হাফলং (অসম), ২২ ডিসেম্বর (হি.স.) : হেরিটেজের দিক দিয়ে পর্যটকদের জন্য লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ রেলপথ দিয়ে ভিস্টাডম ট্রেন চালানোর চিন্তাভাবনা করছে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ। দুদিনের সফরে হাফলং এসে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) আনশোল গুপ্তা সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন।
ডিআরএম যুগিন্দর সিং লাখরাকে সঙ্গে নিয়ে জিএম গুপ্তা সাংবাদিকদের বলেন, ভিস্টাডম ট্রেন চালানোর জন্য ইতিমধ্যে ডিমা হাসাও জেলার পর্যটন দফতরকে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে বর্তমানে কাজও চলছে বলে জানিয়ে জিএম বলেন, এক বা দুটি কোচের সঙ্গে ইঞ্জিন জুড়ে পর্যটকদের জন্য এই ভিস্টাডম ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে। সোমবার রাতে কামাখ্যা স্টেশন থেকে স্পেশাল ট্রেনে রওয়ানা হয়ে মঙ্গলবার ভোর চারটা নাগাদ নিউহাফলং এসে উপস্থিত হন জিএম আনশোল গুপ্তা। তার পর আজ বেলা ১১-টা নাগাদ জিএম শতাব্দি-প্রাচীন লোয়ার হাফলং স্টেশন পরিদর্শন করে হেরিটেজের বিষয়টি খতিয়ে দেখেন।
এর পর জাটিঙ্গায় জিএম গুপ্তা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে জানান, হাফলং আসার তাঁর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ ডিমা হাসাও জেলার পর্যটনশিল্পকে কী ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তা খতিয়ে দেখা। তিনি বলেন, ডিমা হাসাও জেলার ট্যুরিজম ইন্ড্রাস্ট্রিকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় এ নিয়ে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ রাজ্য সরকারের ট্যুরিজম বিভাগ এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জিএম বলেন, হেরিটেজের দিক দিয়ে পর্যটনের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে এই জেলায়। ডিমা হাসাও জেলার ট্যুরিজম ইন্ড্রাস্ট্রি উন্নয়ন হলে স্থানীয় মানুষজনের অর্থনৈতিক ক্ষেত্র বিকশিত হবে। রেল এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেশও আগে যাবে।
জিএম আনশোল গুপ্তা আরও বলেন, কোনও অঞ্চলে রেল আসলে সেই জায়গার অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়। এদিকে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে জিএম আনশোল বলেন, মাহুর থেকে হারাঙ্গাজাও পর্যন্ত ৪৯ কিলোমিটার শতাব্দি-প্রাচীন রেলপথকে হেরিটেজ রেলপথ হিসেবে রেখে দেওয়ার জেলার বিভিন্ন দল সংগঠনের যে দাবি ছিল সে সম্পর্কে নতুন করে এখন রেলপথ নির্মাণ করে ট্রেন চালানো সম্ভব নয়। তবে শতাব্দি-প্রাচীন এই রেলপথকে কীভাবে হেরিটেজ হিসেবে বিকশিত করা যায় এ নিয়ে রাজ্য সরকার পর্যটন দফতরের সঙ্গে মিলেই কাজ করবে রেল বিভাগ, জানান জিএম।
ডিমা হাসাও জেলার রেলযাত্রীদের জন্য হিলক্যুইন ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জিএম বলেন, আমি সবেমাত্র এসেছি, একেবারে নতুন। তবে এ ব্যাপারে কী প্রস্তাব ছিল তা দেখতে হবে। রাজ্য সরকার ও স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে দাবি উঠলে এ সম্পর্কে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল নিশ্চয় চিন্তা-ভাবনা করবে, দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন জিএম গুপ্তা।
এছাড়া নিউ হাফলং স্টেশনের যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয় এবং মাইবাং স্টেশনে ফুট ওভার ব্রিজ নির্মাণের দাবি সম্পর্কে বলতে গিয়ে জিএম বলেন, মাইবাং স্টেশনে ফুট ওভার ব্রিজ নির্মাণের বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখে প্রয়োজন হলে এ নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ নিশ্চয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তাছাড়া নিউ হাফলং স্টেশনে যাত্রীদের জন্য পানীয় জলের ব্যবস্থা ও যাত্রীদের অনান্য সুযোগ সুবিধা নিয়ে তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছেন আজ। এদিকে পর্যটনের সম্ভাবনাময় রেল স্টেশনগুলিতে অনান্য সুযোগ সুবিধা নিজে থেকেই রেল বিভাগ গ্রহণ করে বলে জানান উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের জিএম আনশোল গুপ্তা।
এদিকে আজ রাত হাফলং রেলওয়ে গেস্ট হাউসে কাটিয়ে বুধবার সকালে তিনি স্পেশাল ট্রেনে ফিরে যাবেন বলে জানা গেছে।

