কাঞ্চনপুর, ১৭ নভেম্বর (হি.স.)৷৷ ব্রু শরণার্থী পুনর্বাসনের বিরুদ্ধাচরণ করে কাঞ্চনপুরে চলমান অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট সংক্রান্ত বিষয়ে জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি (জেএমসি)-র সাথে প্রশাসনের বৈঠকে কোনও সুরাহা হয়নি৷ তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কাঞ্চনপুর মহকুমা জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে৷
আজ মঙ্গলবার জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটির সাথে উত্তর ত্রিপুরা জেলা প্রশাসন বৈঠক করেছে৷ বৈঠকে জেলাশাসক জানিয়েছেন, কাঞ্চনপুর মহকুমায় ব্রু শরণার্থী ১,০০০ পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়া হবে৷ বাকিদের অন্যত্র পুনর্বাসনে স্থির হয়েছে৷ কিন্তু জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি তাতেও আপত্তি জানিয়েছে৷ কমিটির সদস্য রঞ্জিত নাথ বলেন, কাঞ্চনপুর মহকুমায় সবর্োচ্চ ৫০০ ব্রু শরণার্থী পরিবারকে পুনর্বাসনে আমাদের আপত্তি নেই৷ এছাড়া, মনু-ছৈলেংটা, গছিরাম, নন্দিরাম এলাকায় কোনও ব্রু শরণার্থীকে পুনর্বাসন দেওয়া যাবে না৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরা সরকার আমাদের দাবি নিয়ে বিবেচনার জন্য সময় চেয়েছে৷ কিন্তু আমরা সাফ জানিয়েছি, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে না৷
জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি ধর্মঘটে অনড় থাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য কাঞ্চনপুরের মহকুমাশাসক সমগ্র মহকুমায় ১৪৪ ধারা জারি করেছেন৷ আগামীকাল রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত ওই আদেশ কার্যকর থাকবে৷ ফলে কাঞ্চনপুর মহকুমায় কোনও ভাবেই জমায়েত কিংবা মিছিল করা যাবে না৷
এদিকে, দুষৃকতীর হামলায় পাম্প অপারেটরের রক্তাক্ত হওয়ার ঘটনায় কাঞ্চনপুরে প্রচণ্ড উত্তেজনা দেখা দিয়েছে৷ ওই ঘটনায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে৷ ঘটনায় ব্রু শরণার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে৷ পূর্ব লক্ষ্মীপুর এলাকার বাসিন্দা সুবল দে (৩৬) দুষৃকতীদের আক্রমণে গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷
সুবল দে-র স্ত্রী জানিয়েছেন, প্রতিদিনের মতো আজ সকালে পাম্প চালু করতে গিয়েছিলেন তাঁর স্বামী৷ সেখানেই তাঁকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত করা হয়েছে৷ স্ত্রী-র দাবি, সুবলকে রক্তাক্ত করে পাম্প অফিসের পাশে নালায় ফেলে দিয়েছিল দুষৃকতকারীরা৷ তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে দশদা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছিল৷ এর পর কাঞ্চনপুর মহকুমা হাসপাতাল এবং অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় সেখান থেকে তাঁকে ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে স্থানান্তর করেছেন চিকিৎসকরা৷
ওই ঘটনায় স্থানীয় জনমনে প্রচণ্ড ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে৷ এমনিতেই কাঞ্চনপুরে ব্রু শরণার্থী পুনর্বাসনের বিরোধিতায় অনির্দিষ্টকালের বনধ পালিত হচ্ছে৷ এরই মধ্যে পাম্প অপারেটরের রক্তাক্ত হওয়ার ঘটনায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে৷
কারণ, ব্রু শরণার্থীরাই ওই পাম্প অপারেটরকে মেরেছে, এমনটাই অভিযোগ উঠেছে৷ ফলে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পুলিশ, টিএসআর-এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় আধা সামরিক মোতায়েন করা হয়েছে৷ কাঞ্চনপুরের এসডিপিও বিক্রমজিৎ শুক্লদাস এবং উত্তর ত্রিপুরার পুলিশ সুপার ভানুপদ চক্রবর্তী পরিস্থিতির উপর নজর রেখে চলেছেন৷