কোভিড পরবর্তী সময়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চল জনপ্রিয় পর্যটন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র হয়ে উঠবে : ডাঃ জিতেন্দ্র সিং

নয়াদিল্লি, ১৯ ডিসেম্বর।।

কেন্দ্রীয় উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী ডাঃ জিতেন্দ্র সিং আজ বলেছেন, কোভিড পরবর্তী সময়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চল দেশের জনপ্রিয় পর্যটন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু। অষ্টম উত্তর-পূর্বাঞ্চল উৎসবে প্রধান অতিথি হিসাবে ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে যোগ দিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চল তার বিপুল প্রাকৃতিক এবং দক্ষ মানবসম্পদের ওপর ভিত্তি করে ভারতকে অর্থনৈতিক দিক থেকে মহাশক্তিধর দেশে পরিণত করতে অগ্রণী ভূমিকা নেবে। অর্থনীতির অগ্রগতিতে ‘নতুন চালিকাশক্তি’ হিসাবে এই অঞ্চল কাজ করবে বলে মন্তব্য করে ডাঃ সিং আরও বলেন, ইউরোপের পর্যটন কেন্দ্রগুলির বিকল্প হয়ে ওঠার প্রভূত সম্ভাবনা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রয়েছে। সারা বিশ্ব যখন করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত তখন উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভার্চ্যুয়ালভাবে মহামারী মুক্ত থেকেছে।

ডাঃ জিতেন্দ্র সিং আশা প্রকাশ করে বলেন, ভ্রমণ পিপাষুরা আগামী মরশুম থেকে পছন্দের গন্তব্য হিসাবে নিশ্চয়ই উত্তর-পূর্বাঞ্চলকেই বেছে নেবেন। এখানকার সম্মোহিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের আরও বেশি করে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হবে। অবশিষ্ট বিশ্ব যখন আর্থিক গতি পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টায় রয়েছে, তখন উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভারতের অগ্রগতির ক্ষেত্রে নতুন চালিকাশক্তি হয়ে উঠবে বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।

ডাঃ সিং বলেন, এই অঞ্চলে বাঁশ সহ যে সমস্ত প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য্য রয়েছে, তা যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে এবং ‘ভোকাল ফর লোকাল’ মন্ত্রকে আত্মস্থ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আত্মনির্ভর অভিযানের স্বপ্নকে আরও প্রসারিত করতে হবে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার কাঁচা বাঁশজাত সামগ্রীর আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ হারে কর আরোপ করেছেন। এর ফলে, আসবাবপত্র, হস্তশিল্প ও ধূপকাঠি তৈরির মতো দেশীয় বাঁশ-কেন্দ্রিক শিল্প সংস্থাগুলির লেনদেন ও ব্যবসা আরও বাড়বে। শতবর্ষেরও বেশি পুরনো ভারতীয় অরণ্য আইনে ২০১৭’তে সংশোধনের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, এই সংশোধনের ফলে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বাঁশ ও বাঁশজাত সামগ্রীকে শুল্ক আরোপের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ডাঃ জিতেন্দ্র সিং জানান, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সড়ক, রেল ও বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির ফলে পণ্য সামগ্রী সরবরাহের পাশাপাশি, দেশের যে কোনও প্রান্ত থেকে মানুষের যাতায়াতে সুবিধা হচ্ছে। এই অঞ্চলের যুবসম্প্রদায় সাম্প্রতিক সময়ে অনেক বেশি উচ্চাকাঙ্খী হয়ে উঠেছে বলে অভিমত প্রকাশ করে ডাঃ সিং বলেন, আর্থিক অগ্রগতির এক নতুন শিখরে পৌঁছে দিতে এই অঞ্চলের যুবকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন।

কেন্দ্রীয় সরকারের অ্যাক্ট ইস্ট পলিসির কথা উল্লেখ করে ডাঃ সিং বলেন, আসিয়ান দেশগুলির সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এমনকি, উত্তর-পূর্বাঞ্চল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির আর্থিক অগ্রগতির ক্ষেত্রেও অন্যতম প্রবেশদ্বার হয়ে উঠতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসিয়ান দেশগুলির সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে লুক ইস্ট নীতির পরিবর্তে অ্যাক্ট ইস্ট নীতি কার্যকর করেছেন।

এই উৎসবে আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুর ও সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীরা ছাড়াও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির একাধিক মন্ত্রী ও আধিকারিকরা অংশ নেন। বিদেশ সচিব শ্রী হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বিশেষ ভাষণ দেন।