ফঁড়েদের সরিয়ে দেওয়ায় স্বার্থে আঘাত লেগেছে, তাই কৃষকদের বিভ্রান্ত করে আন্দোলন, কড়া ভাষায় সমালোচনা সাংসদ প্রতিমার

আগরতলা, ১৪ ডিসেম্বর (হি. স.)৷৷ কৃষক ও বাজারের মধ্য থেকে ফঁড়েদের সরিয়ে দেওয়ায় স্বার্থে আঘাত পড়েছে৷ তাই, কৃষকদের রাস্তায় আন্দোলনে নামানো হয়েছে৷ সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে ঠিক এভাবেই কৃষকদের বিভ্রান্ত করে আন্দোলনে নামানোর জন্য রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলিকে নিশানা করেছেন সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক৷ তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কৃষকদের যায় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন৷ তাই তিনি এক দেশ এক বাজার চাইছেন৷ প্রতিমা ভৌমিক এদিন ত্রিপুরার উদাহরণ দিয়ে বলেন, কৃষকরা এখন ন্যূনতম সমর্থনমূল্যে ধান বিক্রি করছেন৷ অথচ, দীর্ঘ ২৫ বছরের বাম জমানায় তা সম্ভব হয়নি৷


আজ সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক বলেন, কৃষকদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে৷ রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত স্বার্থে তাঁদের রাস্তায় আন্দোলনে নামানো হয়েছে৷ তাঁর কথায়, কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রচুর পদক্ষেপ নিয়েছেন৷ কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পে প্রত্যেক কৃষক বছরে ৬ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন৷ তাঁর দাবি, স্বাধীনতার ৭০ বছর পর ভারতের কৃষকরা সত্যিকার অর্থে স্বাধীন হয়েছেন৷ কারণ, নতুন কৃষি আইনে ফঁড়েদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ তাঁর মতে, এখন কৃষকরা দেশের যে-কোনও রাজ্যে সরাসরি ফসল বিক্রি করতে পারবেন৷ এ-বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে সাংসদ ভৌমিক দাবি করেন, প্রত্যেক রাজ্যেই বাজারগুলিতে ব্যবসায়ী সমিতি রয়েছে৷ ওই সমিতি কৃষকদের ফসল বিক্রি নির্ধারণ করত৷ মাঝে ফসলের বিক্রি থেকে কমিশন আদায় করা হতো৷ তাতে কৃষকরা উৎপাদিত ফসলের সঠিক মূল্য পেতেন না৷ নতুন আইন ওই প্রাচীন পদ্ধতিকে মুছে দিয়েছে৷ তাতে, অনেকের লোকসান হয়েছে, কটাক্ষের সুরে বলেন তিনি৷


তনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের জন্যই সয়েল হেলথ কার্ড, ফসল বিমা যোজনা এনেছেন৷ তাতে প্রকৃত কৃষকরা দারুণ উপকৃত হচ্ছেন৷ ত্রিপুরার প্রসঙ্গ টেনে সাংসদ ভৌমিক বলেন, রাজ্যে ২৫ বছরে ন্যূনতম সমর্থনমূল্যে ১০০ গ্রাম ধান কৃষকদের থেকে কেনা হয়নি৷ অথচ সরকার পরিবর্তন হতেই প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় ত্রিপুরা সরকার ১৭ টাকা ৫০ পয়সা প্রতি কেজি ন্যূনতম সমর্থনমূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনেছে৷ চলতি মরশুমে ওই মূল্য বেড়ে ১৮ টাকা ১৫ পয়সা কেজি দরে ধান ক্রয় করা হয়েছে৷ আগামী মরশুমে পুনরায় ওই মূল্য বেড়ে প্রতি কেজি দর হবে ১৮ টাকা ৬৮ পয়সা৷ তিনি জানান, ত্রিপুরায় এখন পর্যন্ত ২৭ হাজার ৭৩৫ জন কৃষকের থেকে ৪৮ হাজার ৭১৬ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা হয়েছে৷ তাতে, ৮৬ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিয়েছে ত্রিপুরা সরকার৷


সাথে তিনি যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনায় ত্রিপুরার কৃষকরা ২২৯ কোটি টাকা পেয়েছেন৷ তাতে, ২ লক্ষ ২২ হাজার কৃষক উপকৃত হয়েছেন৷ প্রতিমা ভৌমিক সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ত্রিপুরার কৃষকদের আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্যই সম্ভব হয়েছে৷
এদিন তিনি এক তথ্য তুলে ধরে বলেন, ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে গম প্রতি কুইন্টাল দর ছিল ১৪০ টাকা৷ এখন তা বেড়ে হয়েছে ১,৯৭৫ টাকা৷ তেমনি, মসুর ডাল প্রতি কুইন্টাল দর ছিল ২,৯৫০ টাকা যা এখন বেড়ে হয়েছে ৫,১০০ টাকা৷ এভাবেই কৃষকদের উৎপাদিত ফসল থেকে আয় বেড়ে চলেছে৷