নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৫ জুন৷৷ লকডাউনের আবর্তে স্ত্রীর মর্যাদা দাবি করে স্বামীর বাড়ির বাইরে ধরনায় বসেছেন জনৈক তরুণী৷ আগামীকাল পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনাক্রমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ আজ বৃহস্পতিবার পুলিশ তরুণীটির পাশাপাশি অভিযুক্ত স্বামী ও শাশুড়িকেও থানায় নিয়ে গিয়েছিল৷ অবশেষে সমস্যার সমাধানে সম্মত হাওয়ায় তাঁদের আজ পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে৷ এ ঘটনায় আজ উত্তর ত্রিপুরা জেলা সদর ধর্মনগরে তুলকালাম অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল৷
ধর্মনগরের শিববাড়ি এলাকার বাসিন্দা কল্পজ্যোতি নাথের সাথে একই থানাধীন রাধাপুর এলাকার বাসিন্দা স্বপ্ণা নাথ প্রণয়ের সূত্রে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হন বলে দাবি এই তরুণীর৷ বেঙ্গালুরু থাকাকালীন তাঁদের বিয়ে হয়েছিল৷
প্রমাণ হিসেবে মাথায় সিঁদুর এবং হাতে শাঁখা পরে স্বামী কল্পজ্যোতি নাথের সাথে তোলা ছবিও দেখিয়েছেন৷ কিন্তু ত্রিপুরায় ফেরার পর থেকে স্বামী তাঁকে স্ত্রীর মর্যাদা দিচ্ছেন না বলে তিনি অভিযোগ করেন৷ তাই আজ তিনি অধিকার আদায়ে ধরনায় বসেছেন বলে জানিয়েছেন৷
স্বপ্ণা নাথ দাবি করেন, এক বছর আগে বেঙ্গালুরুতে কল্পজ্যোতি নাথের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছে৷ সেখানে তাঁরা একসাথেই স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার করেছেন৷ তিনি বলেন, দু’জনেই বেঙ্গালুরুতে বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেছেন৷ কিন্তু লকডাউনে তাঁদের ত্রিপুরায় ফিরতে হয়েছে৷
স্বপ্ণার কথায়, বেঙ্গালুরু থেকে ফিরে আসার পর আমরা নিজ নিজ বাড়িতে চলে গিয়েছিলাম৷ কারণ, দুজনকেই গৃহে একান্তবাসে থাকতে হবে৷ তাঁর দাবি, কিছুদিন পর কল্পজ্যোতি তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাবে বলে স্থির হয়েছিল৷ কিন্তু এখন তাঁর স্বামী বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করছে৷ তাই বাধ্য হয়ে স্ত্রীর মর্যাদা আদায়ে ধরনায় বসেছি, বলেন তিনি৷ তাঁর সাফ কথা, অধিকার আদায় না করে ধরনা থেকে উঠব না৷
এদিকে, স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে তরুণীর ধরনাকে ঘিরে ধর্মনগর মহকুমা জুড়ে হইচই শুরু হয়ে যায়৷ প্রচুর মানুষ স্বপ্ণার কাণ্ড দেখার জন্য ভিড় করতে শুরু করেন৷ খবর পেয়ে ধর্মনগর মহিলা থানার পুলিশ ছুটে যায়৷ অনেক বোঝানোর পর স্বপ্ণাকে পুলিশ ধরনাস্থল থেকে তুলে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়৷ সাথে পুলিশ কল্পজ্যোতি নাথ ও তার মাকেও থানায় নিয়ে যায়৷
এ-বিষয়ে অভিযুক্ত স্বামী কল্পজ্যোতি নাথ বলেন, তাঁকে মিথ্যা সম্পর্কের নামে জড়ানো হচ্ছে৷ স্বপ্ণার সাথে বেঙ্গালুরুতে একসাথে ছিলেন তিনি, কিন্তু বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন কল্পজ্যোতি৷ পুলিশ এই ঘটনায় মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে৷ আগামীকাল আলোচনার মাধ্যমে তাদের সম্পর্ক নিয়ে চূড়ান্ত ফয়সালা হবে৷ তাতে সম্মত হওয়ায় পুলিশ তিনজনকেই ছেড়ে দিয়েছে৷