নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১ জুন৷৷ করোনা প্রতিরোধে ত্রিপুরায় নিয়োজিত বিএসএফ জওয়ানরা পারস্পরিক দূরত্ব এবং একান্তবাসের নিয়ম যথাযথ পালন করেননি৷ তাই তাঁদের মধ্যে সংক্রমণ ভয়ঙ্করভাবে ছড়িয়েছে৷ করোনা-র উৎস সন্ধানে আগত কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ দলের রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে এই তথ্য দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷
সোমবার সকালে আগরতলায় সরকারি আবাসে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ দল ত্রিপুরায় করোনা-র উৎস সন্ধানে পর্যবেক্ষণ করেছে৷ তাঁরা তাঁদের রিপোর্ট কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে পাঠিয়েছেন৷ তবে রাজ্যকেও এ-বিষয়ে অবগত করেছেন দলের সদস্যরা৷ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ দলের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বিএসএফ জওয়ানরা পারস্পরিক দূরত্বের নিয়ম মানেন নি৷ এমন-কি, একান্তবাসে থাকার নিয়মও যথাযথ পালন করেননি তাঁরা৷ তাঁর বক্তব্য, বিএসএফ জওয়ানদের বহিঃরাজ্য সফরের দৃষ্টান্ত রয়েছে৷ অধিকাংশই ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসে ছুটি কাটিয়ে ফিরেছেন৷ ফলে, যথাযথ একান্তবাসে রাখা হলে করোনা-র সংক্রমণ বিএসএফ জওয়ানদের মধ্যে এত বেশি মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ হতো না৷
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, বহিঃরাজ্য ফেরত সকল বিএসএফ জওয়ানদের ১৪ দিন বাধ্যতামূলক একান্তবাসে রেখে প্রত্যেকের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হলে নিশ্চিতভাবে সংক্রমণ ধরা পড়ে যেত৷ কিন্তু সেই পদক্ষেপ না নেওয়ায় বিএসএফ জওয়ানরা তাঁদের পরিবার সহ আক্রান্ত হয়েছেন৷ তিনি জানান, করোনা প্রতিরোধে গাফিলতির দায়ে বিএসএফ-এর ১৩৮ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্টকে বদলি করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ৷
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় এখন পর্যন্ত ৩১৬ জন করোনা-য় আক্রান্ত হয়েছেন৷ তাঁদের মধ্যে এক বিএসএফ জওয়ান ও তাঁদের পরিবারের সদস্যের আক্রান্তের সংখ্যা ১৬৩৷ বিএসএফ-এর ১৩৮, ৮৬ এবং ৩ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ান ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন৷ অবশ্য তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই সুস্থ হয়ে ফিরে গিয়েছেন৷ সম্প্রতি দুজন নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন৷
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের নির্দেশে তিন সদস্যের এক বিশেষজ্ঞ দল ত্রিপুরায় করোনার উৎস সন্ধানে পর্যবেক্ষণ করতে এসেছিল৷ কারণ, ত্রিপুরা সরকারের নির্দেশে বিএসএফ করোনা-র উৎসের খোঁজ করে কোনও রিপোর্ট জমা দেয়নি৷