চাঞ্চল্যকর শাহজাহান হত্যা মামলায় চার জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড

আগরতলা, ২২ জানুয়ারি (হি. স.)৷৷ ২০১৩ সালে ত্রিপুরায় জয়পুরে চাঞ্চল্যকর শাহজাহান মিয়া হত্যাকাণ্ডে আজ চারজনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে আদালত৷ আদালতের রায়ে শাহজাহানের পরিবার সন্তোষ প্রকাশ করেছে৷ তবে, আসামি পক্ষ তাঁদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শাহজাহানের মা মায়া রাণী বিবি৷


এই মামলা সম্পর্কে এপিপি অরিন্দম দেব বলেন, ২০১৩ সালে ২৭ সেপ্ঢেম্বর জয়পুরে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ শুধু মাত্র চার কেজি চালের জন্য শাহজাহান মিয়া-কে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল৷ তাঁর কথায়, শাহজাহান মিডদে-মিল পরিচালনা করতেন৷ তার কাছে ৭ কেজি চাল চেয়েছিল জরিনা বেগম৷ কিন্তু, অনুমতি ছাড়া তিন কেজির বেশি চাল দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছিলেন শাহজাহান৷ তাতেই তাকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে৷
অরবিন্দবাবু বলেন, ওই খুনের মামলায় পুলিশ তদন্ত করে ১৩ জন-কে গ্রেফতার করে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছিল৷ ২০১৫ সালে ওই মামলা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর হয়৷ ২০১৬ সালের ৭ জানুয়ারি ওই মামলায় চার্জ গঠন হয়েছিল৷ তাঁর দাবি, মামলা পরিচালনায় কিছুটা বিলম্ব হয়েছে৷ কারণ, শাহজাহানের ময়না তদন্ত হয়েছিল কলকাতায়৷ ফলে, চিকিৎসকের হাজিরায় কিছুটা সময় লেগেছে৷ তাছাড়া, করোনা-র প্রকোপের কারণে শুনানি অনেকটাই পিছিয়েছে৷

এদিন তিনি জানান, ওই হত্যা মামলায় আদালতে ১৮ জন সাক্ষী-কে হাজির করা হয়েছিল৷ কিন্তু, আসামির পক্ষে কোন সাক্ষী ছিল না৷ তিনি বলেন, ওই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের পর উভয় পক্ষের সওয়াল জবাব শেষে আদালত ১৩ জনের মধ্যে ৪ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে৷ জরিনা বেগম, রফিক মিয়া, মজিদ মিয়া এবং সজল মিয়া-কে আদালত ভারতীয় দন্ডবিধি ৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম সাজা দিয়েছে৷ সাথে ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাবাসের রায় দিয়েছে আদালত৷ অরবিন্দবাবু বলেন, ৪ জন আসামির জরিমানার অর্থ মৃতের স্ত্রী-কে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷ তাঁর কথায়, ওই মামলায় পশ্চিম আগরতলা থানার তদানীন্তন ওসি মিলন দত্ত তদন্তকার্য সামলেছিলেন৷
এদিকে, রায় শোনার পর সন্তোষ ব্যক্ত করেছেন শাহজাহানের মা মায়া রাণী বিবি৷ তবে, তিনি আরও তিনজনের বেকসুর খালাস হওয়ার ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন৷ তিনি বলেন, রবি খান, মুশিদ মিয়া এবং সৌভিক মিয়া ওই তিনজনও অপরাধী৷ তাদের মধ্যে রবি খান ঘটনার মূল কান্ডারি৷ সাথে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আজ রায় ঘোষণার পর থেকেই আমাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে৷ বিশেষ দোষী সাব্যস্ত জরিনা বেগম আমাদের খুনের হুমকি দিয়েছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *