হাফলং (অসম), ৪ জুন (হি.স.) : লামডিং-বদরপুর পাহাড় লাইনে ধস নেমে গত চারদিন থেকে রেলপথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দক্ষিণ অসম সহ পার্শ্ববর্তী রাজ্য ত্রিপুরা, মণিপুর ও মিজোরাম। কবে নাগাদ রেলপথ পুনরায় সচল হয়ে উঠবে এ নিয়ে রয়েছে ঘোর অনিশ্চয়তা। এক নাগাড়ে বৃষ্টির দরুন গত সোমবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ মুপা ও মাইবাঙের মধ্যবর্তী স্থানের ৫৭/০, ৫৭/২ কিলোমিটার অংশে ৮০ মিটার এলাকা জুড়ে রেলওয়ে ট্র্যাকের নীচ থেকে মাটি সম্পূর্ণ খসে গেছে।
তাছাড়া ওই এলাকায় ২০০ মিটার এলাকা জুড়ে রেলওয়ে ট্র্যাকও সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। বর্তমানে ভয়ঙ্কর অবস্থায় রয়েছে মুপা মাইবাঙের মধ্যবর্তী ৫৭/০ এবং ৫৭/২ কিলোমিটার অংশ। ওই অংশে কাজ করতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে রেল কর্মী ও ঠিকাদার সংস্থাকে। কারণ প্রচণ্ড কাদামাটির মধ্যে রেল কর্মীদের পা রাখাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে বুধবার ভোর রাতে লামডিং-বদরপুর ব্রডগেজ রেলপথের ফাইডিং ও দাওটুহাজার মধ্যবর্তী ৭৫ কিলোমিটার অংশে টানেলের পাশে পাহাড় ধসে ভেঙে পড়েছে গার্ডওয়াল। রেলওয়ে ট্র্যাকের উপর জলকাদা এসে পড়েছে। তাছাড়া মাইগ্রেনডিসায় রেলওয়ে ট্র্যাক ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও বৃষ্টির জল পাহাড় থেকে নেমে আসায় গার্ডওয়াল সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে ট্র্যাকের পাশের মাটি সরে গেছে।
রেলকর্মীরা পাহাড় লাইনের ধস বিধ্বস্ত এলাকায় যুদ্ধকালীন তৎপরতার সঙ্গে রেলপথ থেকে মাটি সরানো সহ রেলপথ মেরামতির কাজ চালিয়ে গেলেও বৃষ্টি কাজে বাধার সৃষ্টি করছে বলে রেল সূত্রে জানা গেছে। কবে নাগাদ পাহাড় লাইনে রেল চলাচল শুরু হবে এ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিলেও উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ আগামী সাত দিনের মধ্যে রেলপথটি সচল করে তোলার লক্ষ্যে দিনরাত এক করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে বর্তমানে যা পরিস্থিতি, এতে রেলপথ সচল করে তুলতে হয়ত সাত দিনের বেশি সময় লেগে যেতে পারে।
এদিকে কোভিড ১৯ অতিমারির মধ্যে প্রকৃতি রুদ্রমূর্তি ধারণ করায় এবার লামডিং-বদরপুর ব্রডগেজ রেলপথে ধস নেমে অনির্দিষ্টকালের জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় বরাক উপত্যকার তিন জেলা সহ পার্শ্ববর্তী রাজ্য ত্রিপুরা, মণিপুর, মিজোরামে খাদ্য সামগ্রীর সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে বিভিন্ন মহল থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে এভাবে মাইগ্রেনডিসায় ধস নেমে প্রায় আড়াই মাস পাহাড় লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছিল। তবে লামডিং-বদরপুর রেলপথের ধস বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও নির্মাণ শাখার ইঞ্জিনিয়াররা ক্যাম্প করে সমস্ত কাজ তদারকি করছেন বলে জানা গেছে।