্বাচনের দিন যেসব সন্ত্রাসের ঘটনা গুলি ঘটেছে সেই বিষয়ে অবগত করা হয়েছে৷ কিন্তু নির্বাচন কমিশনার এম এল দে জানান এ ধরনের কোনো রিপোর্ট কমিশনের কাছে আসেনি৷


কিন্তু নির্বাচন কমিশনারের কাছে পূর্বের তিন বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বিরোধীদল সিপিআইএম এ ডি সি নির্বাচনের আগে থেকেই অবহিত করে এসেছিল৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক কমিশন স্বশাসিত জেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে সংগঠিত করতে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি৷ এ জন্য সিপিআইএম অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে৷ সাংবাদিক সম্মেলন করে বৃহস্পতিবার এমনটাই অভিযোগ তুললেন গণমুক্তি পরিষদের রাজ্য নেতা জীতেন্দ্র চৌধুরি৷ যারা ভোটের দিন এ ধরনের সন্ত্রাস করেছে তারা ভোট গণনার দিন জবরদস্তি, বল প্রয়োগ এবং ফলাফল ম্যানিপুলেট করার চেষ্টা করতে পারে৷ কারন এর নজির আছে ত্রিপুরা তিন বছরে চারটি নির্বাচনে৷ তাই নির্বাচন কমিশনেরকে জানানো হয়েছে৷ যাতে এদিন পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়৷

ভোট কেন্দ্রীয় সেনাবাহিনী এবং রাজ্য সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে নিরাপত্তার ব্যবস্থা যাতে করা হয়৷ গণনা কেন্দ্রে পাশে ভিডিওগ্রাফি করা ও সিসি টিভির ব্যবস্থা করা৷ যাতে সব ধরনের রেকর্ডিং ব্যবস্থা হয়৷ এবং গণনা কেন্দ্রে যদি কোন প্রশাসনিক আধিকারিক কোন রাজনৈতিক এজেন্ট হয়ে কাজ করতে চায় তাহলে তাকে যাতে সাথে সাথে বরখাস্ত করা হয় তার দাবি জানানো হয়েছে কমিশনারের কাছে বলে জানান শ্রী চৌধুরি৷ তিনি আরো বলেন, পুনভোট শুধু সি পি আই এম চায় না৷ অন্যান্য দলও চাইছে৷ কারন মানুষ খুব কষ্ট করে ভোট দিয়েছে৷ কমিশনের যদি বিষয়টি সততার সাথে যাচাই না করেন তাহলে রাজ্যের জনগণ মেনে নেবে না৷ তাই ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সর্বশেষ দাবি জানানো হয়েছে৷


এদিকে প্রদেশ কংগ্রেসের তরফ থেকেও এদিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবী জানানো হয়েছে এডিসি ভোটের গণনার দিন প্রতিটি গণনাকেন্দ্রে যাতে সিসিটিভির ব্যবস্থা করা হয়৷ পাশাপাশি যাতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়৷