আগরতলা, ১৩ আগস্ট (হি.স.) : সুলভমূল্যে ফ্ল্যাট ক্রয়ের স্বপ্ন ত্রিপুরাবাসীর পূরণ হতে চলেছে। টাউনশিপ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে এ-কথা বলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। তাঁর কথায়, ত্রিপুরা আরবান প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (টুডা) টাউনশিপ প্রকল্প রাজ্যের উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি মাইলস্টোন হিসেবে গণ্য হবে।
আজ বৃহস্পতিবার আগরতলার কামান চৌমুহনিস্থিত বিবেকানন্দ মার্কেট এলাকায় টুডা-র টাউনশিপ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও ভূমি পূজা করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। টাউনশিপ প্রকল্পের ফলক উন্মোচন করে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, দিল্লি, কলকাতা, মুম্বাই, বেঙ্গালুরু, পুনে সহ দেশের অন্যান্য রাজ্যে শহর এলাকার উন্নয়নে আরবান প্ল্যানিং সংস্থা রয়েছে। ত্রিপুরায় এ ধরনের কোনো সংস্থা ছিল না। নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আগরতলা শহর সহ রাজ্যের অন্যান্য শহর ও নগরের উন্নয়নে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সরকার। এই লক্ষ্যেই টুডা গঠন করা হয়েছে। টুডা-র লক্ষ্য শহর এলাকায় বিশেষ প্রকল্পগুলি সুচারুভাবে ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রূপায়ণ করা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কোনও রাজ্যকে সমৃদ্ধশালী ও অর্থনৈতিকভাবে উন্নত করতে হলে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী স্থানীয়ভাবে প্রাধান্য দেওয়ার ক্ষেত্রে লোকাল ফর ভোক্যাল, এই আহ্বান রেখেছেন। রাজ্য সরকার প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বানকে বাস্তবায়ণের লক্ষ্যে কাজ করছে। তিনি বলেন, কোনও কাজের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও ব্যবস্থা না থাকলে সেই কাজ কখনও সফল হতে পারে না। তিনি বলেন, ত্রিপুরা আরবান ডেভেলপমেন্ট অথরিটি ছাড়া নগরোন্নয়ন দফতরের মাধ্যমে শহর ও নগর এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ সম্পাদিত হচ্ছে।
তাঁর কথায়, টাউনশিপ প্রকল্প ছাড়াও টুডা কেন্দ্রীয় সরকারের লাইট হাউজ প্রজেক্টের মাধ্যমে গরিব অংশের মানুষদের জন্য ১০০০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে। রাজ্যে আগে ধারণা ছিল ত্রিপুরা ভূমিকম্প-প্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত থাকার কারণে এখানে উঁচু বিল্ডিং নির্মাণ করা সম্ভব নয়। কিন্তু আজকে রাজ্যে ১৪ তলাবিশিষ্ট বিল্ডিং নির্মাণ করা হচ্ছে। বিগত দিনে যারা রাজ্য পরিচালনা করত শহর এলাকা উন্নয়নের ক্ষেত্রে তাদের সে রকম মানসিকতা ছিল না বলে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, টুডা টাউনশিপ প্রকল্পের মাধ্যমে বিবেকানন্দ মার্কেট এলাকায় ৪৮টি ফ্ল্যাট এবং কুঞ্জবন এলাকায় ২১৬টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে। আগামী ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই ফ্ল্যাটগুলি নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তাঁর দাবি, ফ্ল্যাটগুলিতে উন্নতমানের পার্কিং ব্যবস্থা, জিমনাশিয়াম, কমিউনিটি সেন্টার, সিসি টিভি ক্যামেরা, খেলাধুলোর জন্য পর্যাপ্ত স্থান সহ অত্যাধুনিক ব্যবস্থা রাখা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগরতলা শহরের আরও উন্নয়নের লক্ষ্যে স্মার্ট সিটি প্রকল্পে নগরোন্নয়ন দফতর বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করছে। সুপরিকল্পিত নিকাশি ব্যবস্থার মাধ্যমে শহরবাসী বন্যার প্রকোপ থেকে কিছুটা পরিত্রাণ পেয়েছেন। রাজ্যকে আগামীদিনে আরও উন্নত এবং আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গড়ে তুলতে রাজ্যবাসীর প্রতি মুখ্যমন্ত্রী আন্তরিক আহ্বান জানিয়েছেন।