গুয়াহাটি, ১৯ মে (হি.স.) : লকডাউনকে উপেক্ষা করে অসম ত্রিপুরা সীমান্ত এলাকা টপকে পাথারকান্দিতে বিভিন্ন ব্যক্তিদের আনাগোনা অব্যাহত থাকায় স্থানীয় জনমনে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সঙ্গে বিরাজ করছে চাঞ্চল্য। প্রতিবেশী দুই রাজ্যের সীমান্ত এলাকা সিল করা সত্বেও ত্রিপুরা থেকে মানুষের অবাধে আগমণে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে সচেতন মহলে।
প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ, গত ১১ দিনে অবৈধ ভাবে অসমে প্রবেশের পথে পাথারকান্দির সোনাখিরা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে মোট ১৫ জন ব্যক্তি। তাদেরকে পৃথক পৃথক ভাবে সোনাখিরা পুলিশ চেকপোস্টের ইনচার্জ সুখেশ দাস আটক করে সার্কল প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার সকালে ধর্মনগরের কৃষ্ণপুর থেকে পায়ে হেঁটে গোলাঘাটের দুই পরিযায়ী শ্রমিক সোনাখিরায় পৌঁছলে তাদের আটক করে পুলিশ। তাদের হাতে কোনও টাকা না থাকায় চেকপোস্টের ইনচার্জ সুখেশ দাস নিজের পকেটের টাকা খরচ করে ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম আকাশ কুর্মি ও অনন্ত কোঁওর। তারা জনৈক হানিফ উদ্দিন নামের ঠিকাদারের অধীনে সিমেন্টের কাজে নিয়োজিত ছিলেন। দুজনকে পাথারকান্দির স্বাস্থ্য বিভাগের হাতে সমঝে দিয়েছেন পুলিশ অফিসার।
প্রসঙ্গত, অনুরূপ ভাবে গতকাল সোমবার বিকেলে ত্রিপুরার জিরানিয়া থেকে কাঁঠলতলি হয়ে আসার পথে সোনাখিরা পুলিশ চেকপোস্টে এসে ধরা পড়েন আরও চার ব্যক্তি সহ দুই চালক। তাঁরা পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে নদীপথে অসমে প্রবেশের পর একটি অ্যাল্টো ও একটি অটো রিকশা ভাড়া করে অসমে প্রবেশের ফন্দি করে সোনাখিরায় এসে ধরা পড়েন। এঁরা হলেন দিলাল হুসেন, তপন দেব, আজিম উদ্দিন, অমলেন্দু দেব এবং জামাল উদ্দিন ও ফকর উদ্দিন। এদের প্রত্যেকের বাড়ি অসমের নিলামবাজারে বলে নিজেদের স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন আটকরা। পরে প্রশাসনের মাধ্যমে তাদের কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ৯ মে নিজের বাড়ির টানে আগরতলা থেকে রেল সড়ক ধরে পায়ে হঁটে অসমে প্রবেশ করে পাথারকান্দির সোনাখিরা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন চারজন। একই ভাবে গত ১৭ মে রাতের অন্ধকারের সুযোগকে হাতিয়ার করে ত্রিপুরার ধলাই জেলার হটস্পট জোন থেকে লরিতে করে অসমে প্রবেশ পথে আটকে পড়েন পশ্চিমবঙ্গের মালদার এক যুবক। এর পর একই ভাবে গতকাল সোমবার দুপুরবেলা ত্রিপুরা থেকে অসমে অবৈধ ভাবে প্রবেশের পর পুলিশের হাতে ধরা পড়েন পঞ্জাবের দুই ফেরিওয়ালা।
এদিকে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সম্প্রতি প্রশাসনিক তরফ থেকে চোরাইবাড়ির অসম-ত্রিপুরা সীমান্ত এলাকা সিল করে দেওয়ার পরও কাভাবে প্রায় প্রতিদিন রাজ্যে অবাধে ভিন রাজ্যের মানুষ আনাগোনা করেছেন তা বুঝতে পারছে না সচেতন মহল।