নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ জুলাই৷৷ ত্রিপুরা-কে স্ব-নির্ভর করে তােলার লক্ষ্যে সরকার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে৷ ত্রিপুরায় কর্মপ্রত্যাশী বেকার যুবক যুবতীদের স্ব-নির্ভর করে তােলাও সরকারের অন্যতম লক্ষ্য৷ কারণ, স্ব-নির্ভর ব্যক্তিই উন্নত রাজ্য গঠনে সক্ষম৷শুক্রবার আগরতলা টাউন হলে প্রধানমন্ত্রী স্ব-নিধি এবং মুখ্যমন্ত্রী স্ব-নির্ভর যােজনার উদ্বোধন করে এ-কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ সাথে তিনি যোগ করেন, ত্রিপুরায় মোট জনসংখ্যার মাত্র ৫ শতাংশ বেকার৷
এদিন নগর উন্নয়ন দফতরের উদ্যোগে আয়ােজিত অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, ত্রিপুরায় স্ব-নির্ভর ব্যক্তির সংখ্যা যত বাড়বে ততই রাজ্য উন্নয়নের পথে অগ্রসর হবে৷ পাশাপাশি রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নতিও তরান্বিত হবে৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরায় শহর এলাকায় ২২,৫৫৭টি তথা ৪৪ শতাংশ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান নিজেদের দ্বারা পরিচালিত৷ বাকি ৫৬ শতাংশ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে ২৯,০৭৪ জন কর্মচারী নিয়ােজিত রয়েছেন৷ তাঁর দাবি, শপ এন্ড এস্টাব্লিশমেন্ট অ্যাক্ট ১৯৭০ অনুযায়ী রাজ্যে নথিবদ্ধ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫১,৬২৭টি৷ ৮০,৬৯১টি পরিবার সরাসরি ব্যবসা বানিজ্যের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছে৷ তাদের ব্যবসার সঙ্গে সাধারণ শ্রমিক পরিবহণ শ্রমিকরাও যুক্ত রয়েছেন৷ এছাড়াও ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার আরও ছােট দোকানী বিভিন্ন বাজারে ছড়িয়ে রয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে শহরাঞ্চলে ৬০,৩৬৯টি’র বেশি দোকান রয়েছে৷ এরমধ্যে ২০১৯-২০ সালে ৫১,৯৭০টি ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, বর্তমানে ট্রেড লাইসেন্সের সরলীকরণ করেছে রাজ্য সরকার৷ এদিন মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত ন্যাশনাল ক্যারিয়ার সার্ভিস এর তথ্য অনুসারে ত্রিপুরায় ১ লক্ষ ৭৩ হাজার ৫১১ জন নথিভুক্ত চাকুরী প্রত্যাশি রয়েছেন৷ ত্রিপুরার মােট জনসংখ্যার ৫ শতাংশ৷
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি যেসব প্যাকেজ ঘােষণা করেছেন তার মধ্যে ক্ষুদ্র, ছােট, মাঝারি (এম এস এম ই) শিল্পগুলির জন্য ৩ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার সংস্থান রয়েছে৷ এই এম এস এম ই বা স্ববলম্বন প্রকল্পে ঋণ প্রদানে কোন ধরণের গ্যারান্টি না নেওয়ার জন্য ব্যংস্কগুলিকে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন৷ তিনি আরও বলেন, ট্রেড লাইসেন্সের মাধ্যমে ২০১৭-১৮ সালে ২.৪৯ কোটি, ২০১৮-১৯ সালে ২.৭২ কোটি এবং ২০১৯-২০ সালে ৩০৮ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে৷ ট্রেড লাইসেন্স সরলীকরণের কারণেই রাজস্ব আদায় বেড়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন৷
এদিকে ত্রিপুরায় জি এস টি নিবন্ধীকৃত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে ২৮,৩৫৫টি৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০ লক্ষ টাকা টার্নওভার এমন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৯, ৯৫৬টি৷ ২০ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা টার্নওভার এমন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান রয়েছে ১,৪৩২টি৷ ৫০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা টার্নওভারের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৯২০টি এবং ১ কোটি টাকার অধিক টার্নওভার এমন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান রয়েছে ২,০৫৭টি৷ তাঁর কথায়, মুদ্রা প্রকল্পে রাজ্যে ১৮৪৪.৯৭ কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হয়েছে৷ নতুন ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে যারা ব্যবসায় নামবেন তাদের বীমার আওতায় আনার জন্য সরকার প্রয়ােজনীয় উদ্যোগ নেবে৷ এক্ষেত্রে বীমার প্রথম প্রিমিয়ামের টাকা সরকার বহন করবে৷

