খোয়াইয়ে কোভিড কেয়ার সেন্টারে নিম্নমানের খাবর দেওয়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি, খোয়াই, ২৯ জুলাই৷৷ পরিষ্কার অপরিচ্ছন্নতার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, জলের সংকট, চিকিৎসক না আসা, খাওয়ার অযোগ্য নিম্নমানের খাদ্য সহ পরিচালনগত বিভিন্ন ত্রুটির অভিযোগে বুধবার খোয়াইয়ের সোনাতলায় আই টি আই কমপ্লেক্সের কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র চিকিৎসাধীন রোগীদের সম্মিলিত বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে৷


সব রোগী এক সময় যার যার কক্ষ থেকে বের হয়ে বারান্দায় এক সাথে জড়ো হয়ে চিকিৎসা কেন্দ্রে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে শুরু করেন৷ পরে যদিও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের কাছ থেকে বার্তা পেয়ে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকেরা চিকিৎসা কেন্দ্রে ছুটে এসে রোগীদের সাথে কথা বলেন ও উপস্থাপিত বিভিন্ন সমস্যা ও অভিযোগ গুলো খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতির সামাল দেন৷

উল্লেখ্য যে, খোয়াইয়ের সোনাতলায় আই টি আই কমপ্লেক্সের কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্রে শুরু থেকেই চিকিৎসাধীন রোগীরা বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ তুলে আসছেন৷ কিন্তু প্রশাসন বা স্বাস্থ্য দপ্তর , কেহই এসব অভিযোগ কানে তুলতে রাজী নয় বলে অভিযোগ৷ অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্নতা, জলের সংকট, চিকিৎসক না আসা, খাওয়ার অযোগ্য নিম্নমানের খাদ্য সহ পরিচালনগত বিভিন্ন ত্রুটির অভিযোগ রোগীদের৷ শেষে চিকিৎসাধীন রোগীদের ধৈযর্ে্যর বাঁধ ভাঙে বুধবার৷ সকাল সাড়ে সাতটায় প্রাত:রাশ দেওয়ার কথা৷ কিন্তু সাড়ে নয়টা বেজে গেলে ও দেখা নেই প্রাত:রাশের৷
ফলে রোগীদের ক্ষোভ এক সময় চরমে ওঠে৷ ওরা সবাই যার যার কক্ষ থেকে বের হয়ে বারান্দার এসে বিক্ষোভ দেখা তে শুরু করেন৷ চীৎকার চেঁচামেচিতে আই টি আই কমপ্লেক্সের কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র সরগরম হয়ে উঠে৷ নারী পুরুষ সবাই সম্মিলিত বিক্ষোভে সামিল হন৷ চিকিৎসা কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে মহকুমা ম্যাজিসেট্রট ও জেলা মূখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সোনাতলায় কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্রে ছুটে আসেন৷ তাদের কাছে চিকিৎসাধীন রোগীরা অভিযোগ করতে থাকেন যে, চিকিৎসক থাকেন না৷

অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্নতার পরিবেশে থাকা দায়৷ ভালো ভাবে সেনিটাইজ করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা দূরের কথা, কক্ষ গুলোতে ঠিক মতো ঝাড়ুর পোছ ও পড়ে না৷সকালে জল মিলে না৷ ভোর থেকে বারবার জলের জন্য অনুনয় বিনয় করে ও জল পাওয়া যায় না৷ স্নান ঘরে নোংরা অবস্থা৷ সেখানে জল জমে দুর্গন্ধ৷ খাওয়ার অযোগ্য নিম্নমানের খাদ্য দেওয়ার অভিযোগ করেন রোগীরা৷ বলেন, দুবেলা টিফিন হিসেবে যা দেওয়া হচ্ছে, তা মুখে দেওয়ার যোগ্য নয়৷ একটা আঙুলের থেকে ও ছোট আকারের কলা দেওয়া হচ্ছে৷ অন্যান্য ফলের পরিমাণ ও সেরকম ই৷ ব্লেড দিয়ে ফল কেটে দেওয়া হয়৷ পাউরুটি পুরানো ও পচা৷ দুপুরে ও রাতে যে খাবার দেওয়া হয়, তা ও অত্যন্ত নিম্নমানের ও খাওয়ার অযোগ্য৷ যা অরুচিকর ও স্বাস্থ্যের পক্ষে অনুপযোগী বলে অভিযোগ৷ মাছ দেওয়া ই হয় না৷ মাংস এখন পর্যন্ত একদিন দেওয়া হয়েছে৷ ডিম যা দেওয়া হচ্ছে, সেই ডিম ও অনেক সময় ভালো মানের হয় না৷ পানীয় জলের মান ও ভালো নয়৷

সব্জি যা রান্না করা হয়, সব্জি ও খাওয়ার অযোগ্য ও বাজারের কয়েক দিনের অবিক্রীত সব্জি ই রান্না করা হয় বলে রোগীদের অভিযোগ৷ ৩৮০ টাকা যেখানে রোগীর জন্য মাথা পিছু বরাদ্দ, সেখানে কেন এত নিম্নমানের খাদ্য, টিফিন ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ? প্রশ্ণ উঠেছে এরকম৷ খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে যে, পুর পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের পদে থাকা জনৈক শাসকদলীয় নেতার ভাইপোর পরিচালনাধীন এক সরকারী রেস্ট হাউস থেকে কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্রে খাদ্য ও টিফিন সরবরাহ করা হয়৷ আধিকারিকেরা রোগীদের সব অভিযোগ শুনে এসব কিছু খতিয়ে দেখা ও উন্নত মানের পরিষেবার প্রতিশ্রুতি দিলে রোগীরা শান্ত হয় ও বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে নেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *