রাজ্যে বামেদের দীর্ঘ শাসনকালে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় হয়নি কেন, প্রশ্ণ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব

আগরতলা, ১ ডিসেম্বর (হি.স.) ৷৷ ত্রিপুরায় বামফ্রন্টের দীর্ঘ ২৫ বছরের বেশি শাসনামলে কৃষকদের কাছ থেকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়ে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি কেন, জানতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ প্রসঙ্গত, কৃষি বিলের বিরোধিতায় কৃষকরা আন্দোলনে নেমেছেন৷ বামপন্থীরা সেই আন্দোলনকে সরাসরি সমর্থন করছেন৷ ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি প্রশ্ণ তুলেছেন৷ ওই প্রশ্ণের পাল্টা তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব৷


ত্রিপুরায় সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর কৃষকদের অর্থনৈতিক মানোন্নয়নে রাজ্য সরকার ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ তদানীন্তন কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানের সাথে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বৈঠক করেন এবং ধান ক্রয়ে দিনক্ষণ ও মূল্য নির্ধারণ হয়েছিল৷ ২০১৮ সালে এফসিআই-এর মাধ্যমে ওই ধান ক্রয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল৷ ১৭ টাকা ৫০ পয়সা প্রতি কেজি দরে এফসিআই ধান ক্রয় শুরু করেছিল ২০১৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর৷

প্রথম পর্যায়ে ত্রিপুরায় দুই ধাপে ২৬,৮৭০ মেট্রিক টন ধান ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ক্রয় করেছিল এফসিআই৷ পরবর্তী পর্যায়ে তার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন৷ সাথে বেড়েছিল সহায়ক মূল্যও৷ দ্বিতীয় পর্যায়ে কৃষকদের জন্য ধানের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বেড়ে দাঁড়ায় প্রতি কেজি ১৮ টাকা ১৫ পয়সা৷ স্বাভাবিকভাবেই কৃষকদের আয় আরও বেড়ে যায়৷ অথচ, দীর্ঘ বাম জমানায় এ-ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি কখনও৷ এফসিআই-এর মাধ্যমে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়ে ত্রিপুরা সরকারকেও কোষাগার থেকে খরচ করতে হয়েছে৷ কারণ, ধান ভাঙার অত্যাধুনিক মিল ছিল না ত্রিপুরায়৷ তাই ত্রিপুরা সরকার ধান ভাঙার জন্য খরচের ক্ষেত্রে পৃথক নীতি প্রণয়ন করেছে৷


এ-বিষয়ে ত্রিপুরা প্রদেশ কিষাণ মোর্চার সভাপতি জওহর সাহা বলেন, সিপিএম কৃষকের কল্যাণে কখনও ভাবেনি৷ বামেরা দীর্ঘ শাসনে কৃষকদের রেগা শ্রমিকে পরিণত করেছিল৷ কারণ, তাঁরা কৃষকদের নিয়ে রাজনীতি করে৷ তাঁর কথায়, ভারতে কৃষি বিপ্লবের সূচনা করেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী৷ আজ তার পূর্ণাঙ্গ রূপ দিয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ তিনি বলেন, কিষাণ সম্মান নিধি থেকে শুরু করে ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার রূপরেখা স্থির করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী৷ সাথে ধান ও ফসলের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ হয়ে গেছে৷ তাঁর দাবি, কৃষি বিল ফসলের দাম সুরক্ষিত করবে৷ অথচ, সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য সারা দেশে কৃষি বিলের বিরোধিতা করা হচ্ছে৷
এদিকে, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে বামেদের নিশানা করে বলেন, ত্রিপুরায় ২৫ বছরের বেশি সময় কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় ছিলেন৷ অথচ, ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি সরকারের শাসনকালে ত্রিপুরায় প্রথমবারের মতো ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় শুরু হয়েছে৷ তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, বামেরা আবারও শুধুই মিথ্যার প্রচার করে চলেছেন৷


প্রসঙ্গত, কৃষি বিলের বিরোধিতায় একাংশ কৃষক আন্দোলনে নেমেছেন৷ বামপন্থীরা সেই আন্দোলনকে সরাসরি সমর্থন করছেন৷ ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি প্রশ্ণ তুলেছেন৷ ওই প্রশ্ণের পাল্টা তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব৷


ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে বামেদের নিশানা করে টুইট বার্তায় বলেন, ত্রিপুরায় ২৫ বছরের বেশি সময় কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় ছিলেন৷ অথচ, ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি সরকারের শাসনকালে ত্রিপুরায় প্রথমবারের মতো ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় শুরু হয়েছে৷ তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, বামেরা আবারও শুধুই মিথ্যার প্রচার করে চলেছেন৷
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর টুইট দেখে পাল্টা টুইট করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ৷ তিনি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সঠিক সময়ে বিষয়টি মনে করানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ৷