গুয়াহাটি, ১ অক্টোবর (হি.স.) : অসম পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর (এসআই) পদে নিযুক্তির লিখিত পরীক্ষার প্ৰশ্নপত্র ফাঁসজনিত কেলেংকারির অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত দিবন ডেকাকে ঘটনার দশদিনের মাথায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার রাত প্রায় ১২টা নাগাদ বরপেটা জেলার পাটাসারকুচি থেকে পুলিশ তাকে আটক করে গুয়াহাটির কাহিলাপাড়ায় অসম পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে নিয়ে এসেছে। এখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ এবং আইনি প্রক্রিয়া শেষে গ্রেফতারের পর আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত স্পেশাল ব্রাঞ্চের লকআপে রাখা হয় বিজেপি সদস্য দিবনকে।
এদিকে অন্য এক সূত্রের দাবি, গতকাল রাতে অসম পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে আত্মসমৰ্পণ করতে আসছিলেন প্রশ্নপত্র কেলেংকারির অন্যতম মূল অভিযুক্ত দিবন ডেকা। বিশ্বস্ত সূত্রের খবরের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গুয়াহাটি আসার পথে পাটাসারকুচি এলাকায় তাকে আটক করে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ২০ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা থেকে অসম পুলিশের ৫৯৭টি শূন্য এসআই পদের লিখিত পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এদিন সকালের দিকে সোশাল মিডিয়ায় সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার প্ৰশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা বাতিল করে দেয় সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ। রাজ্যের গৃহ দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল এদিন ছিলেন দিল্লি। তিনি দিল্লিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শীঘ্র গ্রেফতার করতে ডিজিপি ভাস্করজ্যোতি মহন্তকে কড়া নির্দেশ দেন। ইতিমধ্যে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ দিবন সহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করে দুরন্তগতিতে তদন্ত প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। তবে ঘটনার আরেক প্রধান অভিযুক্ত রাজ্যের প্রাক্তন ডিআইজি প্রশান্তকুমার ফুকন এখনও ফেরার। তাঁর সন্ধান দাতার জন্য অসম পুলিশ নগদ টাকার পুরস্কারও ঘোষণা করেছে।
এদিকে পুলিশের এসআই পরীক্ষা কেলেংকারির সঙ্গে তার নাম জুড়ে যাওয়ার পর অভিযুক্ত দিবন তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বিস্ফোরক অভিযোগ সংবলিত একটি পোস্ট করেছিলেন। পোস্টে তিনি লিখেছেন, প্রশ্নপত্র কেলেংকারির সঙ্গে রাজ্য পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকও জড়িত। আজ স্পেশাল ব্রাঞ্চের দফতরে প্ৰশ্নপত্র কেলেংকারির সঙ্গে জড়িত অন্যদের নাম জানতে জেরা চলছে বলে জানা গেছে।
প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ, দিবন ডেকার বিরুদ্ধে একেকটি প্ৰশ্নপত্র এক লক্ষ টাকায় পরীক্ষা প্রার্থীদের কাছে বিক্রি করারও অভিযোগ রয়েছে। বিজেপি সদস্য দিবন ডেকার ছাপাখানাও আছে। এসআই পরীক্ষার প্ৰশ্নপত্র ছাপার বরাত তিনি পেয়েছিলেন। এছাড়া পরীক্ষার আগের দিন ১৯ সেপ্টেম্বর মহানগরের গণেশগুড়িতে অবস্থিত থ্যাংক-ইউ হোটেলে প্রায় ৫০ জন প্রার্থী আগাম লিখিত পরীক্ষা সম্পন্ন করে ফেলেছিল। পুলিশ এখন যে সকল প্রার্থী আগাম উত্তরপত্রে লিখিত পরীক্ষা দিয়েছিল তাদেরও ধরপাকড় শুরু করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট হোটেলের মালিক সহ অন্যদেরও।