নির্বাচন এখনও অনেক দেরি, ধৈর্য হারালে চলবে! বিজেপিকে কটাক্ষ মমতার

কলকাতা, ১২মে (হি. স.): করোনা সামলাবো নাকি বিজেপিকে সামলাবো। মঙ্গলবার কার্যত এইভাবেই বিজেপিকে একহাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এতদিন মুখ্যমন্ত্রী কেন প্রকাশ্যে আসছিলেন না সেই নিয়ে বারংবার বহু কটাক্ষ করেছে বিজেপি। এই অবস্থায এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে একই সঙ্গে বিজেপির একাধিক বিষয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

অভিযোগ করে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “করোনা সামলাবো নাকি বিজেপিকে সামলাবো। সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে রাজনীতি করা হচ্ছে। এটা এখন রাজনীতি করার সময় নয়। একজন হিন্দুর গায়ে লাগলেও আমার গায়ে লাগবে। একজন মুসলমানের গায়ে লাগলেও আমার গায়ে লাগবে। হিন্দু মুসলমান করছে এখন। কোভিডে হিন্দু মুসলমান আছে। যার ধর্ম নিজেদের কাছে রাখুন। বাংলা এসবকে প্রশ্রয় দেয় না তাই বাংলা সবার ওপরে আছে।”বাংলায় অযথা উন্মাদনা দেখাবেন না বলে এদিন বিজেপির উদ্দেশ্যে করা বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার মতে, কুৎসা রটিয়ে বিভেদ করার চেষ্টা করছে বিজেপি।

এদিন ফের একবার কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক বঞ্চনার অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “পঞ্চাশ হাজার কোটি দেনা দিতে হচ্ছে এই সময়। ৫২ হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে কেন্দ্রের কাছে। কিন্তু কেন্দ্র খালি হাতে ফেরাচ্ছে। জিএসটি বাবদ অন্যান্য বকেয়া কেন্দ্রকে মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে”। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির উদ্দেশ্যে কটাক্ষ করে বলেন, “রাজনৈতিক লড়াইয়ের অনেক সময় রয়েছে। ধৈর্য হারালে হবে? নির্বাচন এখনও অনেক দেরি। সামনের বছর মে মাসে। এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করুন।”

বিজেপির নেতৃত্বদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পুরসভা মিউনিসিপ্যালিটির কর্মীরা রাস্তায় নেমে কাজ করছেন তাদের সাথে কাজ করুন বাইরে বেরোন। যারা রাস্তায় বেরিয়ে কাজ করছে তাদের পাশে দাঁড়ান। এতটুকুও লজ্জা নেই এত বড় দুর্যোগের সময় দাঙ্গা লাগাতে চাইছে।” এরপরে মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি দেন, যারা নিয়ম ভাঙ্গার চেষ্টা করবে তাদেরকে যেন বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের নিয়ম অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হয়। পাশাপাশি পুলিশকে নির্দেশ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ধর্ম নিয়ে যারা বিরুদ্ধে বাধানোর চেষ্টা করবে তাদের ক্ষেত্রে কমিউনাল প্রভোকেশন আইন প্রয়োগ করুন। সে ক্ষেত্রে আমি হলে আইন প্রয়োগ করুন বা যে কোন নেতা হলে তাদের উপরেও সেই আইন প্রয়োগ করুন”।
উল্লেখ্য, রবিবার রাত থেকে হুগলির ভদ্রেশ্বর পুরসভা এলাকার তেলিনিপাড়ায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। অভিযোগ ওঠে , এলাকায় করোনা সংক্রমণ ছড়ালেও লকডাউন মানছেন না একটি গোষ্ঠীর মানুষ। অপর গোষ্ঠীর লোকজন এলাকার পথ-ঘাট আটকে দিলে উত্তেজনা ছড়ায়। সংঘর্ষের সময় তেলিনিপাড়ায় বেশ কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর করে আগুন ধরান হয়। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন।