সরস্বতী পূজায় সেলফি তুলতে গিয়ে অগ্ণিদগ্দ ছাত্রীর মৃত্যু ১৬ দিন লড়াই করে

আগরতলা, ৩ মার্চ (হি.স.) : টানা ১৬ দিনের লড়াইয়ে মৃত্যুর কাছে পরাজিত হয়েছে ঝুমা৷ ত্রিপুরার দক্ষিণ জেলার বিলোনিয়া বিদ্যাপীঠ বিদ্যালয়ের অগ্ণিদগ্দ একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ঝুমা দে জীবনযুদ্ধে হেরে গেল৷ আজ বুধবার সকালে কলকাতায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে৷ কলকাতায়ই তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে৷ তার মৃত্যুর খবর ত্রিপুরায় আসতেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে৷


সরস্বতী পূজার দিন সেলফি তুলতে গিয়ে শাড়িতে আগুন লেগে শরীরের আশি শতাংশের অধিক পুড়ে গিয়েছিল ঝুমার৷
সরস্বতী পূজায় বিলোনিয়া বনকর এলাকার বাসিন্দা ঝুমা দে বন্ধুদের সাথে মিলে সেলফি তুলতে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল৷ সেলফি তোলার সময় তার শাড়িতে আগুন লেগে গেলে সহপাঠিরা অনেক চেষ্টা করেও সেই আগুন নেভাতে পারেনি৷ গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে বিলোনিয়া মহকুমা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে চিকিৎসকরা তাকে জিবি হাসপাতালে স্থানান্তর করেন৷ চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, ঝুমার শরীরের আশি শতাংশ পুড়ে গেছে৷


বিদ্যাপীঠ সুকলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষিকা পূর্ণিমা দেব এ-বিষয়ে জানিয়েছিলেন, পূজার প্রসাদ বিতরণ করার পর বন্ধুদের সাথে সেলফি তুলছিল ঝুমা৷ তখনই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে৷
এদিকে, তার অবস্থা দেখে চিকিৎসকরা ঝুমার বেঁচে থাকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন৷ তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কলকাতায় স্থানান্তর করা হয়েছিল৷ এ-বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ঝুমাকে নিয়ে তার মা এবং এক আত্মীয় কলকাতায় যান৷ কিন্তু কলকাতায় গিয়ে কারোর সাথে যোগাযোগ না করে তারা সোজা এসএসকেএম হাসপাতালে চলে যান৷ সেখানে তাদের চিকিৎসা সম্ভব নয় জানানোর পর তারা ডিশান হাসপাতালে যান৷ ওই হাসপাতালে ঝুমাকে ভরতি করা হলেও পরের দিন তারা বিমানে আগরতলায় চলে আসেন এবং সোজা বিলোনিয়া চলে যান৷ শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, বিষয়টি গোচরে আসার পর সমস্ত খোঁজখবর নিয়ে জানতে পেরেছি, চিকিৎসার খরচ শুনে তারা ঘাবড়ে গিয়েছিলেন এবং কলকাতা থেকে ফিরে এসেছিলেন৷


তিনি বলেন, এর পরই কলকাতায় সমস্ত জায়গায় চিকিৎসা সম্পর্কিত বিষয়ে খোঁজ নিয়েছিলাম এবং ডিশান-এ চিকিৎসা সম্ভব আশ্বস্ত হওয়ার পর তাদের পুনরায় কলকাতায় পাঠিয়েছিলাম৷ তিনি জানিয়েছিলেন, ঝুমার চিকিৎসার সমস্ত খরচ ত্রিপুরা সরকার বহন করবে৷ কিন্তু আজ সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে ঝুমা৷ তার মৃত্যুর খবর ত্রিপুরায় আসতেই ঝুমার সহপাঠী থেকে শুরু করে বিলোনিয়া বিদ্যাপীঠের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও কান্নায় ভেঙে পড়েন৷ শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *