বন্যামুক্ত অসম, সংশোধিত এনআরসি সহ উন্নয়নের ধারা আরও গতিশীল করার অঙ্গীকার বিজেপির নিৰ্বাচনি ইস্তাহার ‘সংকল্পপত্র’-এ

সমীপকুমার দাস

গুয়াহাটি, ২৩ মার্চ (হি.স.) : বন্যামুক্ত অসম, সংশোধিত এনআরসি সহ উন্নয়নের ধারা আরও গতিশীল করার অঙ্গীকার সংবলিত বিজেপির নিৰ্বাচনি ইস্তাহার ‘সংকল্পপত্র’ প্রকাশ করেছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগতপ্রকাশ নাড্ডা। মঙ্গলবার অভিজাত হোটেল তাজ ভিভিন্টায় দলের প্রদেশ সভাপতি রঞ্জিত কুমার দাস, মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা অসমে নির্বাচনি প্রভারী নরেন্দ্রসং তোমর, ডোনার মন্ত্রী তথা সহ-নির্বাচনি প্রভারী জিতেন্দ্র সিং, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শাহনওয়াজ হুসেন, দলের সর্বভারতীয় উপ-সভাপতি বৈজয়ন্তজয় পাণ্ডা, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দিলীপ শইকিয়া, নর্থ-ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (নেডা)-এর আহ্বায়ক তথা অসমের বহু দফতরের মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা, অসমে দলের সহ-প্রভারী পবন শর্মা, প্রাক্তন সাংসদ নারায়ণ বরকটকি প্রমুখকে সঙ্গে নিয়ে আজ দলের নির্বাচনি ইস্তাহার ‘সংকল্পপত্র’ প্রকাশ করেছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগতপ্রকাশ।

আজ জারিকৃত ‘সংকল্পপত্র’-এ বিজেপি ১০টি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার করেছে। নিৰ্বাচনি ইস্তাহারের প্রথমেই অঙ্গীকার করা হয়েছে রাজ্যে ফের ক্ষমতায় এসে রাজ্যকে বন্যার বিভীষিকা থেকে মুক্ত করা হবে। মিশন ব্ৰহ্মপুত্ৰ প্রকল্পের আধারে ভবিয্যতে যাতে বন্যার করাল গ্রাস থেকে জন-ধন সুরক্ষিত করা যায় যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিজেপির প্ৰতিশ্ৰুতি, ব্ৰহ্মপুত্ৰ এবং এর উপনদীগুলির অতিরিক্ত জল স্টোর করতে রিজাৰ্ভয়ার তৈরি করা হবে। পাশাপাশি ধুবড়ি থেকে শদিয়া পর্যন্ত বিজ্ঞানসম্মতভাবে বিশেষ মেশিন দিয়ে নদীর আবৰ্জনা পরিষ্কার করা হবে।

দ্বিতীয়ত, অসমের মহিলাদের আরও অধিক সবল করা হবে। ৩০ লক্ষ পরিবারকে অরুণোদয় প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। এই প্রকল্পের বলে বৰ্তমানে প্রাপ্ত ৮৩০ টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে ৩,০০০ করা হবে।

তৃতীয়ত, নামঘর এবং সত্ৰগুলিকে সংরক্ষণ করবে বিজেপি জোট সরকার। আদিবাসী এবং আদিবাসী সম্প্ৰদায়ভুক্ত উপাসনাস্থলগুলিকে উদ্ধারের জন্য টাস্ক ফোর্স গঠন করা হবে। এই টাস্কফোর্স এই স্থানগুলিকে অবৈধ দখলকারীর হাত থেকে উদ্ধার করবে। এছাড়া প্ৰতিটি নামঘরে আড়াই লক্ষ টাকা করে প্ৰদানের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে৷

চতুর্থত, মিশন শিশু উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্ৰত্যেক শিশুকে বিনামূল্যে শিক্ষা, অষ্টম শ্ৰেণি পর্যন্ত সকল স্কুলপড়ুয়াকে সাইকেল দেবে সরকার।

পঞ্চমত, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)-র ফের সংশোধন করা হবে যাতে প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকরা সুরক্ষা লাভ করতে পারেন। তাছাড়া নবায়িত বা সংশোধিত এনআরসি-র বলে অবৈধ নাগরিকদের চিহ্ণিত করে এনআরসি-র বাইরে রাখা হবে। শীর্ষ আদালতের নিৰ্দেশে যাবতীয় বিবাদ নিষ্পতিত করে প্ৰকৃত ভারতীয় নাগরিককে সুরক্ষা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করা হয়েছে৷

ষষ্ঠত, বিধানসভা এলাকার সীমা নির্ধারণ করে অসমের নাগরিকদের রাজনৈতিক অধিকার রক্ষার জন্য প্ৰতিশ্ৰুতিবদ্ধ থাকবে নতুন বিজেপি সরকার।

সপ্তমত, অসমে আহার আত্মনিৰ্ভর প্রকল্পের শুভারম্ভ হবে। এই প্রকল্পের বলে রাজ্যে খাদ্য সামগ্ৰী, বিশেষ করে মাস, হাঁস-মোরগ, দুগ্ধ উৎপাদন এবং উদ্যান শস্যের ওপর গুরুত্ব প্ৰদান করা হবে।

অষ্টমত, অসমকে ভারতের মধ্যে দ্রুত কর্মসংস্থানকারী রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলা হবে। দুই লক্ষ বেকারকে সরকারি চাকরির প্ৰতিশ্ৰুতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১ লক্ষ বেকারকে ২০২২ সালের ১ মাৰ্চের মধ্যে চাকরি দেওয়া হবে।

নবমত, স্বামী বিবেকানন্দ অসম ইয়ুথ এমপ্লয়মেন্ট প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ লক্ষ যুব-ব্যবসায়ীকে সহায়তা করারও প্ৰতিশ্ৰুতি দেওয়া হয়েছে ইস্তাহারে।

দশমত, রাজ্যের নাগরিকদের ভূমির অধিকার প্রদান করে আরও সবল করা হবে। অসমে বসবাসকারী সকল ভূমিহীন নাগরিককে পৰ্যায়ক্ৰমে ভূমির পাট্টা প্ৰদানের সংকল্প নিয়েছে বিজেপি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *